রেজাউল করিম: [২] হাঁস পালনে ঝুঁকছেন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বেকার হয়ে পড়া তাঁতমালিক ও তাঁতশ্রমিকরা, অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। করোনার কারনে ধ্বংসের মূখে তাঁতশিল্প। পেশা বদলাতে শুরু করেছে তাঁতীদের অনেকেই। তারা হাঁস পালনে ঝুঁকছেন। বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে চৌহালী-বেলকুচিসহ সিরাজগঞ্জের ৮টি উপজেলার প্রধান অর্থনৈতিক সম্পদ তাঁতশিল্পের ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
[৩] করোনায় অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে এখানকার ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প। বন্ধ হয়ে গেছে অর্ধেকেরও বেশী তাঁত কারখানা। বেকার হয়ে পড়েছে হাজার হাজার তাঁতমালিক ও তাঁতশ্রমিক। তাঁত সমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জের গ্রামাঞ্চলে হাজার হাজার বেকার তাঁতমালিক-তাঁতশ্রমিক হাঁস পালনে ঝুঁকে পড়েছেন।
[৪] এতে তারা বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তিও পাচ্ছেন। এরই মধ্যে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীর তীরবর্তী ৫টি উপজেলার চরাঞ্চলসহ জেলার ৯টি উপজেলার গ্রামাঞ্চলে ১ হাজার ২৩২টি হাঁসের খামার রয়েছে। এসব খামারসহ পারিবারিকভাবে ১৪ লাখ ৩৫ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস পালন করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে দেশি, খাকি ক্যাম্বশ, ইন্ডিয়ান রানা ও রাজহাঁস। ক্ষতিগ্রস্হ ও বেকার হয়ে পড়া তাঁতমালিক ও তাঁতশ্রমিকরা এসব প্রজাতির হাঁস পালনে বেশি ঝুঁকেছেন।
[৫] তবে যমুনা নদীর তীরবর্তী চৌহালী, বেলকুচি, শাহজাদপুর, কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলসহ চলনবিল এলাকার তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হাঁস পালন বেশি হচ্ছে। খামারিরা জানান, স্থানীয় খাল-বিল নদী-নালা ও ডোবার পাড়ে এ হাঁসের খামার গড়ে তোলা হয়। বিশেষ করে অস্থায়ী খামারের হাঁসগুলো খাল-বিলের মধ্যে থাকা ছোট ছোট মাছ ও শামুক খেয়ে থাকে। এতে তেমন খরচ না হওয়ায় হাঁস পালন লাভজনক। তাই বৃদ্ধি পাচ্ছে খামার ও খামারির সংখ্যা।
[৬] এসব হাঁসের মাংস ও ডিম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এমনকি জাতীয় অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে হাঁসের খামার। মূলত গ্রামের মাঠে অল্প পানিতে উন্মুক্তভাবে হাঁস পালন করা যায়। বেকার হয়ে পরা তাঁতমালিক ও তাঁতশ্রমিকরা অল্প পুঁজি নিয়ে হাঁসের খামার গড়ে তুলেছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আখতারুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, বিশেষ করে ভাসমান পদ্ধতিতে হাঁস পালনে খরচ অনেকটাই কম হয়।
[৭] এতে লাভও তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হয়। খামারিদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে না পারলেও হাঁসের চিকিৎসা, টিকা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ হাঁস পালনে এরই মধ্যে বহু বেকার ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্হ তাঁতমালিক ও তাঁতশ্রমিক স্বাবলম্বী হয়েছেন। তারা সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে খামারে হাঁস পালন আরও বাড়বে এবং বেকারত্বও দূর হবে। সম্পাদনা: সাদেক আলী
আপনার মতামত লিখুন :