নিউজ ডেস্ক : একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) চরম অব্যবস্থাপনা ও রোগীদের প্রতি দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে কক্সবাজারের উখিয়া সারি আইসোলেশন এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টারে করোনায় চিকিৎসাধীন স্থানীয় একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী নিজ বেডেই ধর্মঘট শুরু করে দিয়েছেন। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ এবং স্যালাইন ওই আইসোলেশন সেন্টারে রোগিদের সরবরাহেরও গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী চিকিৎসাধীন এই আইনজীবী। কালেরকন্ঠ
রবিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টা থেকে এ ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ শুরু করেন কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী। করোনাভাইরাস 'পজেটিভ' হয়ে গত ২৮ জুন থেকে সেখানে ভর্তি হয়ে এখনো গুরুতর অসুস্থ থাকা সত্বেও অবস্থান ধর্মঘটের কারণে তিনি কোনো খাওয়াদাওয়া ও ওষুধ সেবন করেননি।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষে এনজিও’র তদারকিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাজাহান আলী রবিবার রাতে কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন, রিলিফ নামের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রশাসন জরুরিভাবে তদন্ত করে ওই এনজিওর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে। সেই সাথে করোনাক্রান্ত আইনজীবী আবু ছিদ্দিক ওসমানীকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হবে।
জানা গেছে, কোটি টাকা ব্যয় করে উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা শিবির সংলগ্ন টিএন্ডটি মাঠের দক্ষিণ প্রান্তে জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউএনএইচসিআর-উখিয়া সারি আইসোলেশন এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টারটি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অনুরোধে দ্রুততম সময়ে নির্মাণ করে। গত ২১ মে হাসপাতালটি জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন উদ্বোধন করেন। ২৭ মে থেকে সেখানে কোভিড-১৯ রোগীদের ভর্তি দেওয়া শুরু হয়। ‘রিলিফ’ নামের এক এনজিও উখিয়া আইসোলেশন এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টারটি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে আসছে।
ট্রিটমেন্ট সেন্টারটিতে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত আইনজীবী আবু ছিদ্দিক ওসমানী কালের কণ্ঠকে জানান-‘এনজিওটি চীনের তৈরী মেয়াদোত্তীর্ণ কিছু ওষুধের নাম, কম্পানি, তারিখ, মেয়াদ কেটে ফেলে জোর করে রোগীদের অন্ধকারে রেখে ওষুধগুলো খাওয়াচ্ছে। যেমন- চীনে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের তৈরি খাওয়ার স্যালাইন কৌশলে রোগীদের খাওয়ানো হচ্ছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, এনজিওটি এভাবে চীনের তৈরী মেয়াদোত্তীর্ণ, নিম্নমানের ওষুধ বাণিজ্যিকভাবে ক্রয় করে উখিয়া আইসোলেশন এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টারে ভর্তি থাকা রোগীদের খাওয়াচ্ছেন। কোনো রোগী ওষুধের নাম, কোম্পানির নাম, ওষুধের মেয়াদের বিষয় জানতে চাইলে সেসব রোগীদের ওপর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে দুর্নীতিবাজ এনজিওটির লোকজন।
আইনজীবী আবু সিদ্দিক ওসমানী জানান, তাঁকে নিয়মিত প্রদত্ত সেফিরক্সিম ১ গ্রাম ইনজেকশনটি ৪ জুন সকাল সাড়ে ৮ টায় চিকিৎসক, নার্সেরা অবহেলা করে দেননি। ফলে তাঁর রোগ বেড়ে যেতে থাকে। শনিবার সকালের ইনজেকশনটিও দিতে কেন বিকেল পর্যন্ত সময় গড়াল তা জানতে চাইলে এনজিওর কর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা রবিবার তাঁর ওপর মারমুখী হয়ে ওঠে। এসবের প্রতিবাদে তিনি নিজ উ#২ নম্বর বেডে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে দেন।
আপনার মতামত লিখুন :