লিহান লিমা: [২] দফায় দফায় ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরও সমাধান হয়নি কৃষকদের দাবী-দাওয়ার। নতুন নীতি নিয়ে শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বার্তা কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে পারে নি। নতুন কৃষি নীতি প্রত্যাহারের দাবীতে বিক্ষোভ করছেন দেশটির অন্তত ১২লাখ কৃষক। রোববার সকাল ১১টা থেকে লাখ লাখ কৃষক দিল্লি-জয়পুর মহাসড়ক অবরোধ করে ট্রাক্টর র্যালি বের করেন। ১৬৫টি টোল প্লাজা অবরোধ করে রাখা হয়েছে। সোমবার সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সিংঘু সীমান্তে অনশন করার ঘোষণা দিয়েছেন কৃষক নেতারা। হিন্দু/এনডিটিভি/টাইমস অব ইন্ডিয়া
[৩]পরিস্থিতি সামলাতে দিল্লি-গুরুগাঁও সীমান্তে এক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ফরিদাবাদে মোতায়েন করা হয়েছে আরও সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্য। দিল্লি থেকে আগ্রা অভিমুখে যেতে চাওয়া কৃষকদের থামাতে আরও বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
[৪]ভারতের কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর দাবি করেন, বিক্ষোভের পরিবেশ বিনষ্ট করতে কৃষকদের ছদ্মবেশে ‘সমাজবিরোধী’,‘বামপন্থী’ এবং ‘মাওবাদী’রা ষড়যন্ত্র করছে।’
[৫]এদিকে কৃষক নেতারা অভিযোগ করছেন, সরকার বিক্ষোভ দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বিক্ষোভরত কৃষকরা সেই চেষ্টা সফল হতে দেবেন না। আন্দোলন যাতে শান্তিপূর্ণভাবেই হয়, সেদিকে পুরোপুরি নজর দেওয়া হচ্ছে। যতদিন পর্যন্ত বিতর্কিত কেন্দ্র কৃষি বিল পরিবর্তন না করছে ততদিন আন্দোলন চলবে।
[৬] ইতোমধ্যেই আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে মামলা করেছে একটি সংগঠন। আগামী বুধবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে তার শুনানি হবে।
[৭]নতুন কৃষি আইনে ভারতে কৃষিপণ্য বিক্রয়, মূল্য নির্ধারণ ও গুদামজাতকরণের নিয়মে পরিবর্তন আসবে। এতোদিন এই নিয়ম কৃষকদের গত কয়েক দশক ধরে মুক্ত বাজার থেকে রক্ষা করেছিলো। নতুন আইনের ফলে কৃষকরা চাইলে যে কারও কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারবে। আগে যা কেবলমাত্র সরকার অনুমোদিত এজেন্টদের কাছেই বিক্রি করতে হতো। সেই সঙ্গে আইনে করপোরেট চাষ ও কৃষকদের কাছ কোম্পানিগুলোকে পণ্য ক্রয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
[৮] ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার বার্তায় বলেছেন, ‘এই আইনের ফলে বাজারের সঙ্গে কৃষকদের সম্পৃক্ততা বাড়বে। কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগের দরজা খুলে যাবে। কৃষিখাতে প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে।’ তবে কৃষকরা দাবী করছেন, এরফলে সরকার ধীরে ধীরে নির্ধারিত মূল্যে গম ও ধান কেনা বন্ধ করে দেবে। এতে তাদের ফসল বেচতে বেসরকারি ক্রেতাদের সঙ্গে দরকষাকষিতে নামতে হবে। ক্ষতির মুখে পড়বেন বহু কৃষক। তারা করপোরেশনের দাসে পরিণত হবেন। অন্যদিকে কৃষিতে বড় সংস্থাগুলোর মনোপলি প্রতিষ্ঠা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :