নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরে আলোচিত আনসার সদস্য হোসেন আলী তরফদার (৫৭) হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে ডিবি পুলিশের হাতে আটক পিকুল হোসেন (২০) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি দিয়েছে। আটক পিকুল হাশিমপুরের মৃত রেজাউল ইসলামের ছেলে। পিকুলকে আটকের পর তার কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি চাকু ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এর আগে ডিবি পুলিশ এ মামলায় ৮ আসামিকে আট করে আদালতে চালান দেয়। নিহত হোসেন আলী হাশমিপুর গ্রামের তরফদার পাড়ার আরশাদ আলী তরফদাররে ছেলে।
ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহমেদ জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাত দেড়টায় সদর উপজেলার বাউলিয়া গ্রাম থেকে পিকুলকে আটক করা হয়। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পিকুল পুলিশের কাছে হোসেন আলী তরফদারকে হত্যার দায় স্বীকার করে। বুধবার ০১ জানুয়ারি-২০২০ পিকুলকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শম্পাবসুর আদালতে হাজির করা হলে সেখানেও হোসেন আলী তরফদার হত্যার দায়স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবান বন্দি দেয়। জবান বন্দিতে পিকুল বলে হাশিমপুরের কসাই আমজাদের ছেলে ২৩ মামলার আসামি জুয়েল ও একাধিক মামলার আসামি মুন্নার সাথে বিরোধের কারণে এ দুজনের নেতৃত্বে হোসেন আলীকে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের আগে ২৯ নভেম্বর রাতে নিহত হোসেন আলী, জুয়েলের বাড়ি যেয়ে তাকে হুমকি দিয়ে আসে। হোসেন-জুয়েলকে বলে অস্ত্র জমা দিয়েছে ট্রেনিং জমা দেয়নি। হোসেন আগেই জানতে পারে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ কারণেই তিনি জুয়েলের বাড়ি যেয়ে হুমকি দিয়ে আসে। জুয়েলের বাড়ি যেয়ে হুমকি দেয়ার পর হোসেনকে দ্রুত হত্যার পরিকল্পনা হয়। ২৯ নভেম্বর রাতে জুয়েলকে হুমকি দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর ওই রাতেই হোসেনকে হত্যার চুড়ান্ত পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা মোতাবেক পরের দিন ৩০ নভেম্বর সকালে যশোর-মাগুরা সড়কের হাসিমপুর বাজারে মোশারেফের চায়ের দোকানের সামনে জুয়েলের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একদল অস্ত্রধারি প্রকাশ্যে হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে। পরে হোসেন আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্টেপ করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
হোসেন আলী হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার ছেলে হুমায়ন কবীর বাদি হয়ে ওই রাতে অজ্ঞাত নামা ৯/১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে কোতয়ালি থানার এস আই শাহাজুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ১০ ডিসেম্বর মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের পর ১৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ঢাকার ভাসানটেক ও কাফরুল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মফিজুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে কায়েতখালি গ্রামের হোসেনের ছেলে রাসেল, সাইফুল ইসলামের ছেলে আনোয়ার, একই গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে বার্মিজ ও মোকনের বিজয়কে আটক করে। পরে আটককৃতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ি ১৪ ডিসেম্বর হাশিমপুর বাজার থেকে হাশিমপুর গ্রামের কেনায়েত আলী বিশ্বাসের ছেলে সুজন হোসেন (২৩), মিলন হোসেনের ছেলে সজল হোসেন (২২) ও মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়ায় হোসেন হত্যার প্রধান অভিযুক্ত জুয়েলের শ্বশুর বাড়ি থেকে আটক করা হয় আলী রাজ বাবু ওরফে ছোট বাবুকে। এর আগে ১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যার দিকে হাশিমপুর বাজার থেকে সাদা পোশাকের পুলিশ আমিনুর রহমান মিঠুকে আটক করে। হাশিমপুর ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে মিঠুর দেয়া তথ্য অনুযায়ি পুলিশ ঢাকা থেকে ওই চারজনকে আটক করে। সম্পাদনা : তন্নীমা আক্তার
আপনার মতামত লিখুন :