অপূর্ব চৌধুরী : [২] ওয়ার্ল্ড হাইপারটেশন লীগের সদস্য হিসেবে হাইপারটেশন কমিটি অব ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ২০০৬ সাল থেকে এই দিবসটি পালন করে আসছে।এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়: আপনার রক্তচাপ মাপুন,নিয়ন্ত্রণে রাখুন,সুস্থ থাকুন।
[৩] প্রতিবছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হলেও কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের জন্য অনাড়ম্বরভাবেই এবার পালিত হচ্ছে দিবসটি।
[৪] উচ্চ রক্তচাপ দিন দিন মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের সংখ্যাও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে অনেকেই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে সচেতন নয়।উচ্চ রক্তচাপ একটি স্থায়ী রোগ হিসেবে বিবেচিত। উচ্চ রক্তচাপের জন্য প্রতিরোধ ও চিকিৎসা দুইটাই জরুরি। এর ব্যাতিক্রম হলে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা ও হঠাৎ মৃত্যু ঝুঁকিও থাকে।
[৫] জানা জরুরি যে,উচ্চ রক্তচাপ ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের কোনও প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায় না এবং এটাই এর সবচেয়ে ভীতিকর দিক। রোগীর শরীরে উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক লক্ষণ না থাকা স্বত্বেও নীরবে এটি শরীরের বিভিন্ন অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ জন্যই উচ্চরক্তচাপ কে ‘নীরব ঘাতক’ বলা হয়ে থাকে।
[৬] বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিন দিন উচ্চ রক্তচাপ মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। উচ্চমাত্রার লবণের ব্যবহারের কারণে প্রায় শতকরা ৬০ ভাগ রোগী এই রোগে আক্রান্ত হয়। এ কারণে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ, হার্ট অ্যাটাক, কিডনি বিকল ও চোখের রেটিনা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
[৭] এক গবেষণায় দেখা যায়, উচ্চ রক্তচাপ মানুষের স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যার অন্যতম কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রায় ১৫০ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। এই রোগে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। দিন দিন উন্নয়নশীল বিশ্বে এর ব্যাপকতা বাড়ছে। বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রতি বছর শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ হারে এই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। দেশে ১০ থেকে ২০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে।
[৮] চিকিৎসকদের মতে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। তবে উচ্চ রক্তচাপকে বংশগত বিষয় হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে অত্যধিক মানসিক চাপ, শারীরিক পরিশ্রম না করা ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন বিশেষ করে ফাস্টফুডের প্রতি আসক্ত উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী।
উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে করণীয় : ১. অতিরিক্ত ও পাতে আলগা লবণ না খাওয়া,২. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা,৩. শাকসবজি ও ফলমুল বেশি খাওয়া,৪. নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা,৫. নিয়মিত রক্তচাপ মাপা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করা,৬. রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়মিত মাপা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করা,৭, তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকা,৮. চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যাতীত ওষুধ পরিবর্তন বা সেবন বন্ধ না করা।
সর্বোপরি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষনিক সতর্ক থাকা বাঞ্চনীয়।নিয়মিত রক্তচাপ মাপানো হোক সবার অঙ্গীকার।