এইচ এম মিলন, মাদারীপুর : ৭১সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেও আজওবর্তী মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি মেলেনি মাদারীপুরের কালকিনিতে ফজলুল হক সরদার (৮০) নামে এক বৃদ্ধ চা বিক্রেতার। সে পৌর এলাকার দক্ষিন কৃষ্ণনগর গ্রামের খোরশেদ আলী সরদারের ছেলে। তিনি সামান্য পুজি খাটিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন চা বিক্রি করে।
১৯৭১ সালে জীবনবাজি রেখে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহন করে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে আনেন। লাখো বীর সেনাদের মধ্যে একজন ফজলুল হক। ৭১’ এর রনাঙ্গনে ছিলেন একজন তরতাজা যুবক। সেই যুবক এখন বৃদ্ধ। ভোটার আইডি কার্ড অনুসারে তার বয়স এখন ৮০ বছর। তার দরিদ্র সংসারে বর্তমানে রয়েছে স্ত্রী সেতারা বেগম, ১ মেয়ে ও ১ ছেলে। তার একমাত্র ছেলে আকরামও বেকার। তারও কোন রোজগারের পথ নেই।
১৯৭১ সালে এদেশের বাঙ্গালির উপর নির্বিচারে যখন গুলি চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনি। তখন তিনি খুলনা সদরে একটি কোম্পানিতে ছোট পদে চাকরি করতেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে দেশ বাঁচাতে চাকরি ছেড়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন।
তিনি ভারত গিয়ে প্রায় ১৫ দিন ট্রেনিং করেন। ট্রেনিং শেষে দেশে এসে খুলনা জেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু সুফিয়ানের দলে তিনি নাম লেখান। এরপর তিনি পূরোদমে খুলনা থেকে বরিশাল জেলা পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে থেকে দেশ রক্ষায় যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তাকে প্রধান করে ২৬ জনের একটি মুক্তিযোদ্ধাদের গোয়েন্দা টিম গঠন করা হয়।
তখন তার কাজ ছিলো ছদ্ধ বেশে পাকসেনাদের খোঁজখবর রাখা। সঠিকভাবে পাকসেনাদের অবস্থা নিধারন করা। তার দেয়া সঠিক তথ্যমতে তখন সকল মুক্তিযোদ্ধারা মিলে এক সঙ্গে পাকসেনাদের ওপর হামলা চালাতেন। এবং কি সে সময় প্রত্যেকটি অপারেশনে তার ভুমিকা ছিল প্রসংসনীয়। ফজলুল হক সরদার জীবন বাজী রেখে খুলনা-বরিশাল সদরের গুরত্বপূর্ন স্থানে একের পর এক পাকসেনাদের মুখোমুখি যুদ্ধ করেন।
এভাবে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হয়। দেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু আজ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি জোটেনি বৃদ্ধ ফজলুল হক সরদারের ভাগ্যে। সম্পাদনা: রাকিবুল
আপনার মতামত লিখুন :