শাহীন চৌধুরী: সারা দেশে ২ হাজার ১২১টি পেট্রোল পাম্প ও ফিলিং স্টেশন থাকলেও বিভিন্ন কারণে এই মুহূর্তে অনেক পাম্প বন্ধ রয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে কার্যত পাম্প স্টেশন স্থাপনে অনুমোদন দেয়া বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ গত বছর জুন মাসে জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে পেট্রোল পাম্প ও ফিলিং স্টেশন স্থাপনের অনুমোদন না দিতে বিপিসিকে চিঠি দেয় মন্ত্রণালয়।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, পেট্রোল পাম্প ও ফিলিং স্টেশনগুলোর মধ্যে অশুভ প্রতিযোগিতা, ভেজাল ও নিম্নমানের তেল বিক্রি, পরিমাণে কম দেয়া এবং অবৈধ পথে তেল সংগ্রহের প্রবণতার কারণে নতুন করে পাম্প স্টেশন স্থাপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেও কার্যকরভাবে তেলে ভেজাল রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে পেট্রোল পাম্প ও ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হক বিপিসির এক সভায় অভিযোগ করেছেন, নতুন নতুন পেট্রোল পাম্প ও ফিলিং স্টেশনের অনুমোদন দিলে বিদ্যমান পাম্পগুলোর বিক্রি কমে যাবে। এ কারণে মালিকদের মধ্যে অশুভ প্রতিযোগিতা তৈরি হতে পারে। মূলত এসব কারণে জ্বালানি বিভাগ থেকে নতুন পাম্প স্টেশন স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
বিপিসি জানায়, গত বছর তাদের আওতাধীন যমুনা অয়েল কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভায় সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৬টি নতুন পেট্রোল পাম্প ও ফিলিং স্টেশন স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞার কারণে এখনও সেগুলো স্থাপনে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিপিসি। একইভাবে পদ্মা ও মেঘনা অয়েল কোম্পানিও মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞার কারণে পাম্প ও ফিলিং স্টেশন স্থাপন করতে পারছে না।
জ্বালানি বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, দেশব্যাপী শত শত কিলোমিটার বাইপাস সড়ক নির্মিত হয়েছে। এগুলোর কোথাও পাম্প ও ফিলিং স্টেশন নেই। এছাড়া অধিকাংশ হাইওয়ের মধ্যখানে ডিভাইডার হয়ে যাওয়ায় পাম্প স্টেশনের দ‚রত্ব অনেক বেড়ে গেছে। এক পাশের তেলবাহী গাড়ি অন্য পাশে যেতে পারছে না। তাছাড়া বিদ্যমান পাম্পগুলোর অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। এ কারণে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা অয়েল কোম্পানিগুলো জ্বালানি তেল বিক্রিতে বড় ধরনের বিপাকে পড়েছে বলে তাদেরকে লিখিতভাবে জানিয়েছে।
ওই কর্মকর্তা জানান, নতুন মডেল পেট্রোল পাম্প ও ফিলিং স্টেশন স্থাপনের জন্য খসড়া নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। এতে ২৫০ শতাংশ জমি, একটি পার্ক, শিশুদের জন্য খেলার মাঠ ও ফাইভ স্টার মানের ১০-১২টি রুমসহ একটি নকশা তৈরি করতে বলা হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ- ২০১৫ সালে ২০১৪ সালের নীতিমালা সংশোধন করা হয়েছে, তারপরও নকশা বানানোর নামে চলছে সময়ক্ষেপণ।
আপনার মতামত লিখুন :