শিরোনাম
◈ আমরা তীব্র মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে আজকের সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছি: যুবদল সভাপতি (ভিডিওি) ◈ পরকীয়া ঠেকাতে ছেলের কাঠমান্ডুগামী ফ্লাইটে ‘বোমা’ আতঙ্ক ছড়ানোয় মা-সহ গ্রেপ্তার ৩: র‍্যাব ◈ মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার: যৌথ তদন্তে কাজ করবে ঢাকা-কুয়ালালামপুর ◈ “বাংলা মাতৃভাষা বললে বিদেশি”, আসামে আসন্ন আদমশুমারি ঘিরে হিমন্ত বিশ্বশর্মার মন্তব্যে তোলপাড় ◈ চান্দিনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ ◈ ঘোড়াশালে এক কেজি কাঁচামরিচের দাম ৬০০ টাকা”ক্রেতারা দিশেহারা ◈ ‘আমরা মানুষ হবো কবে?’:মিটফোর্ডে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘিরে আজহারীর হৃদয়বিদারক প্রতিক্রিয়া ◈ মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: “নরপিশাচদের সামলান” — তারেক রহমানকে এনসিপি নেতা সারজিস আলমের কড়া বার্তা ◈ সেনাবাহিনী-পুলিশের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে: আইএসপিআর ◈ মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা: দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আশ্বাস আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের

প্রকাশিত : ৩০ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৫৯ দুপুর
আপডেট : ৩০ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৫৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গ্রিন রোডে হাজী সেলিমের দখলে সরকারি বাড়ি

ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকা-৭ আসনের সাংসদ হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে সরকারি বাড়ি দখলের অভিযোগ রয়েছে। কয়েক বছর আগে রাজধানীর গ্রিন রোডে গ্রিন স্কয়ারের ৫ নম্বর প্লটে এক বিঘা জমির ওপর দোতলা বাড়িটি দখল করে সেটি ভেঙে ১০ তলা ভবন নির্মাণ করেন। বাড়িটিতেই হাজী সেলিমের মালিকানাধীন মদিনা গ্রুপের করপোরেট অফিস করা হয়েছে।
সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার আগে অবাঙালি কাশেম আলীর নামে ছিল গ্রিন রোডের ওই বাড়ি। দেশ স্বাধীনের পর কাশেম আলী পাকিস্তান চলে যাওয়ার পর পরিত্যক্ত বাড়িটি সরকার নিয়ে নেয়। পরে এটি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) রেস্টহাউস করা হয়েছিল। এরপর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ক্রেতা, আমমোক্তার, বিক্রেতা সাজিয়ে একপর্যায়ে এক বিঘা জমির ওপর নির্মিত বাড়িটি হাজী সেলিম দখলে নিয়ে নেন। ওই এক বিঘা জমির মূল্যই আছে ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্রিন স্কয়ারের অংশে বাড়িটির হোল্ডিং নম্বর-৫। আবার সেন্ট্রাল রোডসংলগ্ন বাড়িটির হোল্ডিং নম্বর ৬৪/এ। জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলামের বাড়ির পাশেই ওই বাড়ি। আবাসিক এলাকায় ১০ তলা আলিশান বাড়ি নির্মাণ করে মদিনা গ্রুপের অফিস খোলা হয়েছে। এ নিয়ে জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম আপত্তিও তুলেছিলেন। তিনিই ওই সরকারি বাড়িটি দখলের ফিরিস্তি তুলে ধরে ২০১১ সালের প্রথম দিকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি অভিযোগও পেশ করেছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, সরকারি বাড়িটি দখলের তথ্য-প্রমাণের ফাইলটি এখনও দুদকে আছে। কর্তৃপক্ষ চাইলে অভিযোগটির অনুসন্ধান আবারও শুরু করতে পারেন।

