যশোর প্রতিনিধি : তালাক দেয়ায সাবেক স্ত্রীর আপত্তিকর অর্ধনগ্ন ছবি ফেসবুকের মাধ্যমে ছাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে আদালতে দায়ের করা একটি পিটিশন মামলা যশোর কোতয়ালি থানায় নিয়মিত মামলা হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছে। মামলাটি হয়েছে পর্ণগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে।
মামলার আসামিরা হচ্ছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ঝনঝানিয়া গ্রামের মৃত রওশন আলীর ছেলে রকি আহমেদ (২৭), রকির ভাই দ্বীনার (২৪) ও তার মা মনোয়ারা বেগম (৫০)।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বাদিনীর বাড়ি যশোর সদর উপজেলা সমসপুর গ্রামে। বাদিনি আসামির গ্রাম ঝনঝনিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিদ্যা নিকেতনে ’১৯ সালে দশম শ্রেণিতে লেখা পড়া করতেন। স্কুলে যাওয়া আসার পথে আসামি রকি নানা ভাবে বাদিনীকে বিরক্ত করতো। অসৎ উদ্দেশ্যে ফুসলাইতো। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আসামি রকি বাদিনিকে অত্যন্ত সুকৌশলে ফুসলিয়ে নিয়ে নামকাওয়াস্তে বিয়ে করে।
ওই সময় মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরণের মামলার প্রস্তুতি নিলে আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় ব্যর্থ হয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে শালিস মিমাংশা হলে বাদিনি সংসার করতে থাকেন। সংসার করাকালীন রকি ভাই দ্বীনার ও মা মনোয়ারা বেগমের প্ররোচনায় বাদিনিকে শরীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। স্বভাব চরিত্র ভাল না। তাকে অন্য পুরুষের শয্যা সঙ্গী হওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। রাজি না হওয়ায় ভাই ও মায়ের ইন্ধনে বাদিনির (ওই মেয়ের) কয়েকটি আপত্তিকর অর্ধনগ্ন ছবি রকি তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে। বিষয়টি ওই মেয়ে তার পরিবারের লোকজনকে জানালে মাস সাতেক আগে তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। মেয়েটি স্বেচ্ছায় রকিকে তালক দেয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক স্ত্রীকে (ওই মেয়েকে) ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র করতে থাকে রকি ও তার পরিবারের লোকজন। পরে ওই মেয়ের সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের পরানপুর গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে আক্তারুজ্জামনের সাথে বিয়ে হয়। ফলে রকি ও তার পরিবারের লোকজন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েক সপ্তাহ আগে ওই মেয়ের আপত্তিকর অর্ধনগ্ন ছবি ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে আপলোড করে।
তিনি বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন এই ঘটনার জন্য রকি ও তার পরিবারের সদস্যের হাত রয়েছে। এই কারণে তিনি গত ২২ জানুয়ারি যশোরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করেন। ওই পিটিশনটি আমলে নিয়ে বিচারক তা তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিলে পুলিশ ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে তা নিয়মিত মামলা হিসাবে নথিভুক্ত করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড কমিউনিটি পুলিশিং) সুমন ভক্ত জানিয়েছেন, পর্ণগ্রাফি আইনে কোর্ট পিটশন মামলা হয়েছে। তাই আসামিদের আটক করা যায়নি। খুব তাড়াতাড়ি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। সম্পাদনা: জেরিন