মুসবা তিন্নি : [২] বাংলাদেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তবে এখনো ব্যতিক্রম রাজশাহী মহানগরী। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সময়মত নানামুখি পদক্ষেপের কারণে এখন পর্যন্ত মহানগর এলাকা রয়েছে করোনামুক্ত।
[৩] রাসিক সূত্র জানিয়েছে, করোনাভাইরাস ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে মার্চের প্রথমেই মাঠে নেমে পড়েন সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। এখনো দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। মেয়রের উদ্যোগে দেশে প্রথম বাস চলাচল বন্ধ হয় রাজশাহীতে। সারাদেশে বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণার এক সপ্তাহ আগে ১৯ মার্চ রাজশাহী থেকে সব রুটে বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে করোনার হটস্পট ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজশাহীতে লোকজন কিছুটা কম এসেছে। এর পরও যারা বিভিন্নভাবে রাজশাহী এসেছে তাদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হয়েছে।
[৪] এদিকে, মার্চের প্রথম থেকেই করোনায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন সিটি মেয়র। সচেতনতা সৃষ্টিতে নগরে দেড় লাখ লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার, ডিস লাইন ও ডিজিটাল ডিসপ্লেবোর্ডে তথ্যচিত্র ও বক্তব্য প্রচার করা হয়। এছাড়া রাসিকের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এবং সকল মসজিদে ইমামদের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা হয়েছে।
[৫] করোনা মোকাবেলায় কেন্দ্রীয়সহ ৩০টি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করে করণীয় নির্ধারণ, বিদেশ ফেরত ও দেশের ঝুঁকিপূর্ণ জেলা থেকে আগত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে চলছে তদারকি। ২০ হাজার মাক্স ও এক হাজার লিটার স্যানিটাইজার বিতরণ, নগরীর ২৭টি পয়েন্টে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ও বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৩০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
[৬] এছাড়াও ৫টি ওয়াটার ট্যাংকার দিয়ে মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও বাজার এলাকা ছাড়াও ৩০টি ওয়ার্ডে হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে জীবাণুনাশক ছিটানো কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম জোরদারের পাশপাাশি স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নকর্মীদের জন্য নিরাপদ পোশাক, মাক্স, হ্যান্ড গ্লাভর্স ও স্যানিটাইজার দেয়া হয়।
[৭] সূত্রমতে, করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবায়ও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটকে শুধুমাত্র করোনা রোগী চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত, করোনা রোগী শনাক্তে স্থাপন করা হয়েছে ল্যাব। সিটি হাসপাতালকে করোনা কর্ণার হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। চিকিৎসকদের সুরক্ষায় পিপিই বিতরণ করা হয়েছে। করোনো ভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে বহনে প্রস্তুত রয়েছে আলাদা এ্যাম্বুলেন্স। করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিকে দাফনে কবরস্থান নির্ধারণ ও সহায়ক টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
[৮] রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সকলের সহযোগিতা ও সমন্বিত প্রচেষ্টায় রাজশাহী মহানগরীকে এখন পর্যন্ত আমরা নিরাপদ রাখতে পেরেছি। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সবই নেয়া হয়েছে। করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের পাশে সব সময় আছি; থাকবো।
[৯] মেয়র লিটন বলেন, মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি রাজশাহীর সকল বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে পরিকল্পনাগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়। বিশেষ করে আগে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ার কারণে রাজশাহীতে লোকজন কম এসেছে। ফলে অন্যান্য বিভাগের চেয়ে রাজশাহীতে করোনা সংক্রমিত কম হয়েছে বলে আমি মনে করি।