ডা. আরমান রহমান: পৃথিবীর যে সমস্ত দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে এসেছে তা হয়েছে শুধু কঠোর লকডাউন মেনে। এই লক ডাউন শিথিল করার সাথে সাথেই সেই সমস্ত দেশে সংক্রমণ আবার বেড়ে গিয়েছে। যেমন আয়ারল্যান্ড। গত তিন মাসের কঠোর লক ডাউন শিথিল করার কিছুদিন পরেই তিনটি শহরে সংক্রমণের হার, হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ারে ভর্তি হওয়া এবং মৃত্যু হার, তিনটিই বেড়ে গিয়েছে, আজকে থেকে সেই তিনটি শহরকে কার্যত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘেরাও করে রেখেছে, অপ্রয়োজনে কাউরে এসব শহর থেকে বের হতে দিচ্ছে না। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ একা কমে যেতে পারে কয়েকটা কারণে। [১] যদি ভাইরাসটি মিউটেশনের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। [২] যখন বেশিরভাগ মানুষের ইনফেকশন হয়ে ইমিউনিটি তৈরি হয়ে যায়। [৩] যখন ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে যাবে।
এর কোনটাই যেহেতু এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্যে প্রযোজ্য নয়, কাজেই একা একা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাবে এইরকম আশা যারা করছেন তারা বিজ্ঞানমনস্ক নন. মৃত্যু হার কমেছে কারণ বাংলাদেশে অব্যবস্থার মধ্যেও এখন একধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হয়েছে, অনেক রোগীরা আগে ভাগেই হাসপাতালে গিয়ে (অথবা না গিয়ে) অক্সিজেন সরবরাহ সহ অন্যান্য চিকিৎসা নিচ্ছেন, প্রথম দিকে যেটা পেতেন না, এক্ষেত্রে পালস অক্সিমিটার বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্যে সবচেয়ে উপযোগী টেস্ট টুল হিসেবে আবিভূত হয়েছে। অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে গেলেই তারা হাসপাতালে যেয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাংলাদেশে যেহেতু ভাইরাস সংক্রমণের কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই, পিসিআর টেস্ট হচ্ছে অপ্রতুল এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভুল, কাজেই কোনো ধরনের ভবিষ্যৎ জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মসূচি-ই হবে অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার মতন।
বাংলাদেশের মানুষ যতোদিন সচেতন না হবে ততোদিন করোনাভাইরাসের ইনফেকশন সমাজে চলতেই থাকবে। হয়তো ভ্যাকসিন এসে গেলে এবং দেশের সবার মধ্যে ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে পারলে তবেই মিলবে মুক্তি।