সুজন কৈরী: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা সংস্থা উজালা পেইন্ট ফ্যক্টরিতে অভিযান চালিয়ে ১৪৭ কোটি টাকার গোপন বিক্রির তথ্য উদঘাটন করেছে। এতে প্রতিষ্ঠানটিতে ২৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। যা আদায়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার সংস্থাটি জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দার উপপরিচালক নাজমুননাহার কায়সার ও ফেরদৌসী মাহবুবের নেতৃত্বে একটি দল গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বাংলামটরে এএইচএন টাওয়ারের ১২ তলায় অবস্থিত উজালা পেইন্টের হেড অফিসে অভিযান চালায়। প্রতিষ্ঠানটির ফ্যাক্টরি সাভারের হেমায়েতপুরের সিংগাইর রোডে অবস্থিত। যার ভ্যাট নম্বর ০০১৩৭৬৯৭৯- ০৪০৩।
অনুসন্ধান অনুযায় পেইন্ট ফ্যাক্টরিটি সুকৌশলে নিজস্ব বাণিজ্যিক দলিলাদি হেড অফিসে গোপন করে রেখেছিল। ফ্যাক্টরি প্রাঙ্গনে এর আগে ভ্যাট কর্মকর্তারা তল্লাশি করলেও এসব তথ্য পায়নি। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট রিটার্নে ২৫৬ কোটি টাকা বিক্রির তথ্য দিয়েছে। এতে তারা ভ্যাট পরিশোধ করেছে ৫১ কোটি টাকা। কিন্তু বাংলামটরের হেড অফিস থেকে জব্দ করা কাগজপত্র অনুযায়ী প্রকৃত মোট বিক্রি পাওয়া যায় ৪০৩ কোটি টাকা। এতে ১৪৭ কোটি টাকার তথ্য গোপন করা হয়েছে।
এনবিআরের নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের ডিজি ড. মঈনুল খান বলেন, প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় মূল্য গোপন করায় ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ১২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এই পণ্যে ৫ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক প্রযোজ্য। ফলে গোপনকৃত বিক্রয়ে সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি হয়েছে ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে দেখা যায়, সময়মতো ভ্যাট না দেয়ায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী ২ শতাংশ হারে সুদ আরোপযোগ্য। সেই হিসেবে সুদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
ভ্যাট গোয়েন্দা অভিযানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত বাণিজ্যিক তথ্যাদি ওরাকল সফটওয়্যারে ধারণ ও গোপন করে রেখেছিল। এসব তথ্যের সাথে মাসিক রিটার্নের তথ্যে ব্যাপক গরমিল পাওয়া গেছে। তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দেয়ায় উজালা পেইন্ট ফ্যাক্টরির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :