শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ১৪ মার্চ, ২০২০, ১২:৩৮ দুপুর
আপডেট : ১৪ মার্চ, ২০২০, ১২:৩৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] ঢাবির গণরুমে ‘করোনা’ আতঙ্ক

ওবায়দুর রহমান সোহান, ঢাবি প্রতিনিধি : [২] করোনা এখন বিশ্ববাসির জন্য কেবলই একটি আতঙ্কের নাম । দিনে দিনে এই আতঙ্ক বাড়ছেই। একই সাথে আতঙ্ক যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে গলরুমে বসবাসরত শিক্ষার্থীর কাছে।

[৩] এক ক্ষেত্রসমীক্ষায় জানা যায়, প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এ বিদ্যায়াতনের রয়েছে চরম আবাসন সংকট। যার কারণে বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের থাকতে হয় গণরুম অথবা রুমের বারান্দায়। যে রুমে থাকার কথা ৬ থেকে ৮ জন সে রুমে থাকতে হয় ২৫ থেকে ৩০ জন। আবার অনেক সময় দেখা যায় রুমে জায়গা না থাকলে ঘুমের বারান্দায় ময়লার মধ্যে কোনরকম বিছানা করে থাকতে হয়। জায়গার অভাবে অনেক শিক্ষার্থী মসজিদেও থাকেন বলে জানা গেছে।

[৪] বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হলের গণরুম গিয়ে দেখা যায়, গণরুমে মানবতার জীবনযাপন করছে শিক্ষার্থীরা। ফ্লোরে চাদর বিহীন তোষক বিছিয়ে শুয়ে আছে তারা। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ক্লাস বা কর্ম ব্যস্ততা শেষ করে হাত পা পরিষ্কার না করে রুমে প্রবেশের কারণে রুমের তোষকগুলোতে মাটির আস্তরন পড়েছে। তবে এসব তোষকে বাধ্য হয়ে থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

[৫] কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, করোনারোধে স্বাস্থ্য সংস্থা বা সচেতন মহল যে নির্দেশনা দিয়েছে তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ পরিষ্কার থাকা ও জনকোলাহল এড়িয়ে চলা। কিন্তু গণরুমে শিক্ষার্থীদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয় বলে তারা জানিয়েছেন। যেহেতু গণরুমে ৬ থেকে ৮ জনের জায়গায় থাকতে হয় ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীর। সে ক্ষেত্রে একজন আক্রান্ত হলে অন্যদের মধ্যে ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে তারা।

[৬] করোনারোধে জনকোলাহল এড়িয়ে চলার কথা বললেও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একসাথে ক্লাস করতে হয়, ক্যান্টিনে একসাথে খাবার খেতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ক্যান্টিনে খাবার রান্না হয় নোংরা পরিবেশে। খাবার খাওয়ার সময় কোনরকম প্লেট পরিষ্কার করেই খাবার খাওয়ানো হয়। আবার শিক্ষার্থীদের এক জায়গায় হাত ধুতে, একই টেবিলে বসে খেতে হয়। খাবার খাওয়ার পর হাত মোছার জন্য গামছা বা রুমাল দেওয়া হয়। যে একই গামছা বা রুমাল দিয়ে সকল শিক্ষার্থী হাত মুছে। যার কারণে, রাজধানী ঢাকায় করোনার প্রভাব পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেশি আক্রান্ত হবে বলে তারা জানিয়েছে।

[৭] অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়ায়, ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে আসে। বাইরে থেকে আসা এসব শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করা এসব শিক্ষার্থী একে অপরের সংস্পর্শে আসলে করোনা ছড়াতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে আতঙ্কে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

[৮] এসব কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার জন্য দাবি জানিয়েছে অনেকে। শিক্ষার্থীদের মতে, দেশে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা হানা দেয় তাহলে তা বিশাল আকার ধারণ করতে পারে। তবে, যদি এ বিষয়ে প্রশাসন পরে সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে প্রাণ নাশের আশঙ্কা থাকবে।

[৯] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এফ রহমান হলের একেএম সালমান রহমান নামে এক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, ‘সারাবিশ্ব করোনা আতঙ্কে বিরাজমান। তার থেকে বাদ যায়নি আমাদের দেশেও। আমাদের দেশে ইতিমধ্যে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে করোনায় আক্রান্ত হবে না তার কি গেরান্টি আছে। তাছাড়া. আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অবস্থা। একজন করোনায় আক্রান্ত হলে সাথে সাথে দ্রুততার সাথে তা ছড়িয়ে যাবে। যার কারণে আমরা আতঙ্কে রয়েছি।’

[১০] বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান বলেন, ‘করোনা সারাবিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করেছে। তার জন্য আমরাও আতঙ্কগ্রস্থ। আমরা এ জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কিছু হওয়ার আগে আমরা চাই, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হোক।’

[১১] তবে শিক্ষার্থীদের আতঙ্কগ্রস্থ না হওয়ার জন্য সকল শিক্ষার্থীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘খাবার খাওয়া থেকে শুরু করে হাটাচলা, হাঁচি-কাশি ইত্যাদি সব কর্মকান্ডের ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট শিষ্টাচার রয়েছে তা আমাদের মেনে চলতে হবে। এটি এখন আমাদের জন্য একটি মারাত্মক দুর্যোগ। এই দুর্যোগ থেকে রেহাই পেতে হলে সর্বচ্চ সতর্কতা এবং প্রস্তুতির বিকল্প নেই। প্রস্তুতি হিসেবে প্রথমত আমাদের কোনোভাবেই আতঙ্কগ্রস্থ হওয়া যাবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়