আশুগঞ্জ প্রতিনিধি: [২] দেশের পূর্বাঞ্চলীয় বৃহত্তর ধান ও চালের মোকাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে গত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণের ফলে উপজেলার প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক চাতাল কলে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সিদ্ধ ধান। আর এসব চাতালকলে সিদ্ধ ও ভিজিয়ে রাখা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মালিকরা। পরবর্তীতে রোদে শুকিয়ে এসব ধান দিয়ে চাল উৎপাদন করা হলে চালের মান যেমন নষ্ট হবে তেমনি দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে বিক্রি করতে হবে অর্ধেক দামে।
[৩] সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, আশুগঞ্জ উপজেলায় ছোট বড় ৪ শতাধিক চাতালকল রয়েছে। দেশের এই চাল উৎপাদন কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, মৌলভীবাজার ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে প্রতিদিন ৩/৪ হাজার টন চাল সরবরাহ করা হয়। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ওইসব মোকামে চাল সরবরাহ সম্ভব হবে না। এদিকে এসব চাতালে কর্মরত আছে প্রায় ২৮ হাজার শ্রমিক। বর্তমানে টানা বৃষ্টির কারণে ধান শুকাতে না পারায় মজুরি পাচ্ছেন না তারা। ধার-দেনা করে কোনো রকমে দিনাতিপাত করছেন তারা।
[৪] আরো জানা যায়, টানা বৃষ্টির কারণে পানিতে ভেজানো ধানে চারা গজিয়ে গেছে। এছাড়া খোলা মাঠে টুপরি দিয়ে রাখা ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাতাল মালিকরা। এতে করে অধিকাংশ চাতাল কলের হাজার হাজার মণ সিদ্ধ ধান নষ্ট হয়ে ব্যবসায়ী ও চাতাল মালিকদের কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। ফলে চালের বাজারে এর বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে।
[৫] আশুগঞ্জ চাতালকলে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, বৃষ্টির কারণে ধান শুকাতে না পারায় গত ৩ দিন ধরে তারা বেকার বসে রয়েছেন। এতে করে তারা মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
[৬] উপজেলা চাতালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল শিকদার বলেন, আশুগঞ্জ মোকামে ধানের আমদানি এমনিতেই সবচেয়ে নীচে নেমে এসেছে। বর্তমানে উপজেলার শতাধিক চাতালকলে প্রায় অর্ধলক্ষ টন সিদ্ধ করে রাখা। বাকি চাতালগুলোতে অর্ধলক্ষ টন ধান রয়েছে হাউজে ভেজানো। টানা বৃষ্টির কারণে এসব ধান শুকানো যাচ্ছে না। এর ফলে চাতাল মালিকদের কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বৃহত্তর হাওর অঞ্চল কিশোরগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আশুগঞ্জ মোকামে প্রতিদিনই আসছে হাজার হাজার মণ ধান। আর এসব ধান স্থানীয় রাইস মিলে প্রক্রিয়াজাত করে চালে পরিণত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও নৌপথে সরবরাহ করে এসব এলাকার চালের চাহিদা পূরণ করা হয়। সম্পাদনা: সারোয়ার জাহান