সুজন কৈরী : [২] চিকিৎসা ব্যবস্থায় দুর্নীতির দায়ে বন্ধ হওয়া রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদের বাবা সিরাজুল ইসলাম কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
[৩] বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে (সাবেক আয়েশা মেমোরিয়াল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
[৪] হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, সিরাজুল ইসলাম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি তাদের হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার নিউমোনিয়াসহ অন্যান্য জটিলতা ছিল।
[৫] তিনি বলেন, গত চার জুলাই সাহেদ তার বাবাকে ভর্তি করাতে নিয়ে আসেন। ওই সময় তিনি আমাদের হাসপাতালের সুনাম থাকার কথা জানিয়ে বলেন, বাবার রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে। চিকিৎসার জন্য ভর্তি করতে চাচ্ছি। আমার হাসপাতালে তো সব সাপোর্ট নাই। সিরাজুলকে ভর্তির পর কোভিড পরীক্ষায় তার পজিটিভ আসে। দুদিন পর সাহেদ আমাকে ফোন দিলে আমি বলেছিলাম, যেহেতু আপনার রিজেন্ট হাসপাতাল কোভিড ডেডিকেটেড, তাই সেখানে নিয়ে যান। তখন তিনি আমাকে তার হাসপাতালে সব সাপোর্ট না থাকার কথা বলেন।
[৬] ভর্তির পর প্রথম দুদিন বাবার খোঁজ নিয়েছেন সাহেদ। রিজেন্টে র্যাবের অভিযান চালানোর রাতেও তিনি ফোন করেছিলেন, কিন্তু এরপর থেকেই তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আরও দুদিন যাওয়ার পর সাহেদের দুজন সহকারীকে সিরাজুল ইসলামের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে অবগত করা হয়। কারণ সিরাজুলের শারীরিক অবস্থার ক্রামাগত অবনতি হচ্ছিল। আমাদের কাছে সাহেদের ফোন নম্বর ছাড়া আর কারও নম্বর ছিল না। তার সব নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। পরিবার বা স্বজনদের কাউকে খুঁজে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
[৭] একপর্যায়ে জানতে পারি, সাহেদের স্ত্রী বাংলাদেশ টেলিভিশনের খবর পাঠক। সেখানে ফোন করে স্ত্রীর নম্বর নিয়ে তাকে সিরাজুলের বিষয়ে জানানো হয়। তখন তিনি তার আত্মীয়-স্বজনকে জানানোর কথা বলেন। এরপর সিরাজুলের ভাই পরিচয়ে একজন ফোন দিয়ে আমার সঙ্গে যোগযোগ করলে তাকে হাসপাতালে আসার কথা বলা হয়। পরে তার চালক ও বডিগার্ড পরিচয়ে দিয়ে দুজন আসার পর যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়। তারা জানিয়েছেন আজিমপুরে সিরাজুলের মরদেহ দাফন করা হবে।
[৮] এদিকে সাহেদকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
[৯] তিনি বলেন, সাহেদকে ধরতে র্যাবের পেশাদারিত্ব এবং দায়িত্ববোধের চাপ আছে। সেই চাপ থেকেই আমরা তাকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছি। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে র্যাবের বেশ কয়েকটি টিম কাজ করছে। এছাড়া সীমান্ত এলাকায় র্যাবের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সাহেদের বাবার জানাজা ও দাফন ঘিরে র্যাবের গোয়েন্দারা কাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :