এম আমির হোসেন: কিছু মেয়ে আছে যারা জেন্ডার নিয়ে এতোটাই হীনম্মন্যতায় ভুগে যে কেউ যদি যৌক্তিক কারণেও পৃথিবীর কোনো নারীকে সামান্য সমালোচনা করে তাহলে তারা তা নিজেদের গায়ে মাখিয়ে তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে। কই, সাহেদকে তো ফটোশপ করে মেয়ে বানানো হলো, চরিত্র নিয়ে নানান প্রচার-অপপ্রচার হলো, ব্যক্তিগত জীবন বিচার-বিশ্লেষণ হলো, উলঙ্গ বানানো হলো- পুরুষ জেন্ডারের বলে কোনো পুরুষের পৌরুষে তো আঘাত লাগতে দেখলাম না।
বরং পুরুষরাই তা করছে এবং সমালোচনাও করছে ক্রমাগত। অপরাধের মাত্রা বড় হলে অপরাধের ব্যাকগ্রাউন্ড বুঝার জন্য অপরাধীর ব্যক্তিগত জীবন আলোচনায় আসাটা অস্বাভাবিক নয়। অপরাধ-বিজ্ঞানেও তা হয়। কেউ অপরাধী হওয়া মানে এই নয় যে তার জেন্ডার বা জাতি সবাই অপরাধী। এই ভাবনা হীনম্মন্যতা প্রসূত। তাই অপরাধীকে অপরাধীই ভাবুন, জেন্ডার মিলিয়ে গুলিয়ে ফেলবেন না। নারী ও পুরুষ একই প্রজাতির হলেও একই জেন্ডারের নয়। এই সত্যটি ভুলে যাই আমরা। একই মানব প্রজাতি হওয়ার জন্য যেমন কিছু কমন বৈশিষ্ট্য ও অধিকার আছে, তদ্রƒপ ভিন্ন জেন্ডার হওয়ার কারণে কিছু ভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও ভিন্ন অধিকারও আছে। এগুলোকে সম্মান করা ও নিশ্চিত করাই সভ্য সমাজের কাজ। ‘পুরুষ’-কে স্ট্যান্ডার্ড ধরে নারীকে পুরুষের মতো হতে চাওয়ার ভাবনা বরং পুরুষকে উন্নত জেন্ডার ভাবার মানসিকতা থেকেই আসে।
কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে নারীর দক্ষতা বিকাশের সুযোগ যেমন আছে, তেমনি কিছু ক্ষেত্রে আছে পুরুষেরও। এই ক্ষেত্রগুলোকে নিরাপদ করাই সভ্য সমাজের দায়িত্ব। জেন্ডার ভিন্নতার কারণে নারী ও পুরুষের যে ভিন্নতা তা বৈষম্যের জন্য নয়, বৈচিত্রের জন্য। এই বৈচিত্রে শ্রেষ্ঠত্বের কিছু নেই, আছে পরিপূরকতা। এই বৈচিত্র্য সুন্দরের জন্য। উচ্চম্মন্যতা বা হীনম্মন্যতায় না ভুগে একে রক্ষা-করা ও সম্মান-করা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার দায়িত্ব। ফেসবুক থেকে