সওগাত আলী সাগর: ‘ব্যাংক খালি হয়ে গেছে, হাজার হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে গেছে। এখন যদি বেসরকারি ব্যাংকের মতো সরকারি ব্যাংক থেকেও টাকা চলে যায়, তাহলে এ খাতে ধস নামবে’। এই কথাগুলো কোনো রাজনৈতিক নেতার নয়। হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এই মন্তব্য করেছে বলে খবর বেরিয়েছে। ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা নিয়ে করা রিটের শুনানিতে এ মন্তব্য করেন বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। এর আগেও অপর একটি মামলায় হাইকোর্ট ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে টাকা পাচার নিয়ে কথা বলেছেন। টাকা পাচার নিয়ে উচ্চ আদালতের এই ধরনের প্রতিক্রিয়ায় আমরা আশাবাদী হচ্ছি। বিশেষ করে আমরা যারা দেশের বাইরে, টরন্টোয় বাংলাদেশের অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন করছি, তাদের কাছে আদালতের এই ধরনের প্রতিক্রিয়া উৎসাহব্যঞ্জক। ব্যাংকিং খাতের লুটপাট, অর্থ পাচার নিয়ে আদালতের মনোযোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে আদালতের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই একটা পয়েন্ট যুক্ত করতে চাই। ‘ব্যাংক খালি হয়ে গেছে’ ‘এই খাতে ধস নামবে’ এই ধরনের মন্তব্য আদালত থেকে এলে মানুষের মনে আতঙ্কবোধটা বেড়ে যায। এমনিতেই ব্যাংক নিয়ে মানুষের মনে একধরনের ভীতি তৈরি হয়েছে। ব্যাংক ব্যবস্থায় অবাধ লুটপাট, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অক্ষমতা, রাষ্ট্রের নির্লিপ্ততা ব্যাংকিং খাত সম্পর্কে মানুষকে সংশয়বাদী করে তুলেছে। আদালত যদি ‘ব্যাংক খালি হয়ে গেছে’ ধরনের মন্তব্য করে তাহলে সেই আতঙ্ক আরও তীব্র হয়।
ব্যাংকিং তথা আর্থিক খাতের লুটপাট এবং অর্থ পাচারের ব্যাপারে আদালত অবশ্যই নির্দেশনামূলক মতামত এমনকি নির্দেশই দিতে পারেন। বিশেষ করে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচার হওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যখন বিচারের কাঠগড়ায়, তখন অর্থ পাচার নিয়ে আদালতের কঠোর হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ আছে। লুটপাট বিশেষ করে অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কোনো না কোনো ফ্রন্ট থেকে প্রতিরোধ হোক, প্রতিবাদ হোক। সেটি রাজনৈতিকভাবেই হোক, আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমেই হোক আর সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমেই হোক। আমাদের লুটেরা রুখো স্বদেশ বাঁচাও আন্দোলন তো চলছেই। ফেসবুক থেকে