শিরোনাম
◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু

প্রকাশিত : ১৮ জানুয়ারী, ২০২১, ০৭:৩৯ সকাল
আপডেট : ১৮ জানুয়ারী, ২০২১, ০৭:৩৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ফ্রান্সে গিয়ে জড়ালো জঙ্গিবাদে!

ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশের ইংলিশ মিডিয়াম পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী ফ্রান্সে গিয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার তথ্য পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগে গ্রেফতারের পর ফ্রান্স পুলিশ তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। তার নাম সাইফ রহমান ওরফে তোতন (২৪)। বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট-সিটিটিসি। সিটিটিসির উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘সাইফ রহমানকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সে বাংলাদেশের কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিটিটিসি সূত্র জানায়, সাইফ রহমান ২০১৪ সালে ঢাকার ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড স্কুল থেকে এ লেভেল সম্পন্ন করে। এরপর অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে ও লেভেল সম্পন্ন করে ২০১৬ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে ইউনিভার্সিটি অব ডি-সেরগি পন্টাইজে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পড়াশোনা শেষ করে তিনি প্যারিসের ইউনিভার্সিটি অব প্যানথিয়ন আসাসে প্রশাসন শাখায় খণ্ডকালীন চাকরিতে যোগদান করেছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাইফ রহমান ২০১৬ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে পড়তে যান। এ সময় তার মা জেরিন রহমানও তার সঙ্গে প্যারিসে অবস্থান করছিলেন। প্যারিসে থাকা অবস্থাতেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন সাইফ। কয়েক মাস আগে ফ্রান্স পুলিশ জঙ্গি সন্দেহে তাকে প্রথমে নজরদারি করতে শুরু করে। একপর্যায়ে তাকে বাসা থেকে আটক করে দেশটির পুলিশ। আটকের পর সাইফকে প্রায় দুই মাস প্যারিসের একটি ডিপোর্টেশন সেন্টার রাখা হয়।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফ্রান্স পুলিশ জানিয়েছে, সাইফ প্যারিসে অবস্থানকালে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ফ্রান্স পুলিশ তার ব্যবহৃত ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস পরীক্ষা করে একাধিক জিহাদি গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ পেয়েছে। তবে তিনি সহিংস কোনও হামলার পরিকল্পনা করেছিল কিনা, এ বিষয়ে পুলিশ কোনও তথ্য পায়নি।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, সাইফ আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছিলেন বলে তারা ধারণা করছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিহাদি গ্রুপগুলোতে কোন কোন দেশের নাগরিকের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ স্থাপন করেছিলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে। তার সঙ্গে আর কোনও বাংলাদেশি নাগরিক জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জানা গেছে, ঢাকার উপকণ্ঠ দোহারের বাসিন্দা সাইফের বাবার নাম লুৎফর রহমান। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান সাইফকে ফ্রান্স পুলিশ আটক করার পরপরই তার মা জেরিন রহমান তড়িঘড়ি দেশে চলে আসেন। মোস্তফা নামে তার (সাইফের) এক চাচা ইতালিতে থাকেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা, ফ্রান্সে পড়তে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে সাইফ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন।

বাংলাদেশ থেকে এর আগেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পড়তে গিয়ে ও অবস্থানকালে একাধিক তরুণ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে সহিংস হামলায় অংশ নিয়েছেন। তরুণ-যুবকদের বড় একটি অংশের আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের হয়ে কথিত জিহাদে অংশ নিতে ইরাক-সিরিয়াতেও যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যাদের অনেকেই ঢাকার বিভিন্ন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন। এমনকি ঢাকার আইএস মতাদর্শের অনুসারী সংগঠন নব্য জেএমবিতে যোগ দিয়ে গুলশানের হোলি আর্টিজানে হামলাসহ একাধিক হামলায়ও অংশ নিয়েছিলেন ইংলিশ মিডিয়াম পড়ুয়া উচ্চবিত্ত পরিবারের অনেক তরুণ-তরুণী।

সিটিটিসির এক কর্মকর্তা জানান, সাইফকে তারা ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আদালত রিমান্ড মঞ্জুর না করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। সাইফকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করে রিমান্ডে আনা হবে। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার সঙ্গে বাংলাদেশি আর কোনও নাগরিক জঙ্গিবাদে জড়িয়েছিল কিনা এবং কীভাবে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছিলেন তা জানা যাবে।
সূত্র- বাংলাট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়