লিহান লিমা: [২] শুক্রবার রাতে জাতিসংঘের ৭৫তম সাধারণ সভার বক্তৃতায় ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘকে (আরএসএস) হিটলারের নাৎসি পার্টির সঙ্গে তুলনা করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে সেই স্থানে রাম মন্দির নির্মাণ, গুজরাত ও দিল্লীতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লঙ্ঘনের উদাহরণ দিয়ে ইমরান বলেন, ভারতে মুসলিমরাই নির্যাতনের শিকার। ডন/দ্য হিন্দু/এনডিটিভি
[৩] ইমরান খান বলেন, ‘নাৎসিদের বিদ্বেষের লক্ষ্য ছিলেন ইহুদিরা। আরএসএসের নিশানা মুসলিমরা। গান্ধী-নেহরুর ধর্মনিরপেক্ষতার বদলে ভারত হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র তৈরি করতে চাইছে। যার মূল লক্ষ্য মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। গুজরাট দাঙ্গায় ও দিল্লির সংঘর্ষে মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ভারতে হিন্দুত্ববাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ৩০ কোটি মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখদের নির্যাতন করা হচ্ছে। করোনার পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ভারতে সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য মুসলিমদের দায়ী করা হয়েছে। তাদের যথাযথ চিকিৎসা সেবার সুযোগটুকু দেয়া হয় নি।’
[৪] কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ নিয়ে ইমরান বলেন, ভারত কাশ্মীরের জনবিন্যাস পাল্টে দিতে চাইছে। সেনাবাহিনী সেখানে ক্রমাগত মানবতা-বিরোধী অপরাধ করছে। যা যুদ্ধাপরাধের শামিল।’ তিনি অভিযোগ করেন, কাশ্মীর একটি পারমাণবিক দ্ব›েদ্ব জায়গায় পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক নিয়মের ভিত্তিতে কাশ্মীর ইস্যু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি আসবে না।
[৫] ইমরানের বক্তৃতা শুরু হতেই ওয়াকআউট করেন জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি। পরে টুইটারে তিনি লেখেন, ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি নিচু মানের কূটনীতি। এটি মিথ্যা, বিদ্বেষমূলক, উস্কানিমূলক বিবৃতি ও যুদ্ধবাজ মনোভাবে পরিপূর্ণ। এটি পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার ও সীমান্ত সন্ত্রাস থেকে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে বিরক্তিকর ব্যক্তিগত আক্রমণ।’
[৬] জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মিজিতো ভিনিতো বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভাষণের সময় আমরা ভাবছিলাম তিনি কি নিজেদেরই কথা বলছেন? গত সাত দশকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য পাকিস্তানের একমাত্র গৌরব হল সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদ, জনজাতির নির্মূলীকরণ এবং গোপনে পারমাণবিক বাণিজ্য। ৩৯ বছর আগে পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ায় গণহত্যা করেছিল। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়া বন্ধ না করলে তা শুধু ভারত বা দক্ষিণ এশিয়া নয় গোটা বিশ্বের পক্ষেই বিপদজনক হবে।