শিরোনাম
◈ ইসরা‌য়ে‌লি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বাড়ি লক্ষ্য করে ৫০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়লো ইরান ◈ ক্লাব বিশ্বকাপ ফুটব‌লে বায়ার্ন মিউ‌নি‌খের রেকর্ডগড়া জয় ◈ আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ জিতলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ◈ দেশজুড়ে শিক্ষক সংকট, শূন্য পদ ১ লাখের বেশি: এনটিআরসিএর মাধ্যমে আসছে ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি! ◈ পরিবারসহ গোপন বাঙ্কারে লুকিয়েছেন খামেনি : ইরান ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট ◈ বাংলা‌দেশ এখ‌নো টেস্ট ব্যাটিং শিখছে, তাই চিন্তিত নন সিমন্স ◈ বাংলাদেশের বিরু‌দ্ধে শ্রীলঙ্কার টেস্ট দল ঘোষণা ◈ ইরানের নতুন সামরিক কমান্ডার কারা? ◈ আইন সংশোধন, নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তি ও প্রশিক্ষণে আটকে নির্বাচন পরিকল্পনা ◈ খামেনির বিরুদ্ধে ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ পরিকল্পনা বন্ধ করলেন ট্রাম্প?

প্রকাশিত : ২২ জানুয়ারী, ২০২০, ০৫:৫০ সকাল
আপডেট : ২২ জানুয়ারী, ২০২০, ০৫:৫০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আল্লাহ ছাড় দিলেও ছেড়ে দেবেন না, সুতরাং কৃতজ্ঞ হওয়া জরুরি

আবদুল অদুদ : মহান আল্লাহ বলেছেন, নিশ্চয়ই তিনি পথ বাৎলে দিয়েছেন, এবার যে চায় কৃতজ্ঞ হবে, আর যে চায় কুফরী করবে।মানুষকে তিনি চিন্তার স্বাধীনতা দিয়েছেন। মানুষ আল্লাহ প্রদত্ত কর্মশক্তি প্রয়োগে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অধিকারী।কারণ, হাশরের দিন মানুষের বিচার হবে। যেহেতু বিচার হবে, সেহেতু তাকে স্বাধীনতা না দিলে বিচার কিভাবে হবে?ভালো-মন্দ শিক্ষা দিয়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে যেন সকল কাজের পরিপূর্ণ হিসেব নেয়া যায়।সুতরাং কৃতজ্ঞ হওয়া ছাড়া উপায় নেই।
বাংলাদেশের ধনীরা অনেক রকম মশলা খান – তাদের তরকারীতে পেঁয়াজ না হলেও চলে। কিন্তু গরীব মানুষের তরকারীতে লাগে তেল-নুন-হলুদ-মরিচ আর পেঁয়াজ। আরো গরীব যারা তাদের পান্তা ভাতে তরকারি – লবন, মরিচ আর পেঁয়াজ। তারা তাই অনেক দাম হলেও বাধ্য হয়ে পেয়াঁজ কেনেন। খুচরা দোকানে কিনতে না পারলে ট্রাকসেল থেকে কেনেন। লম্বা সময় দাঁড়িয়ে থেকে হলেও কেনেন। কোলের বাচ্চাটাকে কারো কাছে রেখে আসার সুযোগ না থাকলে কোলে নিয়েই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। আপনারা ছবিটা দেখেন।

এই দৃষ্টিতে একটা অভিশাপ আছে। যারা মানুষকে পেঁয়াজ দুর্গতিতে ফেলেছে তাদের জন্য। আপনি যদি সরকারের অংশ হয়ে থাকেন – সম্ভাবনা আছে এই অভিশাপ আপনার ওপরে পড়বে। অথবা আপনার পরিবারের ওপরে। হত্যা-গুম-জেল-যুলম অনেকদিন ধরেই চলছে। অর্থনৈতিক অরাজকতা চরমে। তরুণরা বেকার। দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। লুটেরারা দেশের টাকা বাইরে নিয়ে চলে যাচ্ছে – ব্যাংক দেউলিয়া করে, শেয়ারবাজারের ব্যবসায়ীদের নিঃস্ব করে। এখন একেবারে প্রান্তিক মানুষদের রিযিকে হাত দিয়েছে এরা।

আল্লাহ আর মজলুমের মাঝে কোনো পর্দা থাকে না। সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষের। গরীব থেকে মধ্যবিত্ত সবারই কষ্ট হচ্ছে। এই কষ্টগুলো কারো গলা দিয়ে বের হচ্ছে, কারো চোখ দিয়ে, কারো চোখের পানি দিয়ে। আল্লাহ তো আল-আদল, সর্বোত্তম ন্যায়-বিচারক। তিনি কিন্তু এই অন্যায়গুলোর ভয়ংকর শাস্তি দেবেন। তিনি ছাড় দিয়েছেন বটে, কিন্তু ছেড়ে দেবেন না।

