রুহুল আমিন : ভাস্কর্য নয়, ভয়টা হলো ‘শেখ মুজিব’। এদেশের আজহারীর ভক্তরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বঙ্গপোসাগরে ফেলে দেয়ার ফতোয়া দেয়, আর মিশরের হাজার হাজার ভাস্কর্য পুরা কীর্তি হিসেবে সংরক্ষণের ফতোয়া দিয়ে রেখেছে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়। আসলে তাদের বেদনার জায়গাটা সেটা নয়, তাদের বেদনার জায়গাটা হলো ‘শেখ মুজিব’।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য যদি সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া যায়, তখন এই ভাস্কর্যকে ঘিরে এটি সাংস্কৃতিক আবহ তৈরি হবে। সেখানে কবি, সাহিত্যিক, ছাত্র, শ্রমিক, সাধারণ মানুষের একটি সমাগমের একটি ধারা তৈরি হবে। তখন এগুলোর নাম হবে মুজিব চত্তর। (যারা দ্বীপ অঞ্চলের বাসিন্দা , তারা জানেন মুজিব কিল্লা শব্দটা কী পরিমাণ জনপ্রিয়) যদি কোনো দিন যদি এমন সরকার ক্ষমতায় আসে তখন তাদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ মুজিব চত্তরগুলোতে সমবেত হবে।
সেই সমবেত জনতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো শক্তি থাকবে না কোনো শাসকের। শাসকেরা যদি শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ভেঙেও ফেলে তখনো সেই চত্তরগুলো পুনঃদখলের জন্য জনগণ এগিয়ে আসবে। ইতিহাস সাক্ষী, শেখ মুজিবের সামনে যখনই যতোরকম বিপদ এসেছে, ততোবারই শেখ মুজিব ছুটে গেছেন জনতার সামনে, দুই হাত উপরে তুলে বলেছেন ‘আমি শেখ মুজিব।
এই ভাস্কর্যগুলো একটি প্রাসঙ্গিক সময় পর্যন্ত জনগণের হৃদয়ে সেই অনুরণন তুলে বলবে ‘আমি শেখ মুজিব’। এই অনুরণনকে ভয়পায় এইদেশে প্রতারক চক্র। আমার ধারণা বর্তমান আওয়ামী লীগের অনেকেও সেই শেখ মুজিবকে ভয় পায়। কারণ শেখ মুজিব পরবর্তী বাংলাদেশ একটি বামুন বৃক্ষের বন। যেখানে কোনো ফল ধরে না, নতুন চারা গজায় না। কেউ আর নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে তুলতে পারেন না কোনো ক্ষেত্রেই। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু আওয়ামী লীগকে যতোটা ক্ষতি করেছে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে তার বিরোধীদের। তার চেয়েও বেশি ক্ষতি করেছে দেশের।