রাকিব উদ্দীন : সম্প্রতি উয়েফার ক্লাব ও ফেয়ার প্লে নীতি লঙ্ঘন করায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটিতে দুই মৌসুম নিষিদ্ধসহ ৩০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেয়েছে উয়েফা। মূলত ম্যানসিটির তথ্য লুকানোর ব্যাপারটি প্রথমত প্রকাশিত হয় জার্মান ‘ডার স্পিগেলে’ নামত সংবাদপত্রে। এর আগে পত্রিকাটি পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ধর্ষণের ব্যাপারেও গোপন তথ্য প্রকাশ করে। আর এ তথ্যগুলো আসে পর্তুগিজ এক হ্যাকার থেকে। যার সংগ্রহে রয়েছে এমন ৭০ মিলিয়ন ডকুমেন্ট!
ডার স্পিগেলে নামক সংবাদপত্রে তথ্যগুলো ইমেইল করে পাঠাতো ‘জন’ নামক এক যুবক। তার পাঠানো মেইলে সব ধরণের প্রমাণ থাকায় তা প্রকাশও করে সংবাদ মাধ্যমটি। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে তখনই পরিস্কার হয় বিষয়টি। প্রায় ছয় মাস পর পর্তুগিজ পুলিশ তাকে আটক করলে যানা যায় তার মূল নাম রুই পিন্টো। ৩০ বছর বয়সী এ হ্যাকারের বাড়ি পর্তুগাল। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাকে হুইসেল ব্লোয়ার বা তথ্য ফাঁসকারী হিসেবে মানলেও পর্তুগিজ আদালত তাকে প্রতারক হিসেবে চিহ্নিত করে।
২০১৫ সাল থেকে বিভিন্ন নামীদামী ফুটবল ক্লাব হতে শুরু করে বড়বড় সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে আসছিলেন পিন্টো। এ সকল তথ্যের মধ্যে খেলোয়াড়দের যোগাযোগ মাধ্যম, টিম অফিশিয়ালদের আভ্যন্তরীণ ডকুমেন্ট, প্রয়োজনীয় ই-মেইল, খেলোয়াড়দের আয়-বায় সংক্রান্ত তথ্য, ট্যাক্স প্রদানের তথ্যও ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর ধর্ষণ মামলারও নানা তথ্য ছিল। এ সবই তিনি ফাঁস করেন।
২০০৯ সালে রোনালদোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মডেল ক্যাথরিন মায়োরগা। পিন্টোর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ নিয়ে ‘ডার স্পিগেল’ ২০১৮ সালে সংবাদ প্রকাশ করেছিল। তার ভিত্তিতে মামলা। তবে তখন খুব বেশি আলোচনা হয়নি। পরে হ্যাশট্যাগ ‘মি টু’আন্দোলনে নিজের পরিচয় প্রকাশের সাহস করেন মায়োরগা। এরপর ২০১৯ সালের জুলাইয়ে পর্যাপ্ত প্রমাণ না পাওয়ায় রোনালদোকে মুক্তি দেওয়া হয় সে অভিযোগ থেকে।
বর্তমানে জেলে রয়েছেন রুই পিন্টো। আগের দিনই তার জামিন নামঞ্জুর হয় পর্তুগালের কোর্টে। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে মোট ১৪৭টি নানা ধরণের প্রতারণামূলক মামলা রয়েছে। যদিও পিন্টোর একজন আইনজীবী তেইক্সেইরা দ্য মোতা আশা করছেন তার মক্কেলকে একজন সাধারণ হ্যাকার হিসেবে চিহ্নিত হবেন। যাতে প্রতারণা মামলা থেকে মুক্তি পান।
আপনার মতামত লিখুন :