যিনি মানুষকে মায়ের এক অন্ধকার গর্ভে দীর্ঘ সময়ে রহমতের চাদরে ঢেকে রেখে ধারাবাহিক কার্যপ্রণালীর মাধ্যমে দুনিয়াতে আসার সুযোগ করে দিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, দুনিয়াতে আসার আগে মায়ের গর্ভে রক্তপিণ্ড থেকে শুরু করে মাংসপিণ্ডে হাড়ের সংযোজন পর্যন্ত যে ইহসান করেছেন, এ জন্য তার সঙ্গে সুসম্পর্ক ও আদব রক্ষা করা প্রত্যেক বান্দার জন্য আবশ্যক।
আল্লাহর প্রশংসা ও শুকরিয়া

বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর এসব রহমত ও ইহসানের জন্য ঈমানের প্রথম দাবি হলো, বান্দা জবানে আল্লাহর অবিরাম প্রশংসা করবে আর অবনত মস্তকে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা তার আনুগত্য প্রকাশ করবে।

আল্লাহ কত বড় মেহেরবান যে, বান্দা যদি আল্লাহর প্রশংসা ও আনুগত্য করে আল্লাহও বান্দাকে সঙ্গে সঙ্গে স্মরণ করবেন বলেন ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন-
‘যদি তোমরা আমাকে স্মরণ কর তবে আমিও তোমাকে স্মরণ করব। আর আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার অবাধ্যতা করো না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫২)
পাশাপাশি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসায় আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি তার নেয়ামত বাড়িয়ে দেয়ার ঘোষণা করেছেন। আর যদি এর ব্যতিক্রম হয় তবে তার জন্য কঠোর শাস্তির ঘোষণাও রয়েছে। আল্লাহ বলেন-

‘যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে (নেয়ামত) আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৭)
মনে রাখতে হবে

নেয়ামতের মালিক আল্লাহ। দুনিয়ার সব অনুগ্রহের মালিক আল্লাহ। সুতরাং মালিকের অনুগ্রহ স্বীকার করায় রয়েছে আনন্দ ও পুরস্কার। আর অনুগ্রহকে অস্বীকার করা বা অবজ্ঞা করা কোনো ভাবেই আদব ও কৃতজ্ঞতার মাঝে পড়ে না। আল্লাহ তাআলা মানুষকে নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন-
- ‘তোমরা যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, তবে তার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না।’ (সুরা নহল : আয়াত ১৮)
- ‘তোমাদের কাছে যেসব নেয়ামত রয়েছে, তা তো আল্লাহর কাছ থেকেই (এসেছে)।’ (সুরা নহল : আয়াত ৫৩)

‘সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব। আর তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং অকৃতজ্ঞ হয়ো না।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৫২)
আল্লাহর প্রতি ভয়

বান্দার যখন আল্লাহকে ভয় করেন তখনও তিনি বান্দার সব অবস্থা দেখেন এবং জানেন। এ কারণেই মুমিন বান্দার হৃদয়-মন আল্লাহর ভয় ও ভক্তি-শ্রদ্ধায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। মুমিন বান্দা যখনই কোনো অন্যায় বা অবাধ্য কাজ করে ফেলে তখনই আল্লাহর কাছে লজ্জিত হয়।
আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ ও আনুগত্যের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে যাওয়াটাকে রীতিমত অপমান মনে করে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। এটাই আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সুসম্পর্ক ও আদবের লক্ষণ।

কেননা মুমিন বান্দা যখনই আল্লাহর কোনো অবাধ্যতায় জড়িয়ে যায়, তখনই তার মনে হতে থাকে যে, আল্লাহ তাআলা তাকে দেখছেন। আল্লাহর সেই ঘোষণার কথাও মুমিনের স্মরণ হয়ে যায়। বান্দাকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ বলেছেন-

‘তোমাদের কী হল যে, তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের পরওয়া করছ না। অথচ তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন পর্যায়ক্রমে। (সুরা নুহ : আয়াত ১৩-১৪)
অন্যত্র তিনি আরও বলেছেন, ‘আর তিনি জানেন তোমরা যা গোপন কর এবং তোমরা যা প্রকাশ কর। (সুরা তাগাবুন : আয়াত ৪)
সুতরাং আল্লাহর অবধ্যতা নয় তার দিকে ফিরে আসাই বান্দার একমাত্র কাজ। তিনি বান্দার ওপর ক্ষমতাবান। বান্দা তাঁর অধীন। তার দিকে ফিরে যাওয়া ছাড়া বান্দার কোনো মুক্তির পথ বা উপায় খোলা নেই। আল্লাহ বলেন-

‘এমন কোন জীব-জন্তু নেই, যে তাঁর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।’(সুরা হুদ : আয়াত ৫৬) ‘এবং আল্লাহর উপরই তোমরা নির্ভর কর, যদি তোমরা মুমিন হও।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ২৩)

আল্লাহর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা যেমন জরুরি, তেমনি সব অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকাও জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়