শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:৪৭ দুপুর
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:৪৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হাওরে বাড়ছে পর্যটক

ডেস্ক রিপোর্ট : সুনামগঞ্জে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ও দৃষ্টিনন্দন বহু এলাকা। এগুলো পর্যটকের কাছে খুবই জনপ্রিয়। বিশেষ করে সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল পর্যটকদের কাছে দিন দিনই আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। ১৫ বছর ধরে এখানে ধারাবাহিকভাবে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে।

সুনামগঞ্জ সীমান্তের চারটি মুক্তিযুদ্ধ উপত্যকা, হাছন রাজা মিউজিয়াম, রাধারমণ, বাউল শাহ আব্দুল করিমের উজানধলের বাড়ি, শহরের ঐতিহ্য জাদুঘর, তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর, সীমান্তের বারেকের টিলা, শিমুল বাগান, লাউড়ের রাজবাড়ী, গৌরারংয়ের জমিদার বাড়ি পর্যটকপ্রিয় হিসেবে পরিচিত। তবে, পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে টাঙ্গুয়ার হাওর।

প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক টাঙ্গুয়ার হাওর দেখতে আসছেন। মাঝেমধ্যে আসছেন বিদেশি পর্যটকরাও। বিলাসবহুল ট্রলার থাকায় পর্যটকদের অনেকেই হাওরে এখন রাত্রিযাপনও করে থাকেন। উপজেলা সদরে আবাসিক হোটেল থাকলেও হাওর দেখতে অনেক পর্যটকই নৌকায় রাত্রিযাপন করেন।

প্রতিটি দলে থাকছেন ১৫ থেকে ২০ জন করে পর্যটক। সাধারণত ছুটি ও বন্ধের দিনই পর্যটকদের আগমন বেশি হয়। টাঙ্গুয়ার হাওর দেখতে এসে পর্যটকরা মেঘালয় সীমান্ত সংলগ্ন দেশের বৃহত্তম শিমুল বাগান, শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রি লেক), লাকমাছড়া, চানপুর ঝরনা, বড়গোপ টিলা (বারেক টিলা), যাদুকাটা নদী ছাড়াও হাওর ও সীমান্তে বসবাসকারী পরিবার এবং আদিবাসীদের জীবনযাপন দেখে মুগ্ধ হন।

 

পর্যটকদের সুবিধার্থে এসব এলাকায় নানা ধরনের কাজে স্থানীয়রা সম্পৃক্ত আছেন। হাওরে ঘুরে বেড়ানো ও রাতযাপনের একমাত্র ব্যবস্থা নৌযান হওয়ায় অনেক বাহারি ও বিলাসবহুল নৌযান গড়ে উঠেছে তাহিরপুর উপজেলায়। বিলাসবহুল অন্তত ২০টি নৌযান পর্যটকদের ভ্রমণকে নিরাপদ ও আনন্দময় করতে ভাড়ায় চলছে। এ ছাড়া ভাড়ায় চালিত ছোট-বড় আরও শতাধিক নৌযান রয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলার রতনশ্রী গ্রামের আতাউর রহমান তালুকদার জানান, হাওর দেখতে আসা পর্যটকদের জন্য তিনিই প্রথম বিলাসবহুল নৌযান নির্মাণ করেন। এই নৌযানে দিনের বেলায় ১৫০ থেকে ২০০ পর্যটক ঘুরে বেড়াতে পারেন। রাতযাপনের জন্য ২২ জন পর্যটকের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এতে আলাদা কেবিন আছে, দুটি খাট আছে। আছে বালিশ, লেপ, তোশক ও মশারির ব্যবস্থা। নৌযানটিতে কমোডসহ তিনটি টয়লেট রয়েছে। পানি সরবরাহের জন্য তিনশ' লিটার পানি ধারণক্ষমতার ট্যাংক রয়েছে নৌযানটিতে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য রয়েছে আইপিএস। নৌযানটির ছাদে একসঙ্গে দেড়শ' লোক যে কোনো অনুষ্ঠান করতে পারে।

টাঙ্গুয়ার হাওর দেখতে আসা পর্যটকরা সুনামগঞ্জ শহরের মরমি কবি হাছন রাজার বাড়ির হাছন রাজা মিউজিয়াম, ঐতিহ্য জাদুঘর এবং গৌরারং জমিদার বাড়ির প্রাচীন ঐতিহ্যও দেখছেন। কেউ কেউ সুরমা নদী পার হয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৪৮ শহীদের কবরস্থান দেখতে ডলুরায় যাচ্ছেন। কেউ বা উজানধলে বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের বাড়ি, আবার কেউ যাচ্ছেন জগন্নাথপুরের ইশাকপুরে রাধারমণের আস্তানায়। দোয়ারাবাজার সীমান্তের বাঁশতলায় মুক্তিযোদ্ধাদের কবরস্থান ও ঝুমগাঁও আদিবাসী পল্লিতেও যাচ্ছেন পর্যটকরা। টাঙ্গুয়ার হাওরে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পরিবেশ বিশুদ্ধ রাখা এবং নৌযান আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও বললেন স্থানীয়রা।

স্টিলের পাটাতনে নির্মিত ছয়টি আকর্ষণীয় নৌযান তাহিরপুর উপজেলা সদর থেকে পর্যটকদের নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই হাওর ঘুরছে। পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যে রাত কাটাচ্ছেন এসব নৌযানে। তাহিরপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম জানান, পর্যটকরা তাহিরপুর, টাঙ্গুয়ার হাওর, শহীদ সিরাজ লেক, বারেকের টিলা, যাদুকাটা ভ্রমণ করার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন চান। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাহিরপুর উপজেলা সদরে এক সমাবেশে বলেছিলেন, এখানকার হাওর, লাউড়ের রাজবাড়ি ও সীমান্ত এলাকাকে ঘিরে পর্যটক জোন গড়ে তোলা হবে। স্থানীয়দের প্রত্যাশা, প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন হবে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানালেন, মুক্তিযুদ্ধ উপত্যকা, মরমি সাধক রাধারমণ, হাছন রাজা, শাহ আব্দুল করিম, দুরবিন শাহসহ অসংখ্য বাউল কবির পাদপীঠ এই জেলা। শতাধিক হাওরের রূপ সৌন্দর্য রয়েছে এখানে। রয়েছে টাঙ্গুয়ার হাওরের মতো বিশাল হাওর। টেকেরঘাটের শহীদ সিরাজ লেক, বারেকের টিলা ও শিমুল বাগানকে সম্ভাবনাময় পর্যটন জোন তৈরির জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় ও আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয়ের মাধ্যমে চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং হয়রানিমুক্তভাবে পর্যটকদের কাছে এই এলাকাকে ব্র্যান্ডিং করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জেলায় এবং টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ে নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন, টাঙ্গুয়ার হাওর পাড় এবং জেলা সদরে বিআইডব্লিউটিএর অফিস স্থাপন, একই সঙ্গে ট্যুরিজম বোর্ডের অফিসও স্থাপন। মুজিববর্ষেই সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের লক্ষ্য, সবার সহযোগিতায় সুনামগঞ্জের পর্যটনকে ব্র্যান্ডিং করা।সমকাল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়