শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৮:০৭ সকাল
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৮:০৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অমি রহমান পিয়াল: মুজিব কোটের ৬ বোতাম = শেখ মুজিবের ৬ দফা

অমি রহমান পিয়াল: ছবিটা বঙ্গবন্ধুর হইলেও বক্তব্য ঠিক তারে নিয়া না, বরং এইটারে একটা সাধারণ জ্ঞানের ক্লাস বলা যাইতে পারে। শেখ মুজিবুর রহমান বিষয়ক সাধারণ জ্ঞান। ছবিতে তিনি যে কোটটা গায়ে দিয়া আছেন, এইটা মুজিব কোট নামে ব্র্যান্ড হয়ে গেছে। অনেক আওয়ামী লীগ নেতা এবং বঙ্গবন্ধুপ্রেমী এই কোট গায়ে দেন পার্টির সাইনবোর্ড বুঝাইতে কিংবা মুজিবপ্রেম দেখাইতে। যদিও তাদের অনেকেরই জানা নেই এই মুজিব কোটের নেপথ্য কাহিনি। অনেককাল আগে আজাদ মাস্টার তার এক পোস্টে এই প্রশ্নটা করছিলো, মুজিব কোটের জন্ম কাহিনি কেউ জানে কিনা। এতোদিন পর তারই উত্তর দিতেছি। মওলানা এমএ রহমানের এক প্রবন্ধে জানা যায় যে, এই ধরনের কোটের আদি নাম ছিলো ‘আলেম কোট’ বা ছেদরিয়া। উপমহাদেশের আলেম ওলামারা পাঞ্জাবির উপর এই ধরনের কোট পড়তেন। আলেম কোটের প্রথম ব্র্যান্ডিংয়ের কৃতিত্ব জওহর লাল নেহেরুর। সেই মতে নেহেরু কোট ফ্যাশন হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাইছে। শেখ মুজিব ব্র্যান্ড করছেন কালো কোটি টাইপরে। এমনিতে ছেদরিয়া বা আলেম কোটে ৭টা বোতাম থাকলেও মুজিব কোটে ৬টা বোতাম। এই বিষয়ে একটা ইনট্রেসটিং গল্প শেয়ার করা যাক। মূল লেখা গায়েব হয়ে গেছে, লেখকের নাম মনে নেই, তবে পোস্টটা কপি করা ছিলো, শিরোনামসহ তা হুবহু তুলে দিতেছি:

মুজিব কোটের ৬ বোতাম = শেখ মুজিবের ৬ দফা: তখনো শেখ মুজিবের গায়ের কোটটি মুজিব কোট হিসেবে খ্যাতি লাভ করেনি। কালো হাতাকাটা এই বিখ্যাত কোটটি তখনো লাভ করেনি কালজয়ী কোনো নাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এক ছাত্র তার সহপাঠী তাজউদ্দীনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে। শেখ মুজিবুর রহমানকে অনেক কাছ থেকে দেখলেন তিনি, কথাও বললেন দীর্ঘক্ষণ। কথা শেষে ওঠে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু যখন তার কালো কোটটি গায়ে জড়াচ্ছিলেন, তখন ওই ছাত্রটি লক্ষ্য করলেন কোটে ৬টি বোতাম। যা এ ধরনের অন্য কোটের বোতামের চেয়ে কম। তিনি বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার কোটের বোতাম ৬টি কেন? বঙ্গবন্ধু তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, এমন প্রশ্ন এর আগে আমাকে আর কেউ করেনি। তুই প্রথম। এই ৬টি বোতাম আমার ঘোষিত ৬ দফার প্রতীক। আর এ কারণেই একটি আদর্শ মুজিব কোটে বোতাম থাকে ৬টি।

