রহিদুল খান: [২] যশোরের ঝিকরগাছায় জন্মদাতার বিরুদ্ধে আল আমিন (৫) নামে একটি শিশুকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। তবে শিশুটির জন্মপ্রক্রিয়া স্বাভাবিক ছিলো না। দাবি করা হচ্ছে, ধর্ষণের শিকার নারীর গর্ভে জন্ম তার।
[৩] ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের বাঁকড়া গ্রামে বুধবার গভীর রাতে তাকে হত্যার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ করেছেন শিশুটির নানি। তবে শিশুটির জন্মদাতার পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
[৪] শিশুটি এখন গুরুতর অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা অথবা ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।
[৫] বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে শিশুটির নানি সাকিরন বলেন, ‘একই গ্রামের প্রতিবেশী দাউদ সর্দার তার মেয়েকে ধর্ষণ করে। এতে জন্ম হয় শিশুটির। এই ঘটনায় আদালতে মামলা হয়। আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষায় দাউদ হায়দার শিশুটির বাবা প্রমাণিত হয়। পরে আমার মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিই। মেয়ে এখন অন্য গ্রামে থাকে।’
[৬] ‘বুধবার রাতে আল আমিনকে নিয়ে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। রাত ১টার দিকে আল আমিনের চিৎকারে আমার ঘুম ভাঙে। তখন দেখি, বিছানার একপাশে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। তাড়াতাড়ি পানি দিয়ে আগুন নিভিয়ে আল আমিনকে নিয়ে হাসপাতালে আসি। ধারণা করছি, দাউদ হায়দারই শিশুটিকে হত্যার জন্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।
[৭] দাউদ সর্দার কেন এমন ঘটনা ঘটাবে?- এমন প্রশ্নের জবাবে ওই নারীর ভাষ্য, ‘সম্পত্তির ব্যাপার আছে। পাশাপাশি দাউদের ছেলে-মেয়েরাও বড় বড় চাকরি করে। এই বাচ্চা বেঁচে থাকলে তাদের মানসম্মানের ওপর আঘাত আসবে। এই জন্য হয়তো হত্যার চেষ্টা করতে পারে।’
[৮] হাসপাতালের চিকিৎসক শরিফুজ্জামান জানান, শিশুটির সমস্ত শরীর পুড়ে গেছে। তার অবস্থা গুরুতর। একারণে তাকে খুলনা অথবা ঢাকায় নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
[৯] এ ব্যাপারে দাউদ সর্দারের বক্তব্য জানতে রাতে তার নাম্বার ফোন করা হয়। রিসিভ করেন দাউদের মেয়ে। তিনি বলেন, ‘আব্বা বাইরে গেছেন। এশার নামাজ পড়ে ফিরবেন। তার ফিরতে ঘণ্টা দুয়েক দেরি হবে।’
[১০] দাউদের মেয়ে পরিচয় দেয়া ওই নারী বলেন, ‘সাকিরন গ্রামে থাকে না। সে যশোর থাকে। এঘটনা ঘটার আগে সে কখন গ্রামে এসেছে তাও আমরা জানি না।’ এর আগে সে মেয়ের বিয়ে দিতে এবং শিশুটির খোরপোষ বাবদ পাঁচ লাখ টাকাও নিয়েছে। আমরা শিশুটিকে আমাদের কাছে রাখতে চাইলে সাকিরন তাও দেয়নি। সে আরো দশ লাখ টাকা চেয়েছে। সামনে বাবার মামলার রায় হবে। আগুন দিয়ে শিশুটিকে পোড়ানোর ঘটনায় আমার আব্বা জড়িত না।
[১১] ঝিকরগাছা থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরে বাঁকড়া ফাঁড়িকে বিষয়টি খোঁজ নিতে বলেছি।’ সম্পাদনা: হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :