শিরোনাম
◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয় ◈ কত টাকার বিনিময়ে মানববন্ধনে এসেছেন তারা, এদের পরিচয় কী? আরো যা জানাগেল (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৯ মার্চ, ২০২০, ০৬:৪৩ সকাল
আপডেট : ১৯ মার্চ, ২০২০, ০৬:৪৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] জরুরী অবস্থা জারি করবেন রাষ্ট্রপতি?

বাংলা ইনসাইডার : [২] করোনা পরিস্থিতি বাংলাদেশে ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে। ১৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি মানুষকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন, তারা হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম-নীতি মানছেন না, তারা সাধারণ মানুষদের সঙ্গে মিশছেন। এতে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে যাবার আশঙ্কা বাড়ছে। আর এর মধ্যেই সরকার বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। ইতিমধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যেকোন ধরনের সভা-সমাবেশ এড়িয়ে যাবার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নেয়া হয়েছে। গণপরিবহনের ব্যাপারেও খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন।

[৩] আদালত বন্ধ করার ব্যাপারেও প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন যে, তিনি অন্যান্য বিচারপতিদের সঙ্গে আলাপ করে দ্রুত এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, করোনা মোকেবেলায় অন্যান্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশও কি জরুরী অবস্থা ঘোষণা করতে পারে?

[৪] সাধারণত করোনার ঝুঁকি বাড়ে যদি একই স্থানে লোকজন সমাগম হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ম করেছে যে, এক স্থানে ১০ জনের বেশি মানুষ জড়ো হতে পারবে না। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশেও লোকজনের সমাগম সীমিত করা এবং অকারণে লোকজন যেন বের না হয় সেজন্য জরুরী অবস্থার প্রয়োজন আছে কিনা- সেই ব্যাপারে নানারকম আলাপ-আলোচনা চলছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সংবিধানে ১৪১ এর ‘ক’ অনুচ্ছেদে জরুরী অবস্থা জারির কথা বলা হয়েছে। জরুরী অবস্থা জারি রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার।

[৫] সংবিধানের ১৪১ক (১) উপ-অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, ‘রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এমন জরুরি অবস্থা বিদ্যমান রহিয়াছে, যাহাতে যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের দ্বারা বাংলাদেশ বা উহার যে কোন অংশের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবন বিপদের সম্মুখীন, তাহা হইলে তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করিতে পারিবেন: তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ ঘোষণার বৈধতার জন্য ঘোষণার পূর্বেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি-স্বাক্ষর প্রয়োজন হইবে।’

[৬] প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষরের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি দেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন। তবে বাংলাদেশে জরুরী অবস্থা জারির যে সাংবাধানিক বিধান, তা খুবই সীমিত। শুধুমাত্র যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারণে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা যায়। অন্য কারণে নয়।

[৭] বাংলাদেশের জরুরী অবস্থার যে বিধানাবলী সংবিধানে দেয়া হয়েছে, তাতে স্বাস্থ্যগত কারণে বা মহামারীজনিত কারণে জরুরী অবস্থা জারি করার কোন বিধান নেই। কাজেই করোনার কারণে রাষ্ট্রপতি জরুরী অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে আইনজ্ঞদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। কোন কোন আইনজ্ঞ মনে করছেন যে, অভ্যন্তরীণ গোলযোগটির ব্যাখ্যা সুপ্রীম কোর্ট দিতে পারে। অভ্যন্তরীণ গোলযোগ বলতে করোনা ভাইরাসজনিত মহামারীও হতে পারে এবং জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে এটি করতে পারেন। তবে অন্য আইনজ্ঞরা মনে করছেন যে, জরুরী আইনের যে বিধানগুলো বাংলাদেশের সংবিধানের

[৮] নবম-ক ভাগে দেওয়া হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট স্পষ্ট। এটা শুধু বহিঃ আক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের জন্যই জারি করা হতে পারে। কোনো স্বাস্থ্যগত কারণে বাংলাদেশে জরুরী অবস্থা জারির কোনো সুযোগ নেই। তবে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বলা হচ্ছে যে, জরুরী অবস্থার কোনো প্রয়োজন নেই। সাধারণ মানুষ তাদের স্বাস্থ্যগত কারণে যেসমস্ত আদেশ নির্দেশ দেওয়া হবে, তা মেনে নেবে। সরকার মনে করছে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। প্রবাসীদের যারা দেশে এসেছেন তারা যদি কঠোরভাবে হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলেন, অন্য মানুষের সঙ্গে মেলামেশা না করেন এবং যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণলয়ের গাইডলাইনগুলো অনুসরণ করেন তাহলে পরিস্থিতি এমনিতেই সামাল দেওয়া সম্ভব হবে। এছাড়াও সমাবেশ, ভিড় ইত্যাদি এড়ানোর জন্য সরকার নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ধাপে ধাপে বেশ কিছু নির্দেশনা দিচ্ছে এবং দেবে। সেই নির্দেশনাগুলো প্রতিপালন করা হলে দেশে জরুরি অবস্থা অবস্থা জারি করা কোনো প্রয়োজন নেই।

[৯] স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য যা যা করা দরকার, সবকিছুই সরকার করছে। কাজেই পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেছে বলে তিনি মনে করেন না। আর এ কারণেই সরকার পুরো পরিস্থিতি ধাপে ধাপে পর্যবেক্ষণ করে বিভিন্ন জিনিসের ওপর বিধি নিষেধ আরোপ করবে, যাতে করোনাভাইরাস দ্রুত সংক্রমিত না হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়