শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ০৭ অক্টোবর, ২০২০, ০৭:০২ সকাল
আপডেট : ০৭ অক্টোবর, ২০২০, ০৭:০২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী : বিশ্বসেরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচিৎ ধর্ষণের বিরুদ্ধে এখনই আরো কঠোর হওয়া

দীপক চৌধুরী: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশের খবর। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও উঠেছে। এটি একটি জঘন্য ঘটনা। অমানবিক, অসভ্য ও বর্বরতার চরম। মনে হচ্ছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে দৃষ্টান্তমূলক মূলক শাস্তি দেওয়ার নজির স্থাপন করতে হলে ধর্ষণ মামলার বিচারগুলো দ্রুত বিচার আইনে করতে হবে। প্রশ্ন উঠেছে, সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশের দায়িত্ব নিয়েও। ওই এলাকার পুলিশেরও দায়িত্ব রয়েছে সেই এলাকায় কী ধরনের বিশৃঙ্খলা বা আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে, তা নজরে রাখা। কিন্তু তা যথারীতি পালিত হয়নি। তারা সঠিকভাবে পালন করেননি। এর বিভিন্ন কারণও রয়েছে। শুধু পুলিশ প্রশাসন নয়, অন্য প্রশাসনও। দুর্নীতি, অবহেলা, দায়িত্বহীনতা, অমনোযোগিতার কথা উঠছে অনেকের বিরুদ্ধে।

সাম্প্রতিককালের বিভিন্ন অরাজকতা, নারী ধর্ষণ, খুন, সম্পদ লুণ্ঠনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগসহ একশ্রেণির রাজনৈতিক দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্ঠতা দেখা যাচ্ছে। বিবেচনাবোধ, সংবেদনশীলতা ও দায়িত্ববোধের অভাব স্পষ্ট হয়ে যায় এতে। এ লক্ষণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সবাই নয়, একশ্রেণির এমপির বিরুদ্ধে নানান কথা শোনা যাচ্ছে। লুণ্ঠনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ দূরের কথা দুর্বৃত্তদের পক্ষে জেলার এসপিকে শাসানো হয়। প্রশাসনকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের দলীয় লোক বলে প্রশ্রয় দিতে স্থানীয় এমপির সুপারিশের কথাও শোনা যায়। থানার ওসিরা তো এমনিতেই এমপির লোকদের ভয়ে তটস্থ থাকেন। এরপর যদি জেলার এসপিকেও এমপির ফোন অনুসারে কাজ করতে হয় তাহলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে কীভাবে?

সাম্প্রতিককালের নারী ধর্ষণের ঘটনায় নিন্দা জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না অনেকে। ভাইরাল হওয়ার কারণে ঘটনা ঘটার ৩২ দিন পর তা জানা গেল। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে হাজারো প্রতিবাদ, হাজারো বিক্ষোভ হচ্ছে দেশে। এসব দৃশ্য দেখে প্রশ্নজাগে, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে কী তবে আমাদের অর্জন? নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ২০ ধারা মোতাবেক বিশেষভাবে দ্রুতবিচার করার লক্ষ্যে শুধু ট্রাইব্যুনালে এ মামলারই বিচার কার্যক্রম চলবে। দেশে বর্তমানে ১০১ টি ট্রাইব্যুনাল দিয়ে আইনের নির্দেশনা মোতাবেক ১৮০ দিনের মধ্যে বিচারকার্য সম্পূর্ণ করা বাস্তবসম্মত। যদি দায়িত্বরত ব্যক্তি বা কর্মরতরা নিষ্ঠাবান হন, আন্তরিক হন এবং সততার সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন। সেক্ষেত্রে সততা ও নিষ্ঠা জরুরি। ২০(৩) উপ-ধারা মোতাবেক ১৮০ দিনের মধ্যে বিচারকার্য সম্পাদন করার নির্দেশনা আছে। ২০(২) উপ-ধারা মোতাবেক ট্রাইব্যুনাল প্রতি কর্মদিবসে একটানা বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশনা আছে। আইনটি এতো সহজে হয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তখন ক্ষমতায়। তাঁর আগ্রহ ও একাগ্রতা ছিল সবচেয়ে বেশি। যাই হোক, তাঁর আমলেই বাংলাদেশের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন এর বিচারের লক্ষ্যে আইন হয়। ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন প্রণয়ন করা হয়। ২০০৩ সালে উক্ত আইনের সংস্কার করে বিশেষ সংশোধনী আনা হয়। এ আইনের অধিনে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচারের লক্ষ্যে জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে দিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৮ সালে নতুন করে ৪১ টি ও ২০২০ সালে আরো ০৬টি ট্রাইব্যুনাল বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে ১০১টি ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের অধিন দায়েরকৃত প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার মামলার বিচার কার্যক্রম চলমান আছে। তবে এটি আরো বাড়ানোর কথা শোনা যায়। আমরা মনে করি, বিশ্বের সেরা সৎ ও পরিশ্রমী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখনই উচিৎ ধর্ষণের মামলাগুলো দ্রুত বিচারে নিষ্পত্তি করতে ব্যবস্থা করা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ধর্ষণসহ অব্যাহত নারী নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।’ খুব সুন্দর কথা। কিন্তু শ্রদ্ধা ও বিনয়ের সঙ্গে তাঁকে তৃণমূলের খোঁজ-খবর রাখতে বলবো। তৃণমূলে নের্তৃত্ব কেনাবেচা হয়েছে। রাজাকার, শান্তিবাহিনীর ছেলে, শালা, দুলাভাই, আত্মীয়স্বজন এখন জেলা-উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা। অনুপ্রবেশকারী দলে। মুক্তিযুদ্ধের দলকে সর্বনাশ করতে অশুভ তৎপরতা চলছে। অত্যন্ত পরিষ্কার মনের এই স্পষ্টবাদী সুসংগঠক ও পরিশ্রমী নেতা ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সমাজবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। দেশের সব নাগরিকের জন্য নিরাপদ চলাচল এবং নারীর প্রতি সহিংসতা ও নিন্দনীয় অপকর্ম রুখতে ধর্ষণের মত সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়