শিরোনাম
◈ কুয়াকাটা সৈকত থেকে আবারও অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার ◈ আদমদীঘিতে ভাঙা রেললাইনে কম্বল গুঁজে ১৮ ঘন্টা ট্রেন চলাচল ◈ জুলাই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে সব ধর্মের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ ব্যক্তি বিবেচনায় এলএনজি কেনা হচ্ছে না, পিটার হাসের কোম্পানি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা ◈ বিসিএস পরীক্ষা: কর্মসূচির সময় পরিবর্তন করল জামায়াত ◈ চশমা ছাড়াই স্পষ্ট দেখা সম্ভব, কার্যকর আই ড্রপ উদ্ভাবন ◈ যেসব বিষয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে নতুন বেতন কাঠামোতে  ◈ আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে ইসরা‌য়েল‌কে বহিষ্কারের দাবি জানা‌লেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী ◈ কূটনৈতিক সংকট ছাপিয়ে বাণিজ্যে ভারত–বাংলাদেশের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বাড়ছে ◈ বিএনপিকে চাপে রাখতে জামায়াতের যুগপৎ আন্দোলন

প্রকাশিত : ০৭ এপ্রিল, ২০২০, ০৫:৪৩ সকাল
আপডেট : ০৭ এপ্রিল, ২০২০, ০৫:৪৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] করোনা মোকাবেলায় ডাক্তারদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে: ডা. দেবি শেঠি

ডেস্ক রিপোর্ট:[২] করোনাভাইরাস মহামারী প্রাদুর্ভাবে কোভিড-১৯ রোগীর সুনামি ঠেকাতে বহু ডাক্তারকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে বলে মত দিয়েছেন ভারতের বিখ্যাত কার্ডিয়াক সার্জন ডা. দেবি প্রসাদ শেঠি। এমনকি মেডিকেলের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদেরও কোভিড-১৯ রোগীর ওয়ার্ডে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

[৩] মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিষয়ে ভারতের লাইভমিন্ট পত্রিকাকে সাক্ষাৎকার দেন ভারতের খ্যাতনামা বহু বিশেষায়িত চেইন হাসপাতাল ‘নারায়ণ হেলথ ফাউন্ডেশনে’র চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা ডা. দেবি প্রসাদ শেঠি।

[৪] তার চার দশকের ক্যারিয়ারে বহু গরিবকে বিনামূল্যে অপারেশন করেছেন।

[৫] দেবি শেঠি বলেন, মহামারী করোনা মোকাবেলায় ভারত জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থার মুখোমুখি। যদি আমরা প্রতিটি স্তর থেকে সব স্বাস্থ্য উপকরণ নিয়ে মাঠে নামতে না পারি তাহলে ইতালির মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছি। সম্প্রতি ভারতের লাইভমিন্ট পত্রিকাকে দেয়া তার সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হল।

[৬] করোনাভাইরাস এবং ইবোলা, সোয়াইন ফ্লু বা অন্য কোনো মহামারীর মধ্যে পার্থক্য কি, যা ভারত এর আগেও মুখোমুখি হয়েছে?

[৭] দেবি শেঠি : পার্থক্য হল এ ভাইরাস চরম সংক্রামক। এটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ছড়ায়। এটি বায়ুবাহিত না হলেও এর মারাত্মক দিক হল এটি হাঁচি-কাশির ফোঁটা থেকে ছড়ায়।

[৮] উদাহরণস্বরূপ, যদি আক্রান্ত কেউ মোবাইল ফোনের ওপর হাঁচি দেয় এবং আপনি সেই মোবাইলটি নিলেন, আপনি ভাইরাসের সংস্পর্শে চলে এলেন। এটি দাবানলের মতো ছড়ায়, যেমনটি পুরো বিশ্বে ঘটছে।

[৯] একজন থেকে তিনজনে, এভাবে গুণিতক হারে ছড়াচ্ছে। ইতালি এর সঠিক উদাহরণ। দেশটিতে তিন সপ্তাহের কম সময়ে ৩০০ থেকে দুই হাজার জনে সংক্রমিত হয়েছে। এ ভাইরাস মানুষ মারছে না, বরং বিশ্বের পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে হত্যা করছে।

মহামারী মোকাবেলায় ভারতের জনস্বাস্থ্য কতটুকু প্রস্তুত?

