আসাদুজ্জামান বাবুল/মাহাবুব সুলতান,গোপালগঞ্জ: [২] চিরচেনা গ্রাম আজ অচেনা। দীর্ঘদিনের পরিচিত মানুষ, পাড়া-পড়শি, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুদের কাছে হঠাৎ অপরিচিত। সব বন্ধন ছিন্ন করে এক আতঙ্কিত মানুষের এলাকা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে গোপালগঞ্জ। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে ঈদে ঢাকা ফেরৎ মানুষদের আতঙ্ক মনে করছেন গ্রামবাসী।
[৩] সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের সফল চেয়ারম্যান চৌধুরী শফিকুর রহমান টুটুল ও তার গ্রামবাসী বলছেন, করোনায় আক্রান্তদের বড়ো একটি অংশ ঢাকা- নারায়নগঞ্জ- মানিকগঞ্জ- গাজীপুর এবং এ জেলার আশপাশের বাসিন্দা। সেখান থেকে কারো গ্রামে আসা মানেই আতঙ্ক। কেননা এখনোও পর্যন্ত গোপালগঞ্জ জেলার বেশির ভাগ গ্রাম করোনা মুক্ত। তাছাড়া ঢাকা থেকে কেউ ঈদ করতে গ্রামে আসলেও হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেন না। এতে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
[৪] রাজধানী ঢাকা এবং তার আশপাশ এলাকায় যখন করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হচ্ছে, তখন ঐসব এলাকায় কর্মরত লোকজন করোনার ভয়ে পালিয়ে মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক, মিনি ট্রাক বা হেঁটেও আসছে নিজ গ্রামে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামগঞ্জে। এমন চিত্র এখন দেশের প্রতিটি এলাকায়। ঢাকা ফেরতরা অযাচিত ঘোরাঘুরিও করে বেড়াচ্ছে।
[৫] টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে সন্তানসহ আসা দম্পত্তিকে এলাকাবাসী হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার অনুরোধ করলেও কে শোনে কার কথা। তাদের কথা উপেক্ষা করে প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা।
[৬] ঢাকা ফেরতদের আতঙ্কিত মনে করার কারণ হিসেবে গ্রামবাসী বলছেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন অফিস, মিল-কারখানায় চাকরিতে কর্মরতদের অনেকেই চলতি সপ্তাহে গ্রামের বাড়িতে এসেছেন। তাদের কেউ কেউ জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত। তাদের কারণে বিভিন্ন উপজেলা করোনা সংক্রমণের তালিকাভুক্ত হয়েছে। ঢাকা ফেরতরা গ্রামে ফিরেই মেজাজে চলাফেরা করছেন। বিশেষ করে গ্রামের চায়ের দোকানগুলো খোলা থাকায় আসর জমে উঠে রীতিমতো। জেলা প্রশাসন/ পুলিশ প্রশাসন থেকে তাদেরকে হোমকোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দিলেও মানছেন তারা। গত এক সপ্তাহে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া- কোটালীপাড়া- মুকসুদপুর- কাশিয়ানী ও জেলা সদরে হাজারেরও বেশী মানুষ ঢাকা- নারায়নগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে গ্রামে এসেছেন। এরমধ্যে সবচেয়ে কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ায় ঢাকা ফেরৎ মানুষ বেশী। তারা কারো কথা শোনেননা। মান্য করেননা গ্রামের কোন মানুষকে।
[৭] জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেছেন, আমরা মানুষ বুঝিয়ে ঘরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্ত কোনভাবেই তাদেরকে ঘরমুখো করা সম্ভব হচ্ছেনা। সম্পাদনা : জেরিন আহমেদ