কামরুল হাসান মামুন :‘অভিজ্ঞতা নয়, সচিবদের জন্য আনুগত্যের পুরস্কার’ এই শিরোনামে খালেদ মুহিউদ্দিনের একটি লেখা পড়ছিলাম। লেখাটি আমার চিন্তার সঙ্গে রেসোনেন্স ঘটিয়েছে তাই লেখাটি পড়ে একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলি। অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য দলবেঁধে বিদেশ গিয়ে তো বাজার সদাই আর ছন্দাই নন্দাই করে তাই অভিজ্ঞাতা স্বাভাবিকভাবেই হয় না। তবে হ্যাঁ আনুগত্য প্রকাশে তারা একেকজন an expert headmaster। জানলাম চাকরির সময়ের আনুগত্য নিশ্চিত করতে অবসরের পরে থিংকট্যাংকের প্রস্তাব নিয়ে নাড়াচাড়া চলছে। যেই মানুষ সমগ্র চাকরিকালে আনুগত্য প্রকাশে সমগ্র চিন্তা ও কর্মে ব্যস্ত থেকেছে তার তো মগজের চিন্তার বিভাগ ডিঅ্যাক্টিভেট হয়ে যায় সে কী করে থিঙ্ক ট্যাংক হতে পারে? এই সরকার ভাবতে পারে কারণ আনুগত্য প্রকাশে তারা শতভাগ সার্থক তাই হাতের মুঠোয় রাখতে পারলে অনেক সুবিধা। ইংরেজি tankÕ শব্দের দুটি অর্থ আছে ১.storage chamber ২. heavy armoured fighting vehicle carrying guns| ।
আর থিঙ্ক ট্যাংকের অর্থ হলো দল বিশেষজ্ঞ মানুষ যারা সরকারকে সাধারণত রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক কিংবা সরকারের বিভিন্ন সেক্টর সম্মন্ধে ধারণা উপদেশ আকারে দিয়ে থাকে। সারাবিশ্বজুড়ে এই কাজটা করে থাকে শিক্ষক ও গবেষকরা যারা সারাজীবন ধরে জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণের প্রবাহে থাকে। আর বাংলাদেশে ঘটছে উল্টো। শুনলাম সচিবরা অবসরের পরে থিংক ট্যাংকের প্রস্তাব নিয়ে নাড়াচাড়া করছে। তারা গাছেরটাও খাবে আবার তলারটাও কুড়াবে। তারা সব খেয়ে সর্বনাশ করে ছাড়বে। প্রশ্ন হলো কেন? এই সচিবরা কী তাদের কর্মজীবনে কোনো সফলতা দেখিয়েছেন? এমন একটি মন্ত্রণালয়ের নাম বলুন তো যা সফল? বিমান মন্ত্রণালয়ের কথা ভাবুন, রেল মন্ত্রণালয়ের কথা ভাবুন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কথা ভাবুন, ডাক তার ও টেলিফোন মন্ত্রণালয়ের কথা ভাবুন, just name one। যারা কর্মজীবনে ব্যর্থ তারা কীভাবে থিঙ্ক ট্যাংক হওয়ার কথা ভাবে আর সরকার কীভাবে আস্কারা দেয়। সমস্যা হলো সত্যিকারের থিঙ্ক ট্যাংককে স্পেস দিতে পারার মতো সত্যিকারের জ্ঞানী মানুষ সরকারে আছে? তাদের ভয় সত্যিকারের জ্ঞানী ও বিজ্ঞ মানুষের সান্নিধ্যে গেলে তারা যে কতোটা অজ্ঞ সেটা নাঙ্গা হয়ে যাবে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :