আনোয়ার হোসেন শামীম: [২] গাইবান্ধা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এক নবজাতককে বিক্রি করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে । ১৭ সেপ্টেম্বর শহরের যমুনা ক্লিনিকে সিজিয়ান অপারেশনের বিল ১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করার সামর্থ্য না থাকায় নবজাতক সন্তান বিক্রি করে দেন বাবা মা। টাকা অভাবে নিজের সন্তান বিক্রি করে শূন্য হাতে হাউ মাউ করে কাঁদ কাঁদতে বাড়ি যান।
[৩] বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। শনিবার বিকেলে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রসূণ কুমার চক্রবর্ত্তী ও এনডিসি এসএম ফয়েজ উদ্দিনকে সন্তান হারা বাবা-মার কাছে পাঠান। পরে তাদের কাছ থেকে সন্তান গ্রহণকারির পরিচয় জানতে পেরে সেখানে গিয়ে ওইদিন রাতে ওই সন্তানকে তাদের জিম্মায় নিয়ে নেন।
[৪] এসময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সন্তান গ্রহনকারী ওই ব্যক্তিকে ১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেয়া হয়। পরে সেখান থেকে জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি দল ওই শিশুটির বাড়িতে গিয়ে মায়ের কোলে তুলে দেন শিশুটিকে। এসময় ওই পরিবারকে ২০ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি তেল, শাড়ী, লুংগি ও নগদ ২ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়।
[৫] এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রসূণ কুমার চক্রবর্তী, সহকারী কমিশনার (ভুমি )নাহিদুর রহমান, পি.আই.ও আনিছুর রহমানসহ সরকারী কর্মকর্তা । সেই শিশুটি মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়ে লালন-পালনের দায়িত্ব নিলেন জেলা প্রশাসক।
[৬] উল্লেখ্য গাইবান্ধা সদর উপজেলার ঘাগোয়া ইউনিয়নের শোলাগাড়ি গ্রামের দিনমজুর শাহজাহান মিয়ার গর্ভবর্তী স্ত্রী আমেনা বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর সিজারিয়ানের জন্য জেলা শহরের যমুনা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিজারের পর সন্তানসহ মা ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভর্তি থাকেন। পরে তাকে রিলিজ দেয়ার সময় ক্লিনিকের পাওনা হয় ১৬ হাজার টাকা। ওই টাকা পরিশোধ করার মত সামর্থ্য ছিল না শাহজাহান মিয়ার। এই অবস্থায় তিনি তার নবজাত শিশুটিকে সাদুল্যা উপজেলার মনোহোরপুর গ্রামের এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করে দিয়ে ক্লিনিকের পাওনা পরিশোধ করেন। সম্পাদনা: সাদেক আলী
আপনার মতামত লিখুন :