কালীগঞ্জের গ্রামীণ সড়ক অবৈধ ট্রলি ট্রাক্টরের দখলে ,অতিষ্ঠ পথযাত্রি ও সড়কের পাশে বসতবাড়ির জনজীবন
ফিরোজ আহম্মেদ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সকল গ্রামীন সড়কের পথযাত্রি ও সড়কের পাশের বসতবাড়ির জনজীবন অতিষ্ট করে দিচ্ছে অবৈধ ট্রলি ট্রাক্টরে।ট্রলি ট্রাক্টরের দৌরাত্বে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে কাঁচা পাকা রাস্তা। এছাড়াও এ সকল ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। গ্রামীণ সড়কের চলাচলকারী জনসাধারণ অবৈধ ট্রাক্টরের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। উপজেলার আঞ্চলিক মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়কে অবাধে দাবিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ যন্ত্রদানব ট্রলি ট্রাক্টর। কৃষকের জমি চাষাবাদের জন্য আমদানিকৃত ট্রাক্টর এখন অবৈধ ট্রলিট্রাক্টর বানিয়ে মাটি পরিবহন মাটি, ইট ও পন্যবাহি করছে।
গ্রামীণ জনপদের পরিবেশ সর্বনাশ ঘটাতে শুরু করেছে বিরামহীন চলাচল।একারণে শব্দ দুষণ ও ধূলাবালি সঙ্গি সাথি সাধারণ মানুষের। রাস্তায় চলাচলকারী শিক্ষার্থীরা,পথযাত্রি ও সড়কের পাশের বসতিরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
রঘুনাথপুর বাজারের এক দোকানী বলেন এসব ট্রাক্টরেরট্রলি বেপরোয়া চলাচলের কারণে গ্রামীণ রাস্তা - ঘাট ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে । ধূলা বালির কারণে ১০ গজ দূরের কোনো দৃশ্যই দেখা যায় না। কয়েক মিনিট পর পরই একটি -দুটি করে মাটি, বালি ও ইট ভর্তি ট্রলিট্রাক্টর বেপরোয়া ভাবে চলাচল করছে।
জাকির হোসেন নামে এক পথচারী বলেন, উপজেলার রঘুনাথপুর বাজারের পাশে গড়ে উঠা ইট ভাটার মালিক এসব ট্রাক্টর ব্যবহার করে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। যে কারণে ১০ মিনিটের রাস্তায় ৩০ মিনিট সময় বেশি লাগে। পাশাপাশি ধূলার কারণে ১০ গজ দূরের কোনো চোখে পড়ে না। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, এসব অবৈধ ট্রাক্টরট্রলি গুলো রাস্তা ঘাট ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করলেও এসব বন্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন।
উপজেলার সব কয়টি ইট ভাটার ইট ও মাটি পরিবহনের কাজেই মূলত ব্যবহৃত হচ্ছে এ অবৈধ ট্রাক্টরট্রলি। এসকল ট্রলি ট্রাক্টরের নেই কোন বৈধ রোডপার্মিট। তাছাড়া চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় কারণে ১২ থেকে ১৮ বছরের শিশু- কিশোররাও এসব ট্রাক্টর অবাধে চালক হয়ে চালাবার সুযোগ পাচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় সড়ক দুর্ঘটনা।
এক ভ্যান চালক বলেন, ট্রাক্টরট্রলির বেপরোয়া চলাচলের কারনে আমরা অনেক সময় বিপদে পরি,আর পথযাত্রিরা ভ্যানে উটতে চায়না ধূলাবালির জন্য।তারা আরো বলেন আমরা গরিব মানুষ, রাস্তায় চলার সময় ট্রাক্টরট্রলি আসলে আমরা প্রায় সময় খাদে পড়ি। সরকারের কোটি কোটি টাকার রাস্তাঘাট ধ্বংস করছে কয়েকজন মাটি ব্যাবসায়ী ও ইটভাটারা। তারা স্বল্পমূল্যে ফসলি জমির মাটি কিনে ভাটায় পরিবহনের ফলে বিলীন হচ্ছে রাস্তাঘাট এবং ট্রাক্টরের চাকায় প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে গ্রামের সদ্য নির্মিত কাঁচা, আধা পাকা ও পাকা সড়কগুলো।
সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাক্টরেরট্রলির বেপরোয়া চলাচল গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে ইটভাটার সরবরাহ এবং পুকুর-দীঘিনালা ভরাট চলছে। ট্রাক্টরের অত্যাচারের মুখে গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রোড পারমিশন বিহীন ট্রাক্টর ও লাইসেন্স বিহীন চালকের কারণে দোকার পাট, রাস্তা- ঘাটে চলাচলকারী মানুষ সার্বক্ষনিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে চলাচল করছে। বিকট শব্দে মাটি বোঝাই নিয়ে সাদা পাউডারের মত ধুলো উড়িয়ে ধাবিয়ে চলছে এরা। এভাবেই কালীগঞ্জ উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের পাড়া মহল্লার সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তা সহ উপজেলার প্রত্যেক সংযুক্ত সড়ক গুলোতেই দিনরাত চষে বেড়াচ্ছে প্রায় ২ শতাধিক অবৈধ ট্রাক্টর।
তবে এলাকাবাসীরা সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষের কাছে মাটি টানা ট্রাক্টরট্রলির বন্ধের দাবি করে বলেন, আমরা বুঝতে পারি না, অবৈধভাবে ট্রাক্টর চলাচল বন্ধের কাজটি কেন এতো কঠিন?
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি)মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, এসব টলি ট্রাক্টর রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি করে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূবর্ণা রানী সাহা বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি নিষিদ্ধ ট্রাক্টরট্রলি বন্ধের বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতোপূর্বে জেলায় কয়কেটি ভাটা মালিককে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে। এ নিয়ে নিয়মিত অভিযান চলবে। উপজেলায় খুব দ্রুত এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।