ফরিদ কবির : বাংলাদেশে যেসব পদক বা পুরস্কার আছে তা নিয়ে আমি অনেক কথাই আগে বলেছি। আগে অযোগ্যরা পুরস্কার পেলে দুঃখ লাগতো, কখনো কখনো ক্ষুব্ধও হতাম। এখন আর হই না। কারণ আমাদের যেসব বুদ্ধিজীবী এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত, তাদের মগজ পচে গেছে। যেসব আমলা এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত তারা মূর্খ। এ দেশে বুদ্ধিজীবীদের যে মান, আমলাদের যে মান, তাতে দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার রইজউদ্দিনরা পাবে না তো কারা পাবে? দেশে কোন্ লেখক বা বুদ্ধিজীবী আছেন যিনি গত ৪০ বছরের সাহিত্য পড়েছেন? আমি নিশ্চিত এক-দুজন ব্যতিক্রম বাদে কেউ পড়েননি।
কী কারণে একজন লেখক বা কবি একটি পুরস্কার বা পদক পেতে পারেন, সেটাই তো তারা জানেন না।অতএব, ভবিষ্যতেও কোনো রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী কিংবা তাদের আত্মীয়-স্বজনরাই কবি বা লেখক হিসেবে একাডেমি বা রাষ্ট্রীয় পদক-পুরস্কার পাবেন এটাই স্বাভাবিক। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, যেনতেন প্রকারে দু-চারটা ‘বই’ লেখার পর রাম-শ্যাম-যদু-মধুরাও মনে করে তারা সব ধরনের পুরস্কার পাওয়ারই যোগ্য। পদ-পদবি ঠিক রাখতে, বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় মালাই খাওয়ার লোভে আমাদের বুদ্ধিজীবীরাও শেষ পর্যন্ত তাদের ক্ষমতার কাছেই হার মানেন। কাজেই আগামীতেও রাম-শ্যাম-যদু-মধুরাই এসব পদক-পুরস্কার পাবেন। এসব বন্ধ করতে হলে সমাজে যে ধরনের মেরুদ-ওয়ালা মানুষ ও কবি-লেখক দরকার সেটা নেই। আমাদের রাজনীতিবিদ, আমলা, কবি-লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের দেখলেই মনে হয় তারা কুঁজো হয়ে হাঁটছেন। ভাবছি মৃত্যুর আগে আমার মেরুদ-টা জাদুঘরে দান করে যাবো। তারা যাতে মাঝেমধ্যেই গিয়ে দেখে আসতে পারেন, জিনিসটা কী রকম। এ বস্তুটা না থাকলে মানুষকে আমার উইপোকা বলেই মনে হয়। ফেসবুক থেকে