ডেস্ক রিপোর্ট : সম্প্রতি ‘তাসের ঘর’-এর ‘সুজাতা’র ব্রা-এর স্ট্র্যাপ দেখা গিয়েছে পোস্টারে। ব্যস, রে রে করে উঠেছে নেটপাড়ার একাংশ। কী হত, স্বস্তিকা যদি নেটাগরিকদের মন্তব্য এড়িয়ে যেতেন? স্বস্তিকা যেন প্রশ্ন শুনেই ফোঁস করে উঠলেন। “কেন উত্তর দেব না বলুন তো? সব সময় ছাড়ব কেন? সারাজীবন সব ছেড়েই রাখব? কী হবে, বাজে কথা লিখবে লোকে, লিখুক। কিন্তু একটা সচেতনতা তো তৈরি করা উচিত। মানুষ জানে না মেয়েরা অন্তর্বাস পরে? না পরলে লোকেরাই রাস্তায় তাকাবে। তাই অন্তর্বাস পরতে হয়! সমাজ বদলাক না, লোকেরা মেয়েদের বুকের দিকে তাকানো বন্ধ করুক! মেয়েদেরও আর অন্তর্বাস পরতে হবে না!” আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন টলি অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।
লুকিয়ে রেখে জামাকাপড় পরতে হবে শুধু মেয়েদের। আর ছেলেরা দারুণ শরীর তৈরি করে কখনও শুধু আন্ডারওয়্যার পরবে, কখনও কোমরের নীচে প্যান্ট পরবে, সে নিয়ে আদিখ্যেতা হবে— এই তথাকথিত ধারাকেই প্রশ্ন করেছেন স্বস্তিকা। একটা ছবির পোস্টারে মানুষ শুধু কালো অন্তর্বাস দেখল? আর কিছু দর্শকদের চোখে পড়ল না! এই নিয়ে রীতিমতো অবাক স্বস্তিকা। শুধু অভিনয় নয়, অভিনেতা হিসেবে সামাজিক সমস্যা আর সংস্কারকে বার বার প্রশ্ন করে তাঁর দর্শকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে চান তিনি।
ছিলেন ‘কিজি বাসু’-র মা, হয়ে গেলেন সুজাতা। তিনি এ ছবিতে গায়ক, অভিনেতা, ভিলেন, কমেডিয়ান, পার্শ্বচরিত্র সব। ‘‘সারা ফ্রেম জুড়ে আমি আর আমি! সব জায়গা নিয়ে নিয়েছি আমি এই ছবিতে”, আনন্দে আত্মহারা স্বস্তিকা। ‘তাসের ঘর’-এ সব কাজ তিনি একা করেছেন। কিন্তু এই একা কাজের আনন্দে মাঝে মাঝে ভাবছেন দর্শক কতটা ভালবাসবে সুজাতাকে?
নিজেকে এক কঠিন পরীক্ষার সামনে রেখেছেন তিনি। কথা প্রসঙ্গে চলে এল বাবা সন্তু মুখোপাধ্যায়ের কথা। “বাবা বরাবর আমার ছবি দেখে বাড়িতে এসে আমার অভিনয় নিয়ে নানা কিছু বলতেন। সব শেষে থাকতো একটা কথা, ‘তোকে আর একটু ছবিতে দেখাতে পারত! কম দেখিয়েছে”, স্মৃতি উপুড় করলেন স্বস্তিকা। তাঁর বাবা সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘শাহজাহান রিজেন্সি’ দেখেও বলেছিলেন, “ইশ! এত তাড়াতাড়ি মেরে দিল তোকে! আর একটু রাখতে পারতো”, বাবা ফিরে ফিরে আসে তাঁর কথায়, কাজে। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর ‘হইচই’-তে আসছে ‘তাসের ঘর’। স্বস্তিকা মনে করছেন, সুদীপ্ত রায়ের পরিচালনায় এই ছবি দেখলে তাঁর বাবার সারাজীবনের এই আফসোস মিটে যেত।
এই ছবিতে আক্ষরিক অর্থেই এক ভিন্ন চরিত্র সুজাতা। “যেমন অনিন্দ্যদার গল্প তেমনই সুদীপ্তর মেকিং। সহজাত অভিনয় করার জন্য সামনে ক্যামেরাকে ভুলে ২০ বছর ধরে কাজ করেছি। এই প্রথম ক্যামেরাকে সামনে রেখে সব কথা বলতে হল”, উচ্ছ্বসিত স্বস্তিকা।
আপনার মতামত লিখুন :