দেবি শেঠি : যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এ ভাইরাস মোকাবেলায় সমর্থ হচ্ছে না। ব্যাঙ্গালুরুতে আমাদের মাত্র এক হাজার ভেন্টিলেটর রয়েছে। যদি ভাইরাস ভয়াবহভাবে ছড়ায়, আমাদের ভেন্টিলেটর ঘাটতিতে পড়তে হবে।

আমরা যদি এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ না নেই তাহলে ডাক্তারদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কে বাড়ি ফিরে যাবে এবং মারা যাবে আর কাকে হাসপাতালেই মরতে হবে।

এটি কতটা ধ্বংসাত্মক! আর এমনটাই ঘটছে ইতালি এবং যুক্তরাষ্ট্রে। তাহলে আপনিই অনুধাবন করুন, ভারতের পরিস্থিতি কেমন।

সংক্রমণ হ্রাসে সরকার চেষ্টা করছে, কিন্তু আমাদের নাগরিকরা কি যথেষ্ট করছে?

দেবি শেঠি : ভারতের শিক্ষিত শ্রেণিই বেশি হতাশ করছে। আমাদের নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সামাজিক দূরত্ব দরকার। এটি বাধ্য করতে সরকার কারফিউ, ১৪৪ ধারা জারিসহ বহু কিছু করেছে। বাধ্যতামূলক লকডাউন ছাড়া সরকারের হাতে বিকল্প কিছু নেই। আমরা এসব উপেক্ষা করছি।

আমাদের ভারতে ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে এখনই স্বাস্থ্য সামগ্রী নিয়ে মাঠে নামতে হবে। আমাদের স্থানীয় কোম্পানির মাধ্যমে এখনই গণহারে ভেন্টিলেটর ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) উৎপাদন শুরু করা দরকার। ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ডিআরডিও) মতো সংস্থাকেও এ মিশনে এগিয়ে আসতে হবে।

ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী সংকটের ব্যাপারে কি বলবেন?

দেবি শেঠি : হ্যাঁ, ইতালির সবচেয়ে বড় সমস্যা হল দক্ষ জনশক্তি ও বেডের অভাব। তাহলে তারা কি করেছিল? দেশটির মেডিকেল কাউন্সিল কোর্স শেষ হওয়ার নয় মাস আগেই শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট প্রদান করতে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশনা দিয়েছিল। এই প্রক্রিয়ায় ইতালি তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি মুহূর্তে ১০ হাজার ডাক্তার পেয়েছিল। ভারতেও এখনই এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা দরকার।

ভারতে অধিক পরিমাণে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এগুলো কতটুকু সম্ভব?

দেবি শেঠি : ডাক্তাররাই আমাদের সম্পদ। আমাদের ৫০ হাজার ডাক্তার, বিশেষজ্ঞ ও মেডিকেল শিক্ষার্থী রয়েছে। আমাদের আরও প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী চীন এবং রাশিয়া থেকে মেডিসিনের ওপর স্মাতক করেছেন। পরীক্ষার বিড়ম্বনায় মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বন্দি করবেন না। তাদের যোগ্য হিসেবে সার্টিফিকেট দিন এবং এই জরুরি মুহূর্তে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত করুন।

আমরা জানি, কোনো ডাক্তার কোভিড ইউনিটে দৈনিক ৬ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারেন না। এজন্য আমাদের ডাক্তারদের বিশাল বহর প্রয়োজন। ভারতের রাজ্যগুলোতে বহু মেডিকেল কলেজ ও টিচিং হাসপাতাল রয়েছে। সবগুলো খুলে দিন এবং এসব হাজার হাজার শিক্ষানবিস ডাক্তারকে করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত করুন।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও অনলাইন পরামর্শ এবং ই-প্রেসক্রিপশনের বৈধতা দিতে হবে। সংকটকালীন এ সময়ে সব রোগীকে আমরা হাসপাতালে আসতে বলতে পারব না।

সব ধরনের আইনি মারপ্যাঁচ শিথিলতায় মেডিকেল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়াকে কঠিন এ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়