শিরোনাম

প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ০৬:০০ সকাল
আপডেট : ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সারাবিশ্বকে এক নেতৃত্বে চলতে হবে

ডা. ইকবাল আনোয়ার : করোনা একতাকে ছাড়া আর কিছু ভয় পায় না। যতোদিন না ভ্যাকসিন আসছে। ভ্যাকসিন এলেও এতে ধনতন্ত্র প্রকট হবে। ব্যবসা হবে। এখন যেমন মাস্কে হচ্ছে। পিপিইতে হচ্ছে। আমি ফেস সিল্ড আনিয়েছি। ভেবেছিলাম সুরক্ষা হবে। দেখি কী। এ যে শক্ত পলিথিনে ইলাস্টিক লাগানো মাত্র। নির্মাণ খরচের সাত থেকে দশগুণ দাম নিয়েছে। কিনে দেখি নিজেই বানাতে পারতাম। যাক ব্যবসার শিকার হলাম। মূল কথায় আসি। ইতোমধ্যেই দেশগুলো দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাচ্ছে। কেউ লকডাউনের পক্ষে কেউ তা অর্থনীতির ক্ষতির কথা বলে তুলে নেওয়ার পক্ষে। যেমন আমেরিকা ব্রাজিল। জনমানবের অর্থনীতির ক্ষতির কথা সৎভাবে চিন্তায় দোষ নেই। কিন্তু যদি মনের ভেতরে রাখা থাকে হিংসা প্রতিহিংসা যুদ্ধ শক্তি নিজের নিবার্চনের কথা ভাবা, তবে তা সৎ উদ্দেশ্যে নয়। করোনা মোকাবেলায় ‘যা হবে হোক ছেড়ে দাও’ এটা প্রাথমিক যুক্তি ছিলো, কিন্তু এর অমানবিকতা ও একত্রে ম্যাসাকার, যা হবে করুণ ও মর্মান্তিক এবং তৎসহ নানা অবিচার নৃশংসতায় সয়লাব এক জাহান্নামতুল্য অবস্থা, একত্রে প্রচ- আঘাত হানার ভার বহনে অসামর্থ্যতা, এসব হিসাব কষে লকডাউন, কারফিউ, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নীতি জয়ী হয়েছে। এখন আবার ‘ছেড়ে দাও’ থিউরি নিয়ে আসা হচ্ছে। আমেরিকার রোগতত্ত্ববিদ বলছেন, লকডাউন করেনাকে দীর্ঘায়িত করছে। এটা ঠিক আবার ঠিক নয়। ঠিক হলো এভাবে যে, প্রচুর মিশতে দিলে হার্ড ইমমিউনিটি তৈরি হবে। এটাকে ‘নব্য উদারনৈতিকতা’ আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। তবে এর অন্তরালে আছে ঠিক উল্টা, অমানবিকতাবাদ। হার্ড ইমমিউনিটি হবে বটে, কিন্তু এতে একটা হঠাৎ করে পিক আসবে। যাকে বলে ংঁৎুব। এ সার্জকালে এতো বেশি সংখ্যক মানুষ একত্রে আক্রান্ত হবে যে, তা মিট করা ওইসব কোনো দেশের পক্ষেই সম্ভব নয় ( লকডাউন করেও আক্রান্তকালেই অনেক দেশে ভেন্টিলেটর, আইসোলেশন ও চিকিৎসা কর্মীর সংকট হচ্ছে)। এতে প্রচুর ডাক্তার সমেত স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করবে। যে দেশগুলো লকডাউন ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে যেমন আমেরিকা-ব্রাজিল। তারা কী মনে করে তা করতে চান? বিশেষত আমেরিকা? তারা যদি বলতেন, ‘আমরা সার্জকালীন সময়ের জন্য, এই যে দেখো এতো এতো হাসপাতাল সেবা ব্যবস্থা তৈরি রাখছি’, তবে সেখানে একটা মানবিক দিক দেখা যেতো। তাতো দেখা যাচ্ছে না।
তাই অভিযোগ করা যায় যে, ‘যারা যাবে যাক চলে’ চিকিৎসা না দিয়ে সেবা না দিয়ে মেরে ফেলো তাকে, যতো জলদি পারো, সে তো যাবেই, কেন তবে তাকে কষ্ট দেওয়া। তারপর পুঁতে দাও, খনিজ সম্পদ সৃষ্টি হবে। আর আমরা যারা বেঁচে যাবো, এলিট, তারা তারপর সুখে থাকবো, মৃতদের দ্বারা মাটি যবে উর্বর হবে, সেখানে ফুলের বাগান করবো। এ হলো ক্রুড চিন্তা। সব সুরক্ষা আমরা পরিধান করে থাকবো, আমাদের জন্য উন্নত হাসপাতাল বানাবো, এটাই হলো ক্রুড চিন্তা। এ কথা অপরদিকে ঠিক যে, দীর্ঘদিন লকডাউনে মানুষ অতিষ্ঠ, গরিব না খেয়ে আছে, অর্থনীতির নি¤œগতি হচ্ছে। তবে পুরো পৃথিবীর একত্রে মিলে লকডাউন আজও পর্যন্ত উত্তম পন্থা যদি তা কোয়ালিটি মেনটেইন করে মানা হয়। পুরো দেশের ক্ষেত্রও একই কথা। যদি কেউ মানে কেউ মানে না যেমন আমার দেশে, কারণগুলোতে নাইবা গেলাম, তবে তাতে ফল খুবই কম। সে জন্য কোনো কোনো দেশ একদম কারফিউতে বিশ্বাসী। তারা কাজটাকে সুশৃঙ্খলভাবে করছে। গরিবের বের হতে হবে না। তার বাসায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে। এভাবে প্রথমেই দেরি না করে এ পদ্ধতিতে কোয়ালিটি টাইম ব্যয় করে কয়েক রাষ্ট্র সফল হয়েছে। এখন শেষ কথায় আসি। বলেছি আমি যে এটা করতে হবে সারা পৃথিবীকে এক নীতিতে। হয় ছেড়ে দাও নয় রাখো। কিন্তু যদি কোনো দেশ ছেড়ে দেয় আর কোনো দেশ রাখে তবে এ করোনা বিদায় না নিয়ে আরও দীর্ঘতরো হবে। এটাই হবে চূড়ান্ত বাজে কাজ, মানুষের জীবন নিয়ে। এখন যেদিকে যাচ্ছে অবস্থা, তাতে তাই-ই মনে হয় আমার। ধরি একটা দেশ যেমন ভিয়েতনাম এটাতে জয়ী হলো, কিন্তু যখন আবার বিমান চলাচল চালু হবে, তখনতো আবার তাকে সব বিমান যাত্রীর কোয়ারেন্টাইন করতে হবে। কতোকাল তা করা হবে, কতোজনের? তাই এখন এক নেত্রীত্বে চলার বিকল্প নেই। আর যার নেতৃত্বে চলতে হবে সেই নেতা হলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অনর্থক অভিযোগ তোলার আগেও নেতৃত্ব কী বলে তা মানতে হবে। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়