অনির্বাণ আরিফ : বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে তারাই কথা বলে যারা পুরোপুরি বেকুব বা আধা বেকুব। বাংলাদেশে নির্বাচন হওয়ার আগেই তো নির্বাচিত করিয়ে দেয়া হয়। সুতরাং এ বিষয়ে কথা বলা এনার্জি লস। সত্তর দশকে শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতাসীন হয়ে নির্বাচনের চাইতে দেশ গঠনে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। ফলে দল আওয়ামী লীগের ভেতর পরিবারতন্ত্র এবং লেজুড়তন্ত্রে ভরে গিয়েছিলো। একসময় দেশ এবং বিদেশের সঙ্গে স্বদলের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের ভেতর নির্বাচন এবং দেশ গঠন কোনোটাই আর হয়নি। আশির দশকে জিয়াউর রহমান নির্বাচনকে নিরানব্বই বনাম এক ভোটের লীলায় নামিয়ে এনে তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তায় নাম লেখালেন। অথচ তার শাসনামলে এক জাগদল পরে জাতীয়তাবাদী দল ছাড়া আর কোনো দলের কোনো চিহ্ন ছিলো না।
নব্বইয়ের দশকে খালেদা জিয়া প্রথমদিকে নির্বাচনের হালকা রস দেখিয়ে ছিয়ানব্বইতে বাঙালির মুখে চমৎকার নির্বাচনী গরম ঝোল ঢেলে দিয়েছেন। কাছাকাছি সময়ে শেখ হাসিনা নির্বাচন ব্যবস্থাকে অনেকটা শক্তিশালী করলেও সিস্টেমিক দুর্বলতা থেকে নির্বাচন ব্যবস্থা আর বের হতে পারেনি। ইতিহাস সেখানেই শেষ। তারপর ২০০১-০৫ নির্বাচন শব্দের মিনিং বাঙালি ভুলে গেছে। বোমা আতঙ্ক, বিরোধীমতকে ঘরে ঢুকে মেরে ফেলা পরে সিইসি আজিজ,তারপর তত্ত্বাবধায়কের নামে সেনা কর্মকর্তাদের ডেকে নিয়ে আসা তারপর ১/১১, তারপর নির্বাচন খাওয়া শুরু। সবশেষ তথা বাংলাদেশের লেটেস্ট নির্বাচন হলো দিনের ভোট রাতে, সকালের ভোট বিকেলে, তাহাজ্জুদের পর বিশেষ ভোট কিংবা ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই ভোট শেষ। এখন নির্বাচন বলতে ক্ষমতাসীন দলের সিলেকশন করা প্রার্থীর জয়, বিরোধী প্রার্থীর নিশ্চিত পরাজয়। এমন নির্বাচন বিশ্বের ইতিহাসে সম্ভবত বিরল এবং অভাবনীয়। তবুও বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে আসে। কেন আসে জানি না। হয়তো খুশিতে, নয়তো ঠেলায়। ‘ভোট চাই ভোটারের, জয় চাই ক্ষমতাসীন দলের।’ এমন স্লোগান নিয়ে এবারের মেয়র পদে আমার মার্কা তালগাছ। সব্বাই লাইন ধরে তাহাজ্জুদ পড়ে ভোট দিয়া যাইয়েন। জয় বাংলা, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, দুনিয়ায় মজদুর এক হও, শরীয়া আইন কায়েম করো! ফেসবুক থেকে