এই ঘটনাটা আমি শুনেছি বাংলার ওই ছাত্রের মুখ থেকেই। অধ্যাপক জীবন থেকে অবসর নিয়ে এখন তিনি একটি কলেজের অধ্যক্ষ। আহমদ ছফা আবার মুজিব কোটের মধ্যে ভারতের অনুকরণ কিংবা চাপাইয়া দেওয়া গন্ধ পাইছিলেন। ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত ‘শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য’ নামের একটা প্রবন্ধে বাঙালি জাতীয়তাবাদের পি মারতে গিয়া ছফা লিখছেন : ...কিন্তু এ কোন বাঙালি জাতীয়তাবাদ? মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত পচেগলে একাকার; ধর্মভিত্তিক জাতীয়তার শেষ শেকড়টাও উপড়ে ফেলে, দশ কোটি মানুষের সামনে যে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা মূর্তিমান হয়ে দেখা দিয়েছে তাকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ বললে ভুল করা হয় না। কিন্তু একটি লাগসই ব্যাখ্যা প্রয়োজন। উনিশশো সাতচল্লিশ সালে ভারতবর্ষ হিন্দু-জাতীয়তা এবং মুসলিম-জাতীয়তার ভিত্তিতে বিভক্ত হয়ে ভারত এবং পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছিল। যদিও ভারতীয় রাষ্ট্রের কর্ণধাররা স্বীকার করেননি যে, হিন্দু-জাতীয়তাই হলো ভারতরাষ্ট্রের ভিত্তি। সেই মুসলিম-জাতীয়তার ভিত ভেঙে বাংলাদেশে যখন একটি নতুনত্বর জাতীয় সংগ্রাম দাবানলের মতো জ্বলে উঠতে শুরু করেছে তখন ভারতের ক্ষমতাসীন শাসক কংগ্রেসের তাত্ত্বিকেরা বাংলাদেশের জাতীয় মুক্তিসংগ্রামকে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভুল সংশোধন হিসেবে ব্যাখ্যা করতে প্রবৃত্ত হয়েছিলেন। তাদের মতামত আওয়ামী লীগের চিন্তাধারাকে ব্যাপকভাবে যে প্রভাবিত করেছিল, তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। জাতীয় সংগ্রাম যখন তুঙ্গে সেই সময় মুজিবের ভক্তরা তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ আখ্যা দিচ্ছেন, নতুন ধরনের মুজিব কোট, মুজিব টুপি চালু করছেন।

‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটির সঙ্গে ‘দেশবন্ধু’র একটি সাদৃশ্য চোখে পড়ে। মুজিব কোটের সঙ্গে জওহরলাল নেহরুর ব্যবহৃত জ্যাকেট এবং মুজিব টুপির সঙ্গে সুভাষ বসুর আজাদ-হিন্দ ফৌজের টুপির ঈষৎ পরিবর্তিত মিল দেখলে অতি সহজেই বোধগম্য হয়, যেসব প্রতীক ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে ভারতীয় কংগ্রেস অনুসৃত ভারতীয় জাতীয়তার স্মারকচিহ্ন হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলোই সামান্য পরিবর্তিত চেহারায় বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে নতুনভাবে জেগে উঠতে শুরু করেছে। এমনকি শেখ মুজিবুর রহমানের অহিংস-অসহযোগ আন্দোলনটির কথাও এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে। বাংলাদেশে আবার মহাত্মা গান্ধীর আদর্শের নব উত্থান লক্ষ্য করে অনেক ভারতীয়ই উল্লসিত হয়ে উঠেছিলেন, এ কারণে যে কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন অনতিবিলম্বে তা পূর্ণ হতে যাচ্ছে। পাকিস্তান ভেঙে পড়ছে এবং খন্ডিত ভারত আবার জোড়া লেগে অখণ্ডরূপে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। উনিশশো একাত্তর সালের বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের নেতৃত্বের রূপটি দর্শন করে ভারতের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর এ মনোভাব জাগ্রত হওয়া একটুও অস্বাভাবিক নয় যে, বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে ভারতের সঙ্গে মিলেমিশে না যাক, অন্তত ভারতের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছে। সে কারণে অনেকেই শেখ মুজিবুর রহমানকে মহাত্মা গান্ধীর মানসপুত্র বলে অভিহিত করতে কুণ্ঠিত হননি। এই না হইলে চীনা বাম। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়