আইয়ুব হোসেন : সমাজ, অর্থনীতি এবং সচেতন সকল মহল এখন ভয়ানকভাবে চিন্তিত। কভিড-১৯ নিয়ে প্রায় প্রত্যহই আমাদের দুঃশ্চিন্তার ব্যাপকতা বাড়িয়ে তুলছে। টেলিভিশন-বিমুখ মানুষ মধ্যাহ্ন-উত্তর সময়ে যতো কাজকর্মই থাকুক, পর্দার সামনে গিয়ে পাঁচ মিনিটের জন্য বসে যান। উদ্দেশ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রান্ত সর্বশেষ খবর জেনে নেয়া। নতুন আক্রান্ত আর মৃত্যু- এ দুটো তথ্য জেনে টিভি দর্শক করোনাভাইরাসের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে আঁচ করে নেন।
বলাবাহুল্য, সংক্রমণ ক্রমান্বয়ে ঊর্ধমুখী তা জেনে সকলেরই বিচলিত বোধ স্ফীত হতে থাকে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশ্বের অনেক বাঘা বাঘা অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী ইতোমধ্যে জানান দিয়েছেন, করোনাভাইরাসে যে মৃত্যুহার তার চেয়ে বেশি হবে অনাহারী বুভুক্ষ মানুষের সংখ্যা।
এই তথ্য আমাদের আতঙ্কের মাত্রা কয়েক গুন বাড়িয়েছে বৈকি। গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প-করখানা ও কৃষি খাতের শ্রমিক বেকার হয়েছে সঙ্গনিরোধ ও লকডাউনের কারণে। সাধারণ মানুষের উপার্জনের পথ রুদ্ধ হয়েই চলেছে। খাদ্য সংকট তীব্র হচ্ছে। অস্বচ্ছ ত্রাণ বিতরণ খুব আশা সঞ্চার করতে না। এর ফল যা হবার হচ্ছে তাই।
অর্থাৎ, ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সব দেখেশুনে মনে হচ্ছে আমাদের সামনে বুঝি এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। পাশাপাশি, এখন থেকে প্রায় অর্ধ দশক আগের ভয়াল চিত্র ও উঁকি দেয় মনে। ১৯৭৪ সাল। দেশের উত্তরাঞ্চলের রংপুর (বৃহত্তর) জেলার প্রায় সবকটি মহকুমা (বর্তমান জেলা) ভয়ানক দুর্ভিক্ষ-পীড়িত হয়ে অনাহারে দশ লক্ষ হতভাগ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো।