শিরোনাম
◈ চট্টগ্রাম বন্দরে সাইফ পাওয়ার টেকের যুগের অবসান, এনসিটির দায়িত্বে নৌবাহিনী ◈ ১ ট্রিলিয়ন ডলারের খনিজের খেলায় তালেবান, পেছনে চীন-রাশিয়া-ইরান-ভারত! ◈ পাকিস্তানকে ঠেকাতে গিয়ে ভারতে বন্যা, তোপের মুখে কঙ্গনা (ভিডিও) ◈ ৫ আগস্ট লক্ষ্য ছিল গণভবন, এবার জাতীয় সংসদ: নাহিদ ইসলাম (ভিডিও) ◈ গাজীপুরে মহানগর বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার ◈ দেশের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় জনগণ ঐক্যবদ্ধ : মির্জা ফখরুল ◈ রেস্ট হাউজে ‘নারীসহ’ ওসি, আটক করে ‘চাঁদা দাবি’ ছাত্রদল নেতার, সিসিটিভির ফুটেজ ফাঁস ◈ আর একটি হত্যাকাণ্ড ঘটলে সীমান্ত অভিমুখে লংমার্চ: হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের ◈ ধামরাইয়ে ঋণ দেওয়ার কথা বলে গৃহবধুকে ধর্ষণ, আসামী গ্রেফতার ◈ গাজীপুরে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার বিএনপি নেতা স্বপন

প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ০৫:৫৭ সকাল
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ০৫:৫৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সালাম না দিলেই মারধর, ছাত্রীদের ওড়না ধরে টান দিতো রবিউল

সিলেট প্রতিনিধি : এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনায় আসামি রবিউল হাসানের মা ও বোনকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছিল র‌্যাব-পুলিশ। এর কয়েকঘণ্টা পরই সুনামগঞ্জ-হবিগঞ্জের মাঝামাঝি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ৯টায় ইনাতগঞ্জ থেকে রবিউলকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার রবিউল সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বড়নগদিপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।

দিরাই উপজেলার জগদল ইউপি চেয়ারম্যান শিবলী বেগ জানান, রোববার বিকেলে বড় নগদিপুর গ্রামে রবিউলের বাড়িতে যায় র‌্যাব ও পুলিশের একটি যৌথ দল। এ সময় বাড়িতে রবিউলের বাবা দেলোয়ার হোসেন ছিলেন না। বাড়িতে থাকা মা সিতারা বেগম ও বোন লিপি বেগমকে রবিউলকে এনে দেবার জন্য চাপ দেন র‌্যাব ও পুলিশ। একপর্যায়ে মা ও বোনকে আটক করতে চান তারা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ২৪ ঘণ্টা সময় চান। এই ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রবিউল গ্রেফতার হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিউলের বাবা দেলোয়ার হোসেন স্থানীয়ভাবে কোনো রাজনীতিতে যুক্ত নয়। রবিউলও স্থানীয় কোনো নির্বাচনে কখনোই কাজ করেননি। কিন্তু সিলেটে তিনি এক রাজনৈতিক দলের হয়ে অস্ত্রবাজি করতেন। গ্রাম্য কোন্দলেও তিনি তার আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ হয়ে প্রায়ই অস্ত্রের মহড়া দিতেন। রোববার বিকেলেও তিনি বাড়ির পাশের আখিল শাহ্ বাজারের কাছে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। ওখান থেকে সন্ধ্যায় কুশিয়ারা নদী পাড় হয়ে ঢাকায় পালানোর সময় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ এলাকা থেকে রাত ৯টায় গ্রেফতার হন তিনি।

পরে রাত সাড়ে ৯টায় রবিউল ইসলামকে গ্রেফতারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন হবিগঞ্জের এসপি মোহাম্মদ আলী।

রাতে তাকে সিলেট মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার সময় হবিগঞ্জের অ্যাডিশনাল এসপি শেখ সেলিম জানান, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিশেষ নির্দেশনা, গোয়েন্দা ও পুলিশ বিভাগের সমন্বিত অভিযানে রবিউলের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে শনাক্ত করা স্থান থেকে রবিউল গ্রেফতার হন। গ্রেফতার এড়াতে তিনি পালিয়েছিলেন উল্টো পথে, অর্থাৎ ঢাকার দিকে। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের পাশের কাজীগঞ্জ বাজারের নিজ আগনা গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন তিনি।

এমসি কলেজে অধ্যায়নরত দিরাইয়ের এক ছাত্র জানায়, আদাব-সালাম না দিলে শিক্ষার্থীদের মারধর করে আহত করতেন রবিউল। শুধু তাই নয়, মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা ফাঁকা পেলেই নারী শিক্ষার্থীদের ওড়না ধরে টান মারা, মদ-জুয়া, ইয়াবা সেবন ও বিক্রি, বিনা কারণে শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছনা, হোস্টেলে জোরপূর্বক বসবাস, মিল না দিয়ে বন্ধুবান্ধবসহ খাওয়া, হোস্টেলের সিট বিক্রিসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।

তিনি আরো জানান, রবিউল ও তার সহযোগীরা টিলাগড়সহ নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চাঁদা আদায়, ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই ধরে নিয়ে মারধর করা হতো এবং এমনকি হত্যার হুমকিও দেয়া হতো।

এদিকে, সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউপির লাউগাং গ্রামের আরেক অভিযুক্ত তারিকুল ইসলাম ওরফে তারেকের গ্রামসহ পুরো এলাকায় ছদ্মবেশে কাজ করছেন অসংখ্য পুলিশ সদস্য।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসি মুক্তাদীর আহমদ জানান, পশ্চিম বীরগাঁওসহ আশপাশ এলাকায় চিরুনি অভিযান চলছে। তারেক এখানে এসে থাকলে, রেহাই নেই।

ওসি মুক্তাদীর আহমদ জানান, তারেকের বাবা মৃত রফিকুল ইসলাম ও মা রতিমালা বেগম ৮-১০ বছর আগেই গ্রাম ছেড়ে সিলেটে চলে গেছেন। গ্রামে তাদের কেউ থাকে না। গ্রাম্য সম্পর্কে আত্মীয় হন যারা তাদেরও নজরদারীতে রাখা হয়েছে। ছদ্মবেশে এলাকায় অসংখ্য পুলিশ কাজ করছে।

আরো পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তায় পাঁচ শতাধিক কৃত্রিম চোখ

এদিকে, সুনামগঞ্জের ১২০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় ২৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) নজরদারী বাড়িয়েছে। ২৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মাকসুদুল আলম জানান, সীমান্তের সব ফাঁড়ির ইনচার্জকে হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়েছে। নজরদারী বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। অভিযুক্তদের ছবি ফাঁড়িগুলোতে দেয়া হয়েছে। কাউকে সন্দেহ হলেই আটক এবং পুলিশে সোপর্দ করা হবে।

তিনি আরো জানান, সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে অভিযুক্তদের পালানোর কোনো সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়েছিলেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার এক দম্পতি। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ৫-৬ জন যুবক জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যায় দম্পতিকে। সেখানে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে ১৯ বছরের গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে তারা।

খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে গৃহবধূকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে শাহপরাণ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে শনিবার সকালে নগরীর শাহপরান থানায় মামলা করেছিলেন ভুক্তভোগীর স্বামী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়