রাজু চৌধুরী: নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিপালনে ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ম্যাজিস্ট্রেটদের অভিযান অব্যাহত।
শুক্রবার ১৫ জানুয়ারি সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাট্টলী সার্কেল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বিকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি চট্টগ্রাম নগরীর ১২,২৩ ও ২৪ নং ওয়ার্ডে এবং ৯নং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ওয়ার্ডে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধি মনিটরিং করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। বিকাল ৫ঃ০০ টায় ১২নং ওয়ার্ডের নয়াবাজার বিশ্বরোড এলাকায় বিএনপি মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের কর্মী-সমর্থকদের পক্ষে চারটি ট্রাক ও পিক আপ ভ্যান যোগে উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে এবং যানবাহনে পোস্টার লাগিয়ে বিএনপি মেয়র প্রার্থীর স্থানীয় নেতা কিং আলী ও আবদুল কাদেরের নেতৃত্বে প্রায় তিন শতাধিক কর্মী নিয়ে শোডাউন করছিলেন। এসময় ট্রাক ও পিক আপ ভ্যানে বিপুল সংখ্যক শিশু-কিশোরদের সমাবেশ দেখা যায়। মিছিল পরিচালনার সপক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয় কিংবা থানা পুলিশের কোনো অনুমোদন দেখাতে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা ব্যর্থ হন। ঘটনাস্থলে মিছিলে নেতৃত্ব দানকারী কিং আলী ও আবদুল কাদের কে পুলিশের সহায়তায় ডেকে এনে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধি লঙ্ঘন করার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলামের পক্ষ থেকে উপস্থিত নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সতর্ক করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে মোটর শোভাযাত্রা টি পুলিশের সহায়তায় ভেঙ্গে দিয়ে ট্রাক ও পিক আপ ভ্যান খালি করে নিরাপদে মিছিলে অংশগ্রহণ কারীদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। ১২ নং ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোঃ শামসুল আলম (ঘুড়ি মার্কা) এর পুত্র মো. আজাদ বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের পক্ষে বিকাল ৪ঃ৩০ টার দিকে পাহাড়তলী ডিটি রোডে রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস এবং স্থানীয় থানা পুলিশের অনুমতি ব্যতীত মিছিল করছিলেন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে সিটি এসবি'র সাথে যোগাযোগ করলে তারা মিছিলের অনুমতির বিষয়ে অবগত নয় বলে জানান। বিষয়টি আমলে নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম মিছিলে নেতৃত্ব দানকারী বিএনপির মেয়র সমর্থকদের কে সতর্ক করেন এবং মিছিল ভেঙ্গে দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার নির্দেশ দেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশমতো মিছিলের লোকজন মিছিল গুটিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছেন।
এছাড়া বিকাল ৩ঃ৪৫ টার দিকে ২৩ নং ওয়ার্ড এলাকায় মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী মোছামৎ ফারহানা জাবেদ এর কর্মীগণ অনুমোদন পত্র বিহীন মাইক যোগে প্রচার কার্যক্রম চালানোয় এবং সিএনজি গাড়ি তে পোস্টার লাগানোয় প্রার্থীর কর্মীগণকে সতর্ক করা হয়েছে। যানবাহনের গায়ে লাগানো পোস্টার বিনষ্ট করা হয়েছে। প্রার্থীর কর্মীগণ সিটি কর্পোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৬" ভঙ্গের কোন ঘটনার পুনরাবৃত্তি করবেন না মর্মে অঙ্গীকার করেছেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) সদর সার্কেল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজন চন্দ্র রায় আজ বিকাল ৩ঃ০০ ঘটিকা হতে চট্টগ্রাম নগরীর ১৬, ২০ ও ৩২ নং ওয়ার্ডে এবং ৭নং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ওয়ার্ডে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী এর কর্মীগণ একাধিক মাইক যোগে প্রচার কার্যক্রম চালানোয় এবং সিএনজি গাড়ি তে পোস্টার লাগানোয় প্রার্থীর প্রচারকারী সেলিমুল্লাহ কে স্থানীয় সরকার সিটি কর্পোরেশন (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ এর ৮(৮) ও ২১ ধারায় ৫০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। প্রার্থীর কর্মীগণ "সিটি কর্পোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৬" ভঙ্গের কোন ঘটনার পুনরাবৃত্তি করবেন না মর্মে অঙ্গীকার করেছেন।
আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনার ( ভূমি) ও৷ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুস সামাদ শিকদার ডবল মুরিং ও বন্দর থানার ২৭, ৩৭ ও ৩৮ নং ওয়ার্ডে অভিযান পরিচালনা করে দেয়ালে পোস্টার সাটানোর জন্যে একজনকে ১০০০ টাকা অর্থদণ্ড করেন।
জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস. এম আলমগীর চট্টগ্রাম নগরীর ১৪, ১৫ ও ২১ নং সাধারণ ওয়ার্ডে ( সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড-০৫) মেয়র প্রার্থীর সাথে কাউন্সিলর প্রার্থীর যৌথভাবে ব্যানার ব্যাবহার করায় তা নামিয়ে ফেলা হয়। একটি অফিসে টিভি সেট ব্যবহার করায় তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বেলা ২ঃ৩০ ঘটিকা থেকে
সন্ধা ৫ঃ৩০ ঘটিকা পর্যন্ত নগরীর কোতোয়ালী এলাকার ৩৩,৩৪ ও ৩৫ নং ওয়ার্ডে ও সংরক্ষিত ১৩ নং সসংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ওয়ার্ডে অভিযানে ৩৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী নুরুল হক (ঘুরি মার্কা) এর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে হুমকির অভিযোগ জানালে তাকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয় এবং তিনি ও তার সমর্থকরা এ ধরনের কাজ করবেন না মর্মে অংগীকার করেন।পাশাপাশি সকল ওয়ার্ডের প্রার্থীদের পোস্টারে দলীয় মনোনীত শব্দ যাতে না থাকে সেজন্যে সতর্ক করা হয় এবং যেগুলো টাংগানো আছে সরানোর নির্দেশনা দেয়া হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিল্লুর রহমান চট্টগ্রাম নগরীর ১১, ২৫ ও ২৬ নং সাধারণ ওয়ার্ডে ( সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড-১০) মনিটরিং করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা কালে "সিটি কর্পোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৬" ভঙ্গের কোন ঘটনা ঘটেনি তাই কোন জরিমানা করা হয়নি। তাছাড়া স্থানীয় জনগনের সাথে কথা বলে জানা যায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা পাচলাইশ এলাকার ৭ও ৮ নং ওয়ার্ডে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন।এতে কোন আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এই দিকে শিশু-কিশোরদের ব্যবহার করে বিভিন্ন এলাকায় মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর সমর্থকদের মিছিল, মোটর শোভাযাত্রার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।