এম. মাহফুজুর রহমান, ঝিনাইদহ : জীবনভর বাবা দাদারা নিজেদের নলকূপের পানি পান করেছেন। আমরাও ছোটবেলা থেকে সেই নলকুপের পানি পান করেছি। তখন কারও কিছু হয়নি। এখন আবার কি হবে ? গ্রামের শতভাগ নলকুপে আর্সেনিক ধরা পড়লেও নলকুপগুলোর পানি পান করার প্রশ্নে প্রথমে এমন ধারনা ছিল গ্রামবাসীদের মাঝে। কিন্ত তাদের সেই ধারনা ভুলে পরিণত হয়েছে। দিন যত পার হচ্ছে গ্রামের লোকজন আর্সেনিকোসিসে আক্রান্ত হচ্ছেন।
গ্রামবাসীদের ভাষ্য, এ পর্যন্ত গ্রামটিতে ১৮ জন নারী-পুরুষ আর্সেনিকোসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে গত বছর হেলাল উদ্দীন (৭৫) নামের একজন মারা গেছেন। গ্রামটিতে খাবার পানির জন্য সরকারীভাবে মোট ৮ টি আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা যথেষ্ঠ নয়। তারপরও সচেতনতার অভাবে গ্রামবাসীদের অনেকে এখনও প্রতিনিয়ত এ আর্সেনিক বিষযুক্ত পানি পান করে চলেছেন। এমন অবস্থা বিরাজ করছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার খোর্দ্দ তালিয়ান গ্রামে।
কালীগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসসূত্রে জানাগেছে, ২০০৩ সালের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও জরিপ মতে, কালীগঞ্জ উপজেলায় মোট ২৯ হাজার ৫’শ ৬৩ টি অগভীর নলকুপ রয়েছে। এরমধ্যে ২৬ হাজার ৬’শ ১৩ টি আর্সেনিক দূষণমুক্ত। আর দূষনযুক্ত ২ হাজার ৯’শ ৫০ টি নলকূপ। তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এ উপজেলাতে মোট ২৯ জন আর্সেনিকোসিসে আক্রান্ত রোগীকে চিহ্নিত করা হয়। যার মধ্যে ২ হাজার ৬’শ ১৩ জন বাসিন্দার গ্রাম উপজেলার তালিয়ানে ছিল মাত্র একজন রোগী। কিন্ত গ্রামটিতে পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় মোট ১১৯ টি খাবার পানির নলকূপের সবগুলোই আর্সেনিকযুক্ত। এরপর থেকে গ্রামটিতে সরকারীভাবে মোট ৮ টি আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। সম্পদনা : তন্নীমা আক্তার