মুসবা তিন্নি : [২] মৃত্যুর ৭৫ বছর পরেও লাখ লাখ মানুষের মনে বেঁচে আছে ১৫ বছর এর এক কিশোরী। তার সফলতা সে দেখার সুযোগ পাননি। ব্যক্তিগত শখ আর ডায়েরি লিখার অভ্যাসই তাকে আজ অমর করে দিয়েছেন। যার নাম "অ্যান ফ্রাঙ্ক" এর কথা। যার দিনলিপি আজ বিশ্বব্যাপি The Diary of a Young Girl নামে পরিচিত। এমনকি বাংলাদেশের অনেক স্কুল ছাত্রদের কাছেও অ্যান খুব জনপ্রিয় একটি নাম।
[৩] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের উপর চালানো হত্যাকান্ডটি হলোকস্ট নামে পরিচিত। এই গন হত্যায় নির্বিচারে খুন করা হয় ষাট লক্ষের ও বেশি ইহুদিকে। এই হলোকস্টের স্বীকার হয় অ্যান ফ্রাঙ্ক ও তার পরিবার। অ্যান এর পুরো নাম আনেলিস মারি অ্যান ফ্রাঙ্ক। জন্ম ১২ জুন ১৯২৯ সালে জার্মানির ফ্র্যাংকফুর্ট শহরে হলেও জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটায় নেদারল্যান্ডস এর আর্মস্টারডামে। নাৎসি জার্মানির সেমিটিক বিদ্বেষী নীতির কারনে তিনি১৯৪১ সালে তার র্জামান নাগরিকত্ব হারান। তাঁর বাবা অটো ফ্রাংক ছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী। ১৯৪০ সালে নাৎসি পার্টি অ্যামস্টারডাম দখল করে নেয়। অ্যান ও তার পরিবার তখন তাঁর বাবার লুকানো কক্ষে অবস্থান করতে থাকেন। এরপর তাদের কাছের কেউ বখশিশ এর লোভে ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট তাদের র্জামান রক্ষীদের হাতে ধরিয়ে দেয়। অ্যান ও তার বোন মার্গারেটকে পাঠানো হয় বার্গেন- বেলজান কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে। যেখানে ১৯৪৫ সালে টাইফাস জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুজনেই মৃত্যু বরন করেন।
[৪] অ্যান এর ১৩ তম জন্মদিনে পাওয়া ডায়েরি টি ছিল তার লুকিয়ে থাকা সময়ের সঙ্গী। সে তার দিনলিপির নাম দিয়েছিলেন " কিটি"। এই ডায়েরি তে সে তার জীবনের ১২ জুন ১৯৪২ থেকে ১ আগস্ট ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত ঘটনাগুলো তুলে ধরেছেন। এই হত্যাযজ্ঞে তার পরিবারের একমাত্র বেঁচে ছিলেন বাবা অটো ফ্রাংক। যুদ্ধ শেষে তিনি আমস্টারডাম ফিরে আসেন এবং অ্যানের দিনলিপি টি খুঁজে বের করেন।অ্যানের বাবার প্রচেষ্টায় ১৯৪৭ সালে দিনলিপিটি প্রকাশিত হয়। এটি মূল ওলন্দাজ ভাষা থেকে পরবর্তী কালে ১৯৫২ সালে প্রথম বারের মতো ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়। এ ডায়েরিতে লেখা অ্যানের কষ্ট আর অন্ধকারে কাটানো দুই বছর নাড়া দেয় বিশ্বের মানুষকে।
আপনার মতামত লিখুন :