সুজন কৈরী : [২] অপহরণের দুদিন পর ইব্রাহিম নামের ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ গাজীপুরের সালনা মীরেরগাঁও থেকে শনিবার সকালে উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে ইব্রাহিমের মরদেহ হস্তান্তরের পর শনিবার (৭ মার্চ) ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের ১৫ ঘণ্টার ব্যবধানে র্যাব গ্রেপ্তার করে ঘটনায় জড়িত ইব্রাহিমের ফুফাতো ভাই বনি আমিনকে।
[৩] রোববার দুপুরে গাজীপুরের পোড়াবাড়ীতে র্যাব-১ এর ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়ে ব্যাটালিয়নের লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, বনি বরগুনা সদরের মাইঠা এলাকার আবুল কালাম আযাদের ছেলে। তিনি নিহত ইব্রাহিমের আপন ফুফাত ভাই। রোববার ভোরের দিকে হাজারীবাগের মামার বাসা থেকেই বনিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
[৪] র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, ঢাকার হাজারীবাগের নবীপুর লেনের ইকরা দারুল-উলুম মাদ্রাসার ৩য় শ্রেণিতে পড়ত ইব্রাহিম। ওই এলাকার মনির হোসেনের বড় ছেলে। তার আরও দুই ভাই-বোন রয়েছে। রাজধানী নিউ মার্কেট এলাকায় ইব্রাহিমের বাবার ক্রোকারিজের দোকান রয়েছে। মামা মনিরের বাসায় থেকে ২০১৬-২০১৮ সাল পর্যন্ত ওই দোকান চালিয়েছেন বনি। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মামী হালিমা বেগমের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। এছাড়া প্রেমিকাকে দামি উপহার এবং তাকে নিয়ে হানিমুনে যাওয়ার টাকারও প্রয়োজন ছিল তার। এজন্য গত ৫ মার্চ দুপুরে মামাতো ভাই ইব্রাহিমকে তার বাবার অসুস্থতার কথা বলে হাজারীবাগ মাদ্রাসা থেকে গাজীপুরের সালনায় নিয়ে যায়। সেখানে ইব্রাহিমের মাদ্রাসার আইডি কার্ড ফেলে দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় মীরেরগাঁও রেল লাইনের পাশের একটি জঙ্গলে নিয়ে ইব্রাহিমকে গলাটিপে হত্যা করেন বনি। এরপর মরদেহ একটি পুকুরে ফেলে সালনার একটি মসজিদে গিয়ে এশার নামাজ আদায় করেন। এরপর মোবাইলে কণ্ঠ নকল করে মামা মনিরকে ফোন করে ইব্রাহিমকে অপহরণের কথা জানিয়ে মুক্তিপণ বাবদ ৫ লাখ টাকা চান বনি। ৬ মার্চ বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণের ১ লাখ নিয়ে হাজীবাগে মামার বাসায় ফিরেন।
[৫] আব্দুল্লাহ আল-মামুন আরও জানান, প্রেমিকাকে দামি উপহার দিতে, তাকে নিয়ে হানিমুনে যাওয়া এবং মামীর ওপর দীর্ঘদিনের ক্ষোভের প্রতিশোধ নিতেই শিশু ইব্রাহিমকে অপহরণ ও হত্যা করা হয়। সন্দেহ এড়াতে সব সময় ইব্রাহিমের পরিবারের সঙ্গে ছিলেন বনি।