শিরোনাম
◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৬ দুপুর
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] কুরিয়ার সার্ভিসে মাদক পাচার, পদক্ষেপ নিচ্ছে ডিএনসি

সুজন কৈরী: [২] পণ্যের আড়ালে বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসকে ব্যবহার করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের মাদকদ্রব্য। এমনকি দেশের বাইরেও মাদক চোরালানে ব্যবহার হচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিস। তাই কুরিয়ার সার্ভিসে কঠোর নজরদারিসহ সুরক্ষা নীতি গ্রহণ করার বিষয়ে ভাবছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। মাদক পাচার বন্ধে দেশের সকল কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে একটি কর্মশালার পরিকল্পনা করছে ডিএনসি।

[৩] গত ৯ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জব্দ করা হয় ২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা মূল্যের ১২ কেজি ৩২০ গ্রাম অ্যামফিটামিন মাদক। যা ইয়াবার চেয়ে শক্তিশালী। ওই ঘটনায় ছয় জনকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আটক করা হয়। মাদক জব্দের ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়। একটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার যাওয়ার কথা ছিলো। ওই মাদক পাচারের চেষ্টায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস। আমদানির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ঠিকানায় অভিযান চালিয়ে কারও সন্ধান পায়নি ডিএনসি।

[৪] বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কুরিয়ার সার্ভিসকে সুরক্ষামূলক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি শক্তিশালী নজরদারি প্রয়োজন। দরকার জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা এবং যুগোপযোগী আইন ও নীতিমালা।

[৫] আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, কোভিডের মতো বৈশ্বিক দুর্যোগেও থেমে নেই মাদককারবারি চক্রের ব্যবসা। তল্লাশি ও নজরদারিতেও বিভিন্ন কৌশলে দেশে মাদকের চালান আনছে তারা। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টেকনাফ থেকে ইয়াবা, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর মতো সীমান্ত থেকে আসছে ফেন্সিডিল। ত্রাণ বিতরণ, শিশু খাদ্য, ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয়সহ বিভিন্ন পণ্যের আড়ালেও চলছে মাদকের চোরাকারবারে।

[৬] ডিএনসিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার অভিযানে অনেক মাদকের চালান ধরা পড়ার পর থেকেই ডিএনসির পক্ষ থেকে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো নজরদারি করতে শুরু হয়। এরই প্রেক্ষিতে শুধু চলতি বছরই কুরিয়ারের মাধ্যমে মাদকের চোরাচালানের অভিযোগে ১২টি অভিযান চালানো হয়। জব্দ করা হয়েছে ইয়াবাসহ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য।

[৭] এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো-উত্তরের উপ-পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা বলেন, কুরিয়ার সার্ভিসে যেন মাদকজাতীয় কোনো কিছু চোরাচালান না হয় সেজন্য কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা প্রয়োজন। থাইল্যান্ড ও কোরিয়াসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে এমন ব্যবস্থা রয়েছে। আগে যখন একের পর এক অভিযানে ইয়াবার চালান ধরা পড়ে, তখনই কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর সঙ্গে ডিএনসির সদর দপ্তর থেকে আলোচনা করা হয়। এরপর অ্যামফিটামিনের চালানটি ধরা পড়ে। এর প্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তার দিকটি আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

[৮] তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে চিন্তা-ভাবনা করছি, কীভাবে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এক্ষেত্রে আইনের বা বিধি-বিধানের কোনো প্রয়োজন রয়েছে কিনা, এ বিষয়গুলো অধিদপ্তর খতিয়ে দেখছে। কুরিয়ারে পার্সেল ডেলিভারির ক্ষেত্রে যেন প্রেরক ও প্রাপকের সঠিক ঠিকানা উল্লেখ করা হয়, এনআইডির কপি সংগ্রহ করা হয়, সক্রিয় সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রণালয়ে অধিপ্তরের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

[৯] ডিএনসি আরেক কর্মকর্তা বলেন, কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর উপর ডিএনসির নজরদারি রয়েছে। অধিদপ্তরের নিজস্ব উদ্যোগে ডিএনসির গোয়েন্দা বিভাগের মাধ্যমে এজেন্ট নিয়োগ করা রয়েছে। কিন্তু এরপরও আরও ক্লোজ মনিটরিংয়ের যে বিষয়টি দরকার, তা সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলে হচ্ছে না। এজন্য কুরিয়ার সার্ভিসগুলো নিয়ন্ত্রণের তাগিদ আমরা অনুভব করছি।

[১০] মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের উপ-পরিচালক মানজুরুল ইসলাম বলেন, মাদকের চোরাচালান বন্ধে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর মালিকদের নিয়ে একদিনের একটি কর্মশালার আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা চলছে। কর্মশালায় কী কী মাদক পাচার হয়, মাদকের বৈশিষ্ট কী কী রয়েছে তা জানানো হবে। কীভাবে দেখলে তারা বুঝবে পার্সেলে মাদক রয়েছে, কীভাবে ডিএনসিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিবে, কীভাবে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো থেকে তথ্য পাওয়া যাবে, কৌশলগত বিষয়গুলো কী হবে, কোন জিনিস বহন করা যাবে, কোনটি যাবে না এমন নানাবিধ বিষয়ে কর্মশালাটি হবে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়