সূত্র জানায়, পাকিস্তান আমলে কাশেম আলীর মালিকানাধীন দোতলা বাড়িটিতে একটি প্রজেক্টের অফিস ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রজেক্টের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরে বাড়িটি পিডিবির দখল ও মালিকানায় চলে যায়। একপর্যায়ে পিডিবি বাড়িটি তাদের রেস্টহাউস হিসেবে চালু করে। এর পরই প্রভাব খাটিয়ে বাড়িটি দখলের পাঁয়তারা করেন হাজী সেলিম। বাড়ির মালিক কাশেম আলীর মেয়ে হিসেবে অস্তিত্বহীন নাহিদা কাশেম নাম প্রকাশ করা হয়। এই নাহিদা কাশেমের নামে ৪০ হাজার টাকায় কানাডাপ্রবাসী মো. ইব্রাহীমের কাছে জমিটি বিক্রিসূত্রে জাল বায়নানামা তৈরি করা হয়। সরকারি জমি দখলের উদ্দেশ্যেই বায়বীয় নাহিদা কাশেম নামটি তৈরি করা হয়েছিল। পরে ওই ইব্রাহীম বাংলাদেশি একজনকে জমির আমমোক্তার হিসেবে 'পাওয়ার অব অ্যাটর্নি' প্রদান করেন। এরপর এই ব্যক্তি আদালতে গিয়ে জমির মালিকানা দাবি করেন।

ওই সময় আদালত নাহিদার নামে সমন জারি করেন। বাড়ির সামনে নোটিশও টানিয়ে দেওয়া হয়; কিন্তু কথিত নাহিদা কাশেম আদালতে হাজির হননি। একটি সূত্র জানায়, অস্তিত্বহীন একটি নাম কখনও আদালতে হাজির হতে পারে না। এরপর ওই আমমোক্তারের নামে জমিটির দলিল করা হয়। তারপর হাজী সেলিম ওই আমমোক্তারের কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেন ১৯৯২ সালে। সবশেষে পুলিশের উপস্থিতিতে জমির দখল বুঝে নিয়েছিলেন তিনি।

সূত্র জানায়, ২০১১ সালে হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে বাড়ি দখলের অভিযোগটি অনুসন্ধান করেন দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক (বর্তমানে পরিচালক) বেনজীর আহম্মদ। ওই সময় এই অভিযোগ সম্পর্কে হাজী সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছিল। দুদকের ওই অনুসন্ধান কর্মকর্তা সরকারি জমি উদ্ধার ও দকলকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। পরে অজ্ঞাত কারণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাড়িটি মদিনা ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের মাধ্যমে নির্মাণ করা হয়েছে। নাম রাখা হয়েছে 'গ্রিন ভিলা'। এক নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম এবং তার লোকজন মারধর করার পর থেকেই বেরিয়ে আসছে তাদের নানা অপকর্ম।
ভবনের ছবি তুলতে গেলে সিকিউরিটির ঔদ্ধত্য আচরণ :গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রিন স্কয়ারে গিয়ে এই প্রতিবেদক মোবাইলে হাজী সেলিমের দখল করা ওই বাড়িটির ছবি তোলেন। তখন মদিনা গ্রুপের অফিসের ভেতর থেকে একজন সিকিউরিটি এসে ছবি তুলেছেন কেন- প্রতিবেদকে প্রশ্ন করেন ও ঔদ্ধত্য আচরণ করেন। প্রতিবেদক নিজের পরিচয় দিয়ে পেশাগত কাজের জন্য ছবি তোলা হয়েছে বলেন। এরপর প্রতিবেদককে অফিসের ভেতরে যেতে বলেন। অফিসে না গেলে সিকিউরিটি সামনে এসে পথ আগলে দাঁড়ান। পরে প্রতিবেদক কৌশল অবলম্বন করে সিকিউরিটিকে বলেন, ছবি ডিলিট করতে হবে? এরপর প্রতিবেদক পকেট থেকে মোবাইল বের করে প্রধান প্রতিবেদককে ফোন করেন। পরে ফোনে কথা বলতে বলতে বাড়িটির সামনে থেকে মূল রাস্তার দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। পরে কলাবাগান থানাকে বিষয়টি অবগত করা হয়। এ সময় মদিনা গ্রুপের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী ভেতর থেকে এসে প্রতিবেদকে চার্জ করেন- ছবি তুলেছেন কেন? পেশাগত কারণে ছবি তোলা হয়েছে বললে তিনি প্রতিবেদকের আইডি কার্ড দেখতে চান। পরে ভিজিটিং কার্ড দেওয়া হলে তিনি নমনীয় হন। পরে কলাবাগান থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে হাজির হয়। বিষয়টি তারা পর্যবেক্ষণ করে চলে আসে।সমকাল

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়