সাবেত আহমেদ : [২] জেরার টুঙ্গিপাড়ায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অভিযোগ এনে ইউপি-চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ফের অনাস্থা দিয়েছে গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ সদস্য। তারা সম্প্রতি পরিষদের চেয়ারম্যান সুষেণ সেনের বরখাস্তসহ তার অপরাধের বিচার দাবি করে জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি-দমন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে এ সংক্রান্ত লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।
[৩] ভূয়া জন্ম-নিবন্ধন ও ওয়ারিশন সার্টিফিকেট প্রদান, জালিয়াতীর মাধ্যমে ভিজিএফ, ভিজিডি, এলজিএসপি, টিআর এবং কাবিখা’র বরাদ্দকৃত সরকারি মালামাল ও অর্থ আত্মসাৎ, হোল্ডিং-কার্ডের নামে অর্থ আদায় করে আত্মসাৎ, বিভিন্ন রাস্তা নির্মাণে কমিটির সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে বা কখনও স্বাক্ষর ব্যতীত বা কখনও ভূয়া মাস্টার-রোল তৈরী করে টাকা উত্তোলন এবং পরিষদের কাউন্সিলরদের সম্মানী ভাতা প্রদান না করা সহ চেয়ারম্যানের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উল্লেখ রয়েছে ওই আবেদনপত্রে।
[৪] এধরনের দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের অধীনে পেশাগত দায়িত্ব পালন সম্ভবপর নয় দাবি করে তারা আরও জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন অপকর্মের কারণে ইউনিয়নবাসীর নিকট চেয়ারম্যান সুষেণ সেন চরম অপমান-অপদস্ত হয়েছেন। এছাড়া দূর্ণীতি ও যৌন-হয়রানীসহ তার নানা অপকর্ম তুলে ধরে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিবসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছেও অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু কোনকিছুই প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি। তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই তাদের ওপর নানাধরণের হুমকি-ধমকি বর্ষণ হতে থাকে। তাই নিরুপায় হয়ে পরিষদের সাত সদস্য একসঙ্গে গোপালগঞ্জ নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে এফিডেভিট (নং-৩৬০, তাং-১১/১১/২০২০) নিবন্ধন করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতণ কর্তৃপক্ষের কাছে সুবিচার প্রার্থনা জানিয়েছেন।
[৫] এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদে গেলে ষ্টোর-রুমে কিছু শাড়ি ও কম্বল দেখতে পাওয়া যায়, যেগুলো গতবছর ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ইউনিয়নের গরীব ও অসহায় মানুষদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ ছিল। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ বেশকয়েক কার্টুন টিফিন-বক্স পাওয়া যায়। অভিযোগ পাওয়া যায়, এসব মালামালের কিছু অংশ নিজের লোকদেরকে দিয়ে বাকী সব তিনি গোপনে অন্যত্র বিক্রি করে দেন; তারপরও কিছু থেকে যায়।
[৬] এ সময় সেখানে উপস্থিত চেয়ারম্যান সুষেণ সেন সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী দেয়া কাপড়-চোপড় সবই বিতরণ করা হয়েছে। দু’চারটে যা আছে তা পরিষদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় শ্রম দেয় এমন দু’একজন গরীব মহিলাদের জন্য রাখা হয়েছে। এছাড়া উপরোল্লিখিত অভিযোগগুলির ব্যাপারে তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচণে তার সমর্থণ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচণে তার নোমিনেশন প্রাপ্তির কারণে এলাকায় যে বিপক্ষ তৈরী হয়েছে, তারাই তার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র করছে এবং মিথ্যা অভিযোগ আনছে।