ইসমাঈল হুসাইন ইমু : [২] র্যাব ৮-এর ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক দেবাশীষ কর্মকার বলেন, রোববার সকাল ৬ টার দিকে যশোরের চৌগাছা উপজেলার একটি ভাড়া বাসা থেকে র্যাবের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
[৩] গত ২১ এপ্রিল ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে দুই পক্ষের সংঘাতের মধ্যে একজন নিহতের ঘটনায় ওই মামলা হয়। ঘটনার পরদিন স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান মাতুব্বর (৫৪) বাদী হয়ে হত্যা, ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। আসলাম ফকিরসহ ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে ওই মামলায় আসামি করা হয়।
[৪] অভিযোগে বলা হয়, ২১ এপ্রিল রাতে লক্ষ্মীপুর গ্রামের লতিফ মাতুব্বরের ঘরের টিনের চালের পানি শাজাহানের ভাতিজা রফিক মাতুব্বরের বাড়ির উঠানে পড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর জেরে আসলাম ফকির ও উসমান ফকিরের হুকুমে একটি দল দেশিয় অস্ত্র নিয়ে প্রথমে রফিক মাতুব্বরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে তার বাড়ি ভাংচুর করে। এসময় শহীদ মাতুব্বর তাদের বাঁধা দিতে গেলে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান শহীদ, যিনি শাজাহান মাতুব্বরের আত্মীয়।
[৫] আসলাম ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের মানিকদহ গ্রামের বাসিন্দা হলেও লেখাপড়া ও রাজনীতি করেন পাশের সদরপুর উপজেলায়। তিনি ওই উপজেলা যুবলীগের সভাপতিও ছিলেন।
[৬] মানিকদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহেদ আলীকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ২০০৩ সালে মৃত্যুদণ্ডের রায় হলেও পরে তিনি মানসিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করে প্রাণভিক্ষা পান এবং পরে সাধারণ ক্ষমার সুযোগে ২০১৭ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পান। আসলাম ২০১৩ সালের ১৯ মে দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করলে তাও খারিজ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগের মধ্যেই আসলামের প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে দ্বিতীয় দফা আবেদন করা হয়। সেখানে তার ‘মানসিক অসুস্থতার’ কথা বলা হয়।
[৭] দ্বিতীয় দফায় আসলাম ফকিরের প্রাণভিক্ষার আবেদন গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি। ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দণ্ড হ্রাস করে আসলামকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
[৮] এর এক মাসের মাথায় বিশেষ দিবসে বন্দিদের সাধারণ ক্ষমার সুযোগে আসলাম ফকিরের মুক্তির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনানুষ্ঠানিক চিঠি (ডিও লেটার) দেন ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সাংসদ নিলুফার জাফরউল্যাহ। তবে সে সময় আসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। ১৩ বছর ২দিন কারাভোগের পর ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট গাজীপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে মুক্তি পান আসলাম।