শিরোনাম
◈ ওসমান হাদি বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেভাবে জরুরি হয়ে উঠেছিলেন ◈ সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ ও মেয়রের বাড়িতে আগুন ◈ হাদির হত্যাকাণ্ড রাজনীতিতে ভয়াবহ মোড়ের ইঙ্গিত: আলজাজিরার বিশ্লেষণ ◈ পা‌কিস্তা‌নের কা‌ছে পরা‌জিত হ‌য়ে যুব এ‌শিয়া কা‌পের সেমিফাইনাল থে‌কে বাংলাদেশের বিদায় ◈ বাংলাদেশ ইস্যুতে সংলাপ বজায় রাখার সুপারিশ, হাসিনার রাজনৈতিক ভূমিকা নয়: ভারত ◈ শহীদ ওসমান হাদির জানাজাকে ঘিরে ৭ নির্দেশনা ডিএমপির ◈ গভীর রাতে নদী ও ইটভাটায় চলে প্রশিক্ষণ, চার বিভাগে সক্রিয় শুটার নেটওয়ার্ক ◈ হাদি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ অব্যাহত, ঢাকায় বিজিবি মোতায়েন, বিদেশি নাগরিকদের বিশেষ সতর্কতা ◈ সুদানে ড্রোন হামলায় শহীদ ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর মরদেহ ঢাকায় পৌঁছাবে শনিবার ◈ শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যায় জাতিসংঘের উদ্বেগ, দ্রুত তদন্ত ও ন্যায়বিচারের আহ্বান

প্রকাশিত : ২১ জুন, ২০২০, ১২:১৮ দুপুর
আপডেট : ২১ জুন, ২০২০, ১২:১৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] মিডিয়ার সামনে অশনিসংকেত

ডেস্ক রিপোর্ট :  [২] করোনা পরিস্থিতিতে দেশের মিডিয়া সংস্থা খাত প্রায় বন্ধের উপক্রম। করোনাভাইরাসের কারণে দেশ যে সংকটকাল অতিক্রম করছে, তা এই খাতকে একেবারে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে। এমনিতেই তেমন একটা নেই সরকারি বিজ্ঞাপন, প্রায় বন্ধের উপক্রম বেসরকারি ব্যবসা-বাণিজ্যের বিজ্ঞাপনও।বারবার অনুরোধ করেও পাওয়া যাচ্ছে না সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর জমে থাকা বকেয়া বিলগুলো।বাংলাদেশ প্রতিদিন

অস্তিত্বের এ লড়াইয়ের মধ্যেই সমানতালে খড়্গ চলছে গণমাধ্যমের ওপর। কারণে অকারণে মামলা, আটক, হয়রানি করা হচ্ছে সাংবাদিকদের। বিরোধী দলবিহীন দেশে যৌক্তিক কথা বললেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেওয়া হচ্ছে। কথায় কথায় আটক করা হচ্ছে সাংবাদিকদের। চলছে নানান উপায়ে হয়রানি। সব মিলিয়ে মিডিয়ার জন্য পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে পড়ছে। অসহায় হয়ে পড়েছেন সাংবাদিকরা। টিকতে না পেরে ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়েছে বেশকিছু গণমাধ্যম। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক, সম্পাদক, সাংবাদিক ইউনিয়ন ও সাংবাদিকতার শিক্ষকসমাজ। তারা সবাই এ অবস্থার দ্রুত উত্তরণ চান।

[৩]  প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বিশ্বের সঙ্গে আমাদের দেশেও করোনার আঘাত পড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছেই। স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ গণমাধ্যমকর্মীরাও কাজ করছেন। জীবন ও জীবিকা সচল রাখার জন্য সরকার যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, সেসব দেশবাসীকে জানাতে ফ্রন্টলাইনের অন্যতম কাজ করছে মিডিয়া। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার তিন শতাধিক সংবাদকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারাও গেছেন অনেকে। সংবাদকর্মীরা ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছেন।

[৪] ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার কাম্য নয়। সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে। আবার সাংবাদিকতার স্বাধীনতা মানেই স্বেচ্ছাচারিতা নয়, যা খুশি লিখে দেব তা নয়। দুই দিকেই একটা সীমা থাকবে। সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপের যেমন বিরোধিতা করি, সেটা যার পক্ষ থেকেই আসুক না কেন। আবার সাংবাদিকতার বস্তুনিষ্ঠতা ত্যাগ করে দায়িত্বজ্ঞানহীন সংবাদ প্রকাশ, ব্যক্তিকে আঘাত করে, সমাজে শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে এমনটাও করা উচিত নয়।

[৫] ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে করোনার কারণে অন্যান্য খাতের মতো মিডিয়ায়ও বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। সাধারণত প্রিন্ট মিডিয়া চলে বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশনে। এখন সার্কুলেশন প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। বিজ্ঞাপনও আসছে না। ইলেকট্রনিক মিডিয়া পুরোপুরি বিজ্ঞাপননির্ভর। কার্যত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে মিডিয়ার রসদ জোগাত। আমার মনে হয়, সরকারের সব সেক্টরে মিডিয়ার বিজ্ঞাপন বাবদ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এর অর্ধেকও যদি সরকার পরিশোধ করত তাহলে অন্তত দু-তিন বছর মিডিয়ার জন্য কোনো সমস্যা হতো না। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের আগে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের ডেকে মিডিয়ার বকেয়া বিজ্ঞাপন পরিশোধের নির্দেশনা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। শুধু তথ্য মন্ত্রণালয় ছাড়া কেউই সাড়া দেয়নি। আমাদের সাংবাদিক সংগঠন ডিইউজে-বিএফইউজের পক্ষ থেকেও বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। আমি মনে করি, অবিলম্বে এ বকেয়া বিল পরিশোধ করা উচিত। অন্য খাতে সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে। অন্তত বিজ্ঞাপনের বিলটা দিলেও প্রণোদনা হিসেবেই আমরা ধরে নিতাম।

[৬] তিনি বলেন, তামাকজাত দ্রব্য ও মেডিসিনের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমি মনে করি, এটা মিডিয়ার জন্য সাময়িকভাবে হলেও চালু করা উচিত। পরে পরিস্থিতি ভালো হলে বিষয়টি দেখা যাবে। তা ছাড়া প্রতিটি ওষুধের গুণাগুণ নিয়ে বিজ্ঞাপন দিলে সমস্যার কিছু নেই। স্বাস্থ্য সরঞ্জামের বিজ্ঞাপনও আসছে না। এগুলোর বিজ্ঞাপন দেওয়া জরুরি। এখন জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনে টোব্যাকোর বিজ্ঞাপনও দেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, আমরা শুরু থেকেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরোধিতা করে আসছিলাম, প্রতিবাদ করেছিলাম। যখন আইনে পরিণত হয় তখনো এর বিরোধিতা করেছি। আমাদের বলা হয়েছিল, এ আইন সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগ হবে না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাংবাদিকরাই গ্রেফতার-হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সাংবাদিকতা কোনো ধর্মগ্রন্থ নয়। ভুলত্রুটি হতেই পারে। এখানে পরদিন সংশোধনের সুযোগও রয়েছে। তাই পেশাদার সাংবাদিক ও লেখকদের ক্ষেত্রে এ আইনের অপপ্রয়োগ গ্রহণযোগ্য নয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়