হাসনাত কাইয়ূম : আমাদের অনেক শিক্ষিত বন্ধুদের মধ্যেও এমন ধারণা বদ্ধমূল আছে যে, আইন বা সংবিধানে তো অনেক ভালো ভালো কথা লেখা আছে কিন্তু প্রয়োগ তো হয় না, প্রয়োগ করবেন কীভাবে? আমাদের অনেক বন্ধুর ধারণায় এটাও আছে যে, ভারতের আইন-কানুন-সংবিধান-গণতন্ত্র আমাদের চেয়ে অনেক ভালো, অনেক উন্নত । সেখানে বিচার বিভাগ অনেক স্বাধীন। সবার নজর যেহেতু এখন দিল্লির দিকে চলেন একটু দিল্লির আইন-কানুনের প্রয়োগ আর বিচার বিভাগের স্বাধীনতার নমুনাটাই একটু দেখি। গত ২-৩ দিনের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে দিল্লি হাইকোর্টের একজন বিচারপতি, আইনানুযায়ী পুলিশ যা যা করতে বাধ্য, তা খুব কঠিনভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
পুলিশ যেন সেসব আইন-কানুন প্রয়োগ করেন ও মেনে চলেন, তার নির্দেশও দিয়েছেন। তো ফলাফল কি হলো? ফলাফল বিচারপতি নিজেই ট্রান্সফার হয়ে গেলো। বিচারপতি যে ট্রান্সফার হলো সেটাও তো আইন মেনেই হলো, নাকি? তাহলে আইন কোনটা কীভাবে কখন কার উপর প্রয়োগ হবে আর কার বেলায় হবে না, এটা ঠিক হয় কোন আইনে? এটা ঠিক হয় সাংবিধানিক আইনে, রাষ্ট্র পরিচালনার আইনে। সাংবিধানিক আইনে যদি রাষ্ট্র পরিচালকদের, সরকারকে, এই ক্ষমতা দেয় যে, কোন আইন কখন প্রয়োগ হবে আর কখন হবে না, তা সে ঠিক করতে পারবে, তাহলে সে সব আইন প্রয়োগ হবে না, যে সব আইন তার স্বার্থের বিপক্ষে যায়। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান তথা ব্রিটিশ কলোনী ছিলো এই রকম প্রায় সব দেশেই কমবেশি একই অবস্থা বিদ্যমান।
এখন আমাদের বন্ধুরা কি মনে করেন যে, পুলিশ এতোই বোকা যে, তারা বিচারপতির পরিণতি দেখেও বুঝবেন না, কোনটা করা তার নিয়োগকর্তা-পদোন্নতিকর্তার অভিপ্রায় আর কোনটা না। নাকি এ সব বোঝার পরও তার কাছ থেকেও আপনি আত্মঘাতী পদক্ষেপই আশা করেন। আমরা তাই সংবিধান সংশোধনের আলাপটা করি। এ সময়ে এর চেয়ে জরুরি কোনো রাজনৈতিক আলাপ নেই, বন্ধুরা। ফেসবুক থেকে