আজফার হুসাইন: ১৮৮১ সাল নাগাদ মার্কস গণিত নিয়ে প্রায় ১ হাজার পৃষ্ঠা লিখে ফেলেছিলেন। এই পৃষ্ঠাগুলো মার্কসের ম্যাথমেটিকাল ম্যানিউস্ক্রিপ্টস নামে পরিচিত। মার্কসের এই কাজের সন্ধান দিয়েছিলেন এঙ্গেলস নিজেই, ১৮৮৫ সালে প্রকাশিত তার বিখ্যাত অ্যান্টি ড্যুরিংথের ভূমিকায়। গণিত নিয়ে মার্কসের এই কাজের অংশবিশেষ অবশ্য ১৯৩৩ সালে রুশ ভাষায় প্রকাশিত হয় এবং ১৯৬৮ সালে ইয়ানোভস্কায়ার তত্ত্বাবধানে মার্কসের ম্যাথমেটিকাল ম্যানিউস্ক্রিপ্টসে পূর্ণ সংস্করণ চূড়ান্ত করা হয়। অংক নিয়ে মার্কস মেতে উঠেছিলেন বটে। শুরুতে মার্কস রাজনৈতিক অর্থনীতির প্রয়োজনেই গণিত অধ্যয়ন করেছিলেন এবং যাকে, ‘বাণিজ্যিক অংক’ বলা হয় তা দুর্দান্তভাবে রপ্তও করেছিলেন। মার্কসের জন্য রাজনৈতিক অর্থনীতিতে গণিতের প্রয়োগ প্রয়োজনীয় ছিলো।
তবে পরবর্তী সময়ে আলাদাভাবেই অর্থাৎ স্বাধীনভাবেই তিনি গণিত অধ্যয়ন শুরু করেন। দারুণভাবে ঝুঁকে পড়েন ‘ক্যালকুলাসের দিকে, যা নিয়ে তিনি পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে গেছেন কিংবা নোট নিয়েছেন ক্লান্তিহীনভাবে। কিন্তু কোন ‘ক্যালকুলাস’ যেহেতু বস্তুবাদী ডায়ালেকটিকস মার্কসের কাজের জ্ঞানতাত্ত্বিক ভিত্তি (যদিও ডায়ালেকটিকস কেবল সেটাই নয়), মার্কস বেছে নিয়েছিলেন ‘ডিফারেনশিয়াল ক্যালকুলাস’ যা নিয়ে তার ভাবনা তিনি লিপিবদ্ধ করে গেছেন। যেমন : তিনি লিখেছেন নিউটন ও লাইবনিজ নিয়েও। এছাড়া মার্কস কাঠামোগত বীজগণিতের ‘আলোকায়ন ধারার ঐতিহ্যকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। আর ক্যালকুলাসের এলাকায় বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় ভেরিয়েবেল ম্যাগনিচিউডের কথা, যাকে মার্কস প্রকৃতিতে বিরাজমান দ্বান্দ্বিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত দেখেছিলেন। গণিতের এই মার্কসকে আমরা খুব একটা চিনতে পারিনি। আশা করি, খুব শীঘ্রই এই মার্কসকে নিয়ে বিস্তারিতভাবে লেখা শুরু করবো। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :