রাজু চৌধুরী : [২] চট্টগ্রাম নগরীর এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে চাঁদা দাবির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সহ চার সদস্য গ্রেপ্তার, লুঠ করা টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।
[৩] শুক্রবার (২০ নভেম্বর) এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ী অপহরণের ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ইন্ডিপেন্ডেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ আরো ৫ জনের যোগসাজশ রয়েছে।
[৪] মেশিনারিজ বিক্রয়ের কথা বলে গার্মেন্টস পার্টস ব্যবসায়ী আল মামুনকে রাত ৮ টার দিকে মেশিন দেখতে নিয়ে যাওয়া হয় রসুলবাগ আবসিক এলাকার বি-১নং ব্লকের ১৮৭ নাম্বার বাড়িতে। ওই বাড়ির একটি রুমের ভেতরে মেশিন আছে বলে তাকে রুমে ঢুকিয়ে বন্দী করে ফেলে অজ্ঞাত ৭ ব্যক্তি। পরে তার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে, অন্যথায় প্রাণ নাশের হুমকিসহ ইয়াবা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার ভয় দেখানো হয়।
[৫] লোমহর্ষক তথ্য জানিয়ে ভুক্তভোগী আল মামুন বলেন, টাকা না দিয়ে সময়ক্ষেপন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেদম মারধর শুরু করে। এভাবে প্রায় দেড় ঘন্টা তাকে আটকে রেখে বিকাশ এবং নগদ মিলিয়ে সর্বমোট-২৫,০০০/- টাকা এবং একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন যার মূল্য ১৯,০০০/- টাকা নিয়ে উক্ত ঘর হতে বেড়িয়ে যায় আসামিরা।
[৬] অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা চলে যাওয়ার পর তিনি উক্ত রুম থেকে কৌশলে বের হয়ে চিৎকার করলে স্থানীয় পথচারীসহ উক্ত বিল্ডিং এর মালিক মোঃ শওকত হোসেন (৩৫) তাকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসেন এবং পলাতকদের একজনকে তিনি চিনে ফেলেন। পলাতক ব্যক্তিকে আটক করার চেষ্টাকালে তার চেহারা দেখে তার নাম রমজান এবং সে বাকলিয়া থানাধীন বড় মিয়া মসজিদ পুকুরপাড় এলাকার লোক বলে এলাকার লোকজন চিনতে পারে।
[৭] আল মামুন আরও বলেন, পথচারীর মোবাইল নিয়ে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ কল দেয়ার পর বাকলিয়া থানার টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
[৮] পুলিশ জানায়, বাড়ীর মালিক ও আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনাস্থলের কক্ষটি তল্লাশী করে আসামী মামুনের এসএসসি পরিক্ষার সার্টিফিকেটের ফটোকপি, ১২ নং সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত চারিত্রিক সনদের কপি, আসামী জিহানের নামে ইস্যুকৃত ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার প্রবেশপত্র সহ ইয়াবা ট্যাবলেট সেবনের সরঞ্জাম-ফয়েল পেপার, গ্যাসলাইট ইত্যাদি সহ বিপুল পরিমাণ ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
[৯] পরবর্তীতে বাকলিয়া থানায় আসামীদের বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা রুজু হলে বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন-পিপিএম এর নেতৃত্বে বাকলিয়া থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করেন এবং এই ঘটনায় আরও জড়িত কেউ থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান ওসি নেজাম উদ্দিন।