জামাল হোসেন, জীবননগর : [২] চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হরিহরনগর গ্রামের তিন প্রতারক জ্বিন বশ করে টাকা ডবল করে দেয়ার কথা বলে এলাকার শতাধিক মানুষের নিকট থেকে ৭০-৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। হাতিয়ে নেয়া ওই টাকা সোনালী ব্যাংক জীবননগর-শাখার ক্যাশিয়ার আব্দুস সালামের একাউন্টে জমা রাখার দাবি করেছে প্রতারকরা।
[৩] এলাকাবাসী ওই তিন প্রতারককে আটক করে উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। এ ঘটনায় ওমেদুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে জীবননগর থানায় প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে একটি মামলা দিয়েছেন।
[৪] মানুষের মধ্যে বিশ্বাস অর্জন করতে প্রখমদিকে কিছু মানুষের নিকট থেকে যে টাকা নেয় তার দ্বিগুন টাকা দেয়। আবার অনেককে তাদের বাড়ীতে নিয়ে সারা ঘর বিছানো ৫’শ ও ১’হাজার টাকার নোট দেখায়। ঘটনাটি দিনে দিনে এলাকায় প্রচার হতে থাকে। এতে অনেক মানুষ দ্বিগুন টাকা পাওয়ার আশায় তাদেরকে লক্ষ লক্ষ টাকা দেয়। এ ভাবে তাদের খপ্পরে পড়া এলাকার শতাধিক মানুষের ৭০-৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। চক্রটি ভুক্তভোগীদের আসল টাকাও ফেরত না দিয়ে নানা অজুহাতে কালক্ষেপনের এক পর্যায়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। সম্প্রতি প্রতারক চক্রটি আবার এলাকায় ফিরে আসে এবং নতুন কৌশলে প্রতারনা শুরু করে।
[৫] বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে ভুক্তভোগীরা প্রতারক মাজেদাদের বাড়ীতে গেলে তারা আমাদের সাথে মারমুখি আচরণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে গ্রামের উত্তেজিত মানুষ কাদেরকে আটকিয়ে মারপিট শুরু করলে তারা বলে কিছু টাকা জীবননগর সোনালী ব্যাংকে জমা আছে। পরে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করে।
[৬] ভুক্তভোগী রেজাউল ইসলাম রেজা ও মফিজুল ইসলাম আমরা দু’জনে মিলে প্রতারকদের ৪৮ হাজার টাকা দেয়। প্রতারকরা যখন তাদের ঘরে থাকতো তখন ঘর ভর্তি টাকা থাকতো। কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে তারা ঘর থেকে নেমে যাওয়ার সাথে সাথে সব টাকা কোথায় চলে গেছে! তারা এলাকার এক থেকে দেড়’শ মানুষের নিকট থেকে টাকা নিয়েছে।
[৭] ভোক্তভোগীরা আরো বলেন, জীবননগর সোনালী ব্যাংক শাখায় গেলে ক্যাসিয়ার সালাম বলেন, তার অ্যাকাউন্টে প্রতারক চক্রের ৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা আছে। তবে উক্ত টাকা প্রতারকরা কি ভাবে আয় করেছে তা তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়াও প্রতারকদের আত্মীয় শাহাবুলের নিকট সাড়ে চার লাখ টাকা এবং সাজেদা ওরফে বড় বুড়ির নিকট ১২ লাখ টাকা মজুদ আছে বলে প্রতারক মাছুরা খাতুন জানিয়েছে।
[৮] সোনালী ব্যাংক জীবননগর শাখার ক্যাসিয়ার আব্দুস সালাম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ময়েন চেয়ারম্যান মাছুরাকে আমার নিকট নিয়ে গিয়েছিল। আমার গ্রামের বাড়ী হরিহরনগর হলেও মেয়েটিকে কখনও দেখিনি। তবে তার মাকে আমি চিনি এবং সে ব্যাংকে আসা- যাওয়া করে।
[৯] জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গন্যমান্যদের অনুরোধে আপাতত মামলা রেকর্ড করা হচ্ছে না। তবে আপস নিস্পত্তি না হলে তদন্ত পুর্বক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্পাদনা : হ্